‘সাম্প্রদায়িক হামলার’ প্রতিবাদে শাহবাগে বিক্ষোভ
কুমিল্লায় একটি মণ্ডপে কোরআন অবমাননার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, বাড়িঘরে হামলার প্রতিবাদে শাহবাগে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। তাদের সঙ্গে ইসকন স্বামীবাগ আশ্রমের ভক্ত ও সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অনেকে অংশ নেন।
অবরোধের কারণে শাহবাগ দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে দুর্ভোগে পড়েন সড়কটি দিয়ে চলাচল করা লোকজন। শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে পল্টন, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, বাংলা মোটর ও টিএসসিমুখী সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়।
দুর্গাপূজার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের একটি মন্দিরে কুরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে কয়েকটি মন্দিরে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়। এরপর চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ কয়েকটি জেলায় মন্দিরে হামলা হয়। সর্বশেষ গতকাল রবিবার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ২০টিরও বেশি বাড়ি পুড়ে দেওয়া হয়।
হিন্দুদের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলার প্রতিবাদ জানাতে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় জড়ো হন জগন্নাথ হলসহ বিভিন্ন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড়ে আসেন। তাদের সঙ্গে আরও অনেকে অংশ নেন।
অবরোধ কর্মসূচি থেকে সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। এছাড়া ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় করারও দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, প্রতিবার হামলার পর আশ্বাস দিলেও কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আমরা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অনিরাপদ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বেশ কয়েক দফা দাবি তুলে ধরেন তারা।
দাবি তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে হামলার শিকার মন্দিরগুলো শিগগিরই প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। হত্যার শিকার পরিবারগুলোকে স্থায়ী ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
অবরোধের কারণে শাহবাগ-কাওরান বাজার, শাহবাগ-সায়েন্সল্যাব, শাহবাগ-গুলিস্তান সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
শাহবাগ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ইসকনের একটি মানববন্ধন ছিল। মানববন্ধনের পর প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে তারা শাহবাগে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয়। শিক্ষার্থীদের বোঝানার পর দুইটার দিকে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করে চলে যায়।
ঢাকাটাইমস/১৮অক্টোবর/এসএস/এমআর