‘চিকিৎসকের অবহেলায়’ প্রসূতির মৃত্যু, টাকায় রফাদফার চেষ্টা

মাদারীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২০, ২২:০৫ | প্রকাশিত : ০৯ অক্টোবর ২০২০, ২২:০৩

মাদারীপুর শহরের ডিজিটাল এ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্যে শহরের প্রভাবশালী একটি মহল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে প্রসূতির স্বজনরা হাসপাতালের সামনে দোষীদের বিচার দাবিতে অবস্থান নিয়েছেন। সেখানে পুলিশ মোতায়ন আছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ডাসার থানার আটিপাড়া গ্রামের রুনা আক্তার (২২) নামে এক আন্তঃসত্ত্বার প্রসব বেদনা উঠলে শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ডিজিটাল এ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ফায়সাল কাবীর ও ডা. ফারজানা আফিয়া মেঘলা ওই প্রসূতিকে সিজার করে একটি পুত্র সন্তান ভূমিষ্ঠ করেন। এসময় প্রসূতির রক্ত প্রয়োজন বলে তার স্বামী রমজান মালকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়া হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রসূতির অবস্থার বেগতির বলে নিজেরাই একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। পরে ফরিদপুর মেডিকেলের চিকিৎসক দেড় থেকে দুই ঘণ্টা আগে প্রসূতি মারা গেছেন বলে জানান। স্বজনরা রুনা আক্তারের মরদেহ নিয়ে আবার ডিজিটাল এ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন ডিজিটাল এ্যাপোলো হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান মনির ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মৃতদেহটি দাফন করতে বলেন। কিন্তু বিয়ষটি স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা পুলিশকে জানালে সন্ধ্যার দিকে পুলিশ এসে বিষয়টি তদন্ত শুরু করে।

নিহতের স্বামী রমজান মাল জানান, ‘আমাকে রক্ত আনার কথা বলে হাসপাতালের লোকজন নিজেরাই আমার স্ত্রীকে ফরিদপুর পাঠিয়ে দেয়। তারা কোন কাগজপত্র দেয়নি। পরে ফরিদপুর গিয়ে জানতে পারি, ডিজিটাল এ্যাপোলো হাসপাতাল সিজার করার সময়েই আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলছে। তারা আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি কাউনে না জানাতে অনুরোধ করে। আমি টাকা চাই না, দোষীদের বিচার চাই।’

তিনি আরো জানান, ‘সিজার করার সময় এনেস্থিসিয়া ডাক্তার ছিল না। ফলে আমার স্ত্রীকে ভুল চিকিৎসা করে মেরে ফেলেছে।’

তবে ডিজিটাল এ্যাপোলো হাসতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান মনির ভুল চিকিৎসার কথা অস্বীকার করেন। বলেন, ‘রোগীর প্রেসার বেশি থাকায় চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। সেখানে গিয়ে রোগী মারা গেছে। আমাদের কোন অবহেলা ছিল না।’

আর টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপার বিষয়ে বলেন, ‘রোগী গবির হওয়ায় দাফন-কাফনের জন্যে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল।’

এ ব্যাপারে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হান্নান মিয়া জানান, ‘নিহতের পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ দিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি নিহতের স্বজনরা অভিযোগ করেন, তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

(ঢাকাটাইমস/৯অক্টোবর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :