খেতে বসে বিষম লাগলে কী করবেন?

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০২ আগস্ট ২০২০, ০৮:১৫
অ- অ+

খাওয়ার সময় অনেকেরই গলায় খাবার আটকে হেঁচকি ওঠে। ডাক্তারি পরিভাষায় এটাকে বলে ‘চোকিং’ বা বিষম লাগা। প্রতি বছর ১০ মিলিয়ন মানুষ গলায় খাবার আটকে বা অন্য কিছুতে শ্বাস আটকে গিয়ে ভয়ানক বিপদে পড়েন।

গলায় খাবার আটকে যাওয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে শিশু ও বয়স্কদের। ৫ বছরের কম ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষদের মধ্যে তাড়াহুড়ো করে খাবার খেতে গিয়ে বিষম খেয়ে দম আটকে খুব কষ্টকর পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। তাই ধীরেসুস্থে খাবার খেতে হবে।

শুকনো খাবার গলায় আটকে যেতে পারে, এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। এক সঙ্গে অনেকটা খাবার খাওয়া ও খাওয়ার সময় কথা বলার ব্যাপারেও সাবধানতা মেনে চলা উচিত।

খাবারের টুকরো গিলতে গিয়ে বিষম খেয়ে শ্বাসনালীতে আটকে গিয়ে প্রাণঘাতী সমস্যা হয়। শ্বাসনালীতে কিছু আটকে গেলে ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। এর ফলে নিঃশ্বাসের কষ্ট আর কাশি অবধারিত। শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যাবার ডক্তারি নাম ‘অ্যাস্ফিক্সিয়া’। শ্বাসনালী একেবারে বন্ধ হয়ে গেলে অক্সিজেন সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট ও ব্রেন অক্সিজেনের অভাবে কাজ করতে পারে না। শরীরের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক হয়ে ওঠে। এই অবস্থাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ‘অ্যানোক্সিয়া’। এই অবস্থায় অবিলম্বে কৃত্রিম উপায়ে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ শুরু না করলে রোগীকে বাঁচানো মুশকিল হয়ে পড়ে।

কখন সাবধান হবেন

বাচ্চাই হোক বা বয়স্ক মানুষ, গলায় কিছু আটকে গেলে কয়েকটা লক্ষণ দেখলে অবিলম্বে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। মনে রাখবেন, এখানে সময়ের দাম অনেক বেশি। সময় নষ্ট করলে জীবন দিয়ে তার দাম দিতে হবে। শ্বাসনালীতে কিছু আটকে গেলে প্রথমেই মানুষটির নিঃশ্বাসের কষ্ট হবে। এর জন্যে কাশি হবে, বুকের মধ্যে সাঁই সাঁই শব্দ, বমি বা বমি বমি ভাব, কথা বলতে না পারা, এমনকি বা অক্সিজেন ইনটেক একেবারে বন্ধ হয়ে গেলে রোগীর ঠোঁট নীল হয়ে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ৭–১২ মিনিটের মধ্যে চিকিৎসা শুরু না করলে রোগীকে বাঁচানো মুশকিল।

কাদের ঝুঁকি বেশি

খাওয়ার সময় বিষম খেলেই যে দম আটকে যায় তা নয়, কিছু কিছু অসুখ থাকলে সাবধান হওয়া উচিত। অ্যাজমা, সেরিব্রাল পলসি, স্ট্রোক, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস, নার্ভের অসুখ, ইসোফেগাস বা খাদ্যনালীর টিউমার, পার্কিনসনস ডিজিজ, মাসকিউলার ডিস্ট্রফি, মস্তিষ্কে চোট আঘাত, কাঁপুনি ও জ্বর, এপিলেপ্সি, খাবার গিলে খাওয়ার অসুবিধে ইত্যাদি সমস্যা থাকলে খাওয়ার সময় সতর্ক থাকা দরকার। অবশ্য সাধারণ মানুষেরও তাড়াহুড়া করে খাবার খেতে গেলে বিষম খেয়ে বা গলায় খাবার আটকে শ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

কী করতে হবে

আতঙ্কিত না হয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে রোগীকে কাশতে বলুন। একই সময়ে পিঠে চাপড় মেরে গলায় আটকানো খাবারের টুকরো বেরিয়ে আসতে পারে। কিন্তু এতেও সমস্যা না কমলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

পিঠে চাপড় মারার পাশাপাশি পাঁজরের ঠিক তলায় চাপড় মারলেও শ্বাসনালীতে আটকে থাকা খাবারের টুকরো বেরিয়ে আসে। হেনরি হেইলমলিক নামক এক চিকিৎসক-নির্দেশিত ‘হেইলমলিক ম্যানিউভার’ নামক এক বিশেষ পদ্ধতিতে রোগীকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ডায়াফ্রাম অর্থাৎ পেট ও পাঁজরের সংযোগস্থলে (এপিগ্যাসট্রিয়াম) দুইহাতে মোচড় দেওয়ার মতো জোরে ধাক্কা দিলে আটকানো খাবারের টুকরো বেরিয়ে আসে। তবে প্রশিক্ষিত প্যারামেডিক্যাল স্টাফেরা এই কাজ করতে পারেন।

বাড়িতে বয়স্ক মানুষ থাকলে ব্যাপারটা জেনে রাখলে ভাল হয়। স্কুল, কলেজ, রেস্তরাঁ, পাড়ার ক্লাব মেম্বার আর অ্যাম্বুলেন্সের কর্মীদের এই প্রশিক্ষণ থাকলে অনেক বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

(ঢাকাটাইমস/২আগস্ট/এজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
মিরপুরের শ্যামল পল্লী বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে
শ্রীপুরে চায়না-৩ জাতের লিচুতে চাষির মুখে হাসি
নামাজের শিক্ষা ব্যক্তি, পরিবার ও রাষ্ট্র গঠনে আত্মনিয়োগ করতে হবে: জামায়াত আমির
মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬১ কোটি ডলার 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা