তিন মাসের ব্যবধানে আরেক মামলায় খালাস পেলেন গোল্ডেন মনির

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৭ মে ২০২৪, ১৫:৪২| আপডেট : ০৭ মে ২০২৪, ১৬:১৭
অ- অ+

অস্ত্র মামলায় খালাস পাওয়ার তিন মাসের মাথায় এবার বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা র‍্যাবের আরেক মামলায় খালাস পেলেন মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনির। গত রবিবার ঢাকার একটি আদালত তাকে খালাস দেন। এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি র‍্যাবের করা অস্ত্র মামলা থেকে খালাস পান মনির।

২০২০ সালের নভেম্বরে রাজধানীর বাড্ডার বাসা থেকে মনিরকে গ্রেপ্তারের সময় বিপুল অঙ্কের টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, বিদেশি মদ ও অস্ত্র জব্দ করে র‍্যাব। এই ঘটনায় তখন পৃথক তিনটি মামলা হয়। অস্ত্র, মাদক ছাড়াও মনিরের বাসা থেকে নগদ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধারের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করে র‍্যাব। সেই মামলায় রবিবার বেকসুর খালাস পান গোল্ডেন মনির। ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখার এ রায় দেন।

যেভাবে উত্থান মনিরের

নব্বইয়ের দশকে রাজধানীর গাউছিয়া মার্কেটে একটি কাপড়ের দোকানে সেলসম্যানের কাজ করতেন মনির হোসেন। তার বাবা কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা সিরাজ মিয়া ছিলেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিনি ঢাকার নিউ মার্কেট ও গাউছিয়া মার্কেট এলাকায় ফেরি করে লুঙ্গি-গামছা বিক্রি করতেন। দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা জানা মনির একসময় বাবার ব্যবসা (গামছা বিক্রি) শুরু করেন।

রাজধানীর বাড্ডায় নানার বাসায় থেকে বড় হওয়া মনির মৌলভীবাজার থেকে কাপড় এনে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করতেন। তারপর শুরু করেন কোকারিজের ব্যবসা। সেই ব্যবসার প্রসার ঘটিয়ে ব্যাংকক-সিঙ্গাপুরে আসা-যাওয়ার মাধ্যমে অবৈধ ল্যাগেজ ব্যবসা শুরু করেন। যার আড়ালে মনির স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসায় জড়িয়ে যান। এরপর গোল্ডেন মনিরকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অল্পদিনেই হয়ে যান কোটিপতি। মনির হোসেন থেকে নাম পাল্টে হয়ে যান 'গোল্ডেন মনির'।

এই মনিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সোনা চোরাচালান, হুন্ডি কারবার, জমি দখল ও জালিয়াতি, মাদক, বিদেশি মুদ্রা ও অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগ ছিল। একটি গোয়েন্দা সংস্থার দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর র‌্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে। ২০২০ সালের ২০ নভেম্বর ভোরে র‌্যাব গোল্ডেন মনিরের মেরুল বাড্ডায় বিলাস বহুল ছয়তলা বাড়ি ঘিরে রাখে। বাড়ি থেকে নগদ এক কোটি নয় লাখ টাকা, চার লিটার মদ, আট কেজি সোনা (৬০০ ভরি), ৩২টি নকল সিল, একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় গোল্ডেন মনিরের একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি। যার প্রতিটির বাজারমূল্য প্রায় তিন কোটি টাকা।

রায়ের তথ্যে যা আছে

মনির বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার খালাস পাওয়া রায়ের তথ্য বলছে, বাড্ডায় মনিরের বাসা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে র‍্যাবের জব্দ করা ১ কোটি ৯ লাখ টাকা, আট কেজি সোনা ও বৈদেশিক মুদ্রা বৈধ উপার্জনের মাধ্যমে অর্জিত। রাষ্ট্রপক্ষ মনিরের বিরুদ্ধে আনা বিশেষ ক্ষমতা আইনের অভিযোগ প্রমাণে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছে। মামলাটিতে একজন পুলিশ কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি মনিরের সম্পদের মালিকানা যাচাইয়ের পর আদালতে প্রতিবেদন দিয়ে জানিয়েছেন, মনিরের বাসা ও প্রতিষ্ঠান থেকে র‍্যাবের জব্দ করা সম্পদ বৈধ।

এদিকে র‌্যাবের করা তিন মামলার মধ্যে দুই মামলায় খালাস পেলেন মনির। এখন গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে হওয়া মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে আরেকটি মামলা তদন্ত করছে সিআইডি। যেটি মনির গ্রেপ্তারের পর বাড্ডা থানায় সিআইডি মামলা করেছিল। যেখানে মনির ছাড়াও তার স্ত্রী, সন্তানসহ দশজনকে আসামি করা হয়। তাছাড়া দুদক গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলা করেছিল। যেটি আদালতে বিচারাধীন আছে।

(ঢাকাটাইমস/০৭মে/এসএস/ইএস)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
'সীমান্ত গৌরবে' বিজিবি মহাপরিচালকের শ্রদ্ধা
ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে, এমনই বিশ্বাস রাখতে চাই: মির্জা আব্বাস 
স্বাধীনতা দিবসে ঘরে বসেই দেখুন মুক্তিযুদ্ধের সাড়া জাগানো এই সিনেমাগুলো
পুলিশ স্মৃতিসৌধে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, আইজিপির শ্রদ্ধা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা