অর্থ আত্মসাতে দুদকের মামলা
ছেলেসহ বাবুল চিশতীকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো
রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রতারক সাহেদ করিমকে ঋণের নামে টাকা আত্মসাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনায় ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) সাবেক পরিচালক মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী এবং তার ছেলে রাশেদুল হক চিশতীকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর (শোন অ্যারেস্ট) আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত।
রবিবার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইমরুল কায়েস আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
গত ২৭ জুলাই দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি করেন। পরদিন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৬ আগস্ট দিন ধার্য করেছিলেন।
দুদকের অভিযোগ থেকে জানা যায়, ব্যাংকে কোনো নথিপত্র না রেখে এবং কোনো জামানত ছাড়াই রিজেন্ট চেয়ারম্যান সাহেদকে ঋণ পাইয়ে দেন বাবুল চিশতি। আর পরে তার কাছ থেকে কমিশন গ্রহণ করেন পদ্মা ব্যাংকের বড় অঙ্কের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বর্তমানে কারাগারে থাকা বাবুল চিশতী ও তার ছেলে রাশেদুল হক চিশতী।
দুদক সূত্র জানায়, সাহেদ করিম ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি রিজেন্ট হাসপাতালের এমআরআই মেশিন কেনার জন্য দুই কোটি টাকার ঋণের জন্য তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান করপোরেট শাখায় আবেদন করেন। ১৯ জানুয়ারি ব্যাংকটির গুলশান শাখা থেকে ওই মেশিন কেনার জন্য সরবরাহকারী হিসেবে 'আর্বটস মেডিকেল ইকুইপমেন্টের' নামে দুই কোটি টাকার পে-অর্ডার ইস্যু করা হয়। মেশিনটি কেনার জন্য ২ কোটি টাকার পে-অর্ডারটি অন্য একটি ব্যাংকে ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়। কিন্ত মেশিন কেনা হয়েছে এমন কোনও নথিপত্র ব্যাংকে দাখিল করা হয়নি এবং ঋণের বিপরীতে জামানত রাখা হয়নি। ওই অর্থ এমআরআই মেশিন না কিনে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়।
দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে বাবুল চিশতী ও রাশেদুল হক চিশতীর কোনও ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই। অথচ সাহেদের কাছ থেকে রাশেদুল হক চিশতীর বকশীগঞ্জ জুট মিলের হিসাবে ৩৫ লাখ টাকা গ্রহণ ও তুলে নেওয়া হয়। বাবুল চিশতী ও তার ছেলে রাশেদুল হক চিশতী ঘুষ নিয়ে সাহেদকে অবৈধভাবে ঋণ পাইয়ে দেন।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিরা অসৎ উদ্দেশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পদ্মা ব্যাংকের (তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংক) গুলশান করপোরেট শাখা থেকে ১ কোটি টাকা ঋণ নেন। ১৫ জুলাই পর্যন্ত যার স্থিতি ২ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আসামিরা এ অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন।
অপরদিকে ওই দুই কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করার আগেই সাহেদ ঘুষ হিসেবে পদ্মা ব্যাংকের বকশীগঞ্জ শাখায় বাবুল চিশতীর মালিকানাধীন বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের নামে খোলা হিসাব নম্বরে ৩৫ লাখ টাকা জমা করেন। পরে জমা করা ওই টাকা ২০১৫ সালের ১৮ ও ২০ জানুয়ারি বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের এমডি ও বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী উত্তোলন করেন।
দুদক সূত্র জানায়, ঘুষের ৩৫ লাখ টাকা বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল চিশতী বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের হিসাব থেকে উত্তোলন করলেও ঘুষ গ্রহণের পেছনে সব কলকাঠি নেড়েছেন বাবুল চিশতী। তিনি বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্সের চেয়ারম্যান।
(ঢাকাটাইমস/১৬আগস্ট/ইএস)