এবারের ঈদেও লোকসানের আশঙ্কায় বাবুরহাটের কাপড় ব্যবসায়ীরা

নাজমুল হাসান, নরসিংদী
 | প্রকাশিত : ০৭ মে ২০২১, ১৪:৪৫

প্রতি বছর ঈদকে ঘিরে মূল বেচাকেনা জমে উঠলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে দুই বছর ধরে লোকসানে পড়েছেন দেশের অন্যতম পাইকারি কাপড়ের বাজার নরসিংদীর শেখেরচর-বাবুরহাটের ব্যবসায়ীরা। এদিকে, এবছর ঈদকে ঘিরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে দোকান খুলে দেয়া হলেও খুচরা বাজারে দোকান বন্ধ থাকা ও দূরপাল্লার যানবাহন না পেয়ে পাইকারি ক্রেতা না আসায় জমছে না বেচাকেনা। এতে কর্মচারীদের বেতন, দোকান ভাড়া, ব্যাংক ঋণের সুদসহ অন্যান্য খরচ পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

শেখেরচর-বাবুরহাটের ব্যবসায়ীরা জানান, দেশীয় বস্ত্রের প্রায় ৭০ ভাগ কাপড়ের চাহিদা পূরণ করে থাকে দেশের অন্যতম পাইকারি কাপড়ের বাজার শেখেরচর-বাবুরহাট। মূলত প্রতিবছর ঈদকে ঘিরে এই হাটের ছোট-বড় পাঁচ হাজার দোকানে নতুন করে পসরা সাজানো হয় শাড়ি, লুঙ্গি, গজ কাপড়, পাঞ্জাবির কাপড়, শার্টপিস, প্যান্টপিস, থ্রিপিসসহ সব ধরনের দেশীয় কাপড়ের। দেশে কাপড় উৎপাদনকারী প্রায় সব বস্ত্রপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব একাধিক শো-রুম রয়েছে এখানে। এসব বস্ত্রপ্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ কারখানাও গড়ে উঠেছে নরসিংদী কেন্দ্রিক। দেশের অন্যান্য স্থানে প্রস্তুতকৃত যাবতীয় কাপড়ও পাওয়া যায় এখানে।

প্রতি বছর রোজার এক সপ্তাহ আগে থেকেই ঐতিহ্যবাহী এই কাপড়ের বাজারটিতে বেচাকেনা শুরু হলেও গত দুই বছর ধরে পাল্টে গেছে এই চিত্র। করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশে লকডাউন থাকায় এবং সকল দোকানপাট ও গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পাইকারি ক্রেতা না আসায় নেই কাঙ্খিত বেচাকেনা। প্রতিবছর ঈদ উপলক্ষে পাইকারদের ভিড়ে সরগরম থাকত যে বাজার, সে এখন সেখানে ক্রেতাশূন্য। বেশিরভাগ কাপড়ের দোকানে প্রায়ই ঝুলছে তালা। যারা দোকান খুলেছেন তারাও বসে বসে অলস সময় পার করছেন। ২/৩ ভাগ ব্যবসায়ী খুচরা বেচাকেনা করতে পারলেও পুরোপুরি লোকসানের মুখে বাজারের বেশিরভাগ বিক্রেতা।

বাবুরহাটের আরটেক্স শাড়ি ঘরের পরিচালক শেখ মোহাম্মদ রুমন জানান, মূলত বছরের দুই ঈদকে ঘিরেই এই হাটের বেচাকেনা বেশি হয়। বিশেষ করে ঈদুল ফিতরে দেশের যাকাতের কাপড় হিসেবে শাড়ি ও লুঙ্গির একটি বড় অংশ বেচাকেনা হয়। এজন্য দোকানগুলোতে কাপড়ের আমদানি বেশি করা হয়। কিন্তু দুই বছর ধরে বেচাকেনা না থাকায় লোকসান গুণতে হচ্ছে।

শাড়ি কাপড় বিক্রেতা আফসার বলেন, নানান সমস্যার মধ্যেও মানুষের দেশীয় বস্ত্রের চাহিদা কমবেশি থাকে। সারাদেশে বেচাকেনা থাকলেও শেখেরচর-বাবুরহাটে থাকে। কিন্তু এ বছরের মতো বেচাকেনায় এমন ধস আর কখনও দেখেননি ব্যবসায়ীরা। ঈদকে ঘিরে বেশি পুঁজি বিনিয়োগ করে কাপড়ের পসরা সাজানো হলেও ক্রেতা না থাকায় অলস সময় পার করতে হচ্ছে। এদিকে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, দোকান ভাড়া, ব্যাংক সুদ ঠিকই পরিশোধ করতে হবে।

নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট আলী হোসেন শিশির বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে বাবুরহাটের দোকানগুলো খোলা হলেও পাইকারি ক্রেতা না থাকায় বেচাকেনা সন্তোষজনক নয়। তবে অনলাইনের পাশাপাশি কিছুটা হলেও পাইকারি ও খুচরা বেচাকেনা হওয়ায় শ্রমিক বিলসহ প্রাথমিক খরচটা মেটানো সম্ভব হবে।

(ঢাকাটাইমস/৭মে/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :