বাজারে বন্যার প্রভাব পড়ার শঙ্কা

জহির রায়হান, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৮ জুলাই ২০২০, ২০:৫৩ | প্রকাশিত : ২৮ জুলাই ২০২০, ২০:২৭

চলমান বন্যায় তলিয়ে গেছে বিভিন্ন জেলার ফসলি ক্ষেত। বিশেষ করে সবজি ক্ষেতের ব্যপাক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কৃষকেরা আগেভাগে সবজি তুলে নিয়েছেন। ফলে বাজারে এখন চাহিদার তুলনায় সরবরাহও বেশি। তবে ঈদের পরে কমে আসতে পারে সরবরাহ। আর একারণে এখন কমের দিকে দাম ঈদের পরে বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা বাজারে গাজর ৭০ টাকা কেজি, টমেটো ১০০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৩৫ টাকা, কাঁচা কলা পনেরো টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারি ব্যবসায়ী ফারহান রিয়াজ ঢাকা টাইমসকে বলেন, বন্যার কারণে দাম এখনও বাড়েনি। কারণ কৃষকেরা আগেভাগে অনেক সবজি ক্ষেত থেকে তুলে ফেলেছে। ফলে সেগুলো সব ঢাকায় আসছে। সমস্যা হবে ঈদের পরে, তখন সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিতে পারে। যে কারণে দামও বাড়বে।’

এই ব্যবসায়ী জানান, সাভার এলাকা থেকে এখন প্রচুর পেঁপে আসছে। সরবরাহকারীরা বলছেন, বন্যার কারণে পেঁপে গাছ পঁচে যাচ্ছে। তাই কৃষকেরা সব পেঁপে তুলে নিয়েছেন। এখন প্রতি কেজি পেঁপে ২০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে।

ফারহান রিয়াজ বলেন, ‘কিন্তু ঈদের পরে দাম বাড়বে। কারণ বন্যার কারনে নষ্ট হওয়ার ভয়ে এখন সব সবজি তুলে ফেলা হচ্ছে। ঈদের পর তাই পণ্যের সরবরাহ কম হবে। দাম বেড়ে যাওয়ার এটাই কারণ হবে।’

রাজধানীর হাতিরপুল বাজার ও কারওয়ান বাজারে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্যার প্রভাবে ঢাকার বাজারে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম এখনও বাড়েনি। তবে ঈদের পরে সরবরাহ ঘাটতির আশঙ্কা থাকায় দামও বাড়তে পারে।

গতকাল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ পাঁচ কেজি ১৮০ টাকা, ১২০ টাকায় ভারতের পেঁয়াজ, আদা ১৬০ টাকা কেজি, আলু কেজি প্রতি ৩০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি আর হলুদ ১৫০ থেকে ২২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

চালের দাম: কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি স্বর্না চাল ৩৯ থেকে ৪২ টাকা, মিনিকেট ৫১ টাকা থেকে ৫২ টাকা, নাজিরশাইল ৬২ টাকা থেকে ৬৮ টাকা, কাটারিভোগ ৯০ থেকে ৯৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১ম পর্যায়ে গত ২৫ জুন থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত অতিবৃষ্টি, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও নদ নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে বন্যায় রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ, জামালপুর, নেত্রকোনা, রাজশাহী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল জেলাসহ মোট ১৪টি জেলায় ১১টি ফসলের প্রায় ৭৬ হাজার ২১০ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়। যার মধ্যে ৪১ হাজার ৯১৮ হেক্টর জমি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। টাকার অংকে এ ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৪৯ কোটি টাকা। মোট ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ৩ লাখ ৪৪ হাজার জন।

২য় পর্যায় ১১ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত মানিকগঞ্জ, বগুড়া, টাংগাইল, নাটোর, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, জামালপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, শেরপুর বি-বাড়িয়াসহ মোট ২৬টি (আগের ১৪টিসহ) জেলায় ১৩টি ফসলের প্রায় ৮৩ হাজার হেক্টর আক্রান্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের পরিমাণ এখনো নিরূপণ হয়নি।

এদিকে চলমান বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত আমনের বীজতলার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দ্রুত বিকল্প বীজতলা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। কৃষিমন্ত্রী এসময়ে কর্মকর্তাদের অত্যন্ত তৎপর ও সক্রিয় থাকার নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, বন্যার কারণে এ সময়ের কৃষি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। পর্যাপ্ত বীজ মজুদ রয়েছে। এখন এসব বীজ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে বিতরণ করে দ্রুত নতুন বীজতলা তৈরি করতে হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৮জুলাই/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :