‘সমাজে অসমতা কমাতে নারীদের কথা শোনা উচিত'

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২২:৩১

সমাজে নারীদের গুরুত্ব দিতে হবে, নারীদের কথা শুনতে হবে। এভাবেই সমাজের অসমতা কমানো যায় বলে মন্তব্য করেছেন মানসিক স্বাস্থ্য ও নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা কয়েকটি সংগঠনের নেতারা।

শুক্রবার বিকালে ‘লেটস টক মেন্টাল হেলথ (এলটিএমএইচ), উইমেন মেন্টাল হেলথ ডেভেলপমেন্ট নিয়ে অনলাইনে অনুষ্ঠিত এক ওয়েবিনারে তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, নারীদের কথা আমাদের শোনা উচিত, যাতে সমাজে অসমতা কমানো যায় এবং তাদের সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গলের লক্ষ্যে কাজ করা যায়। নারীদের অনেক ধরনের অবমাননা এবং সহিংসতার মধ্য দিয়ে যেতে হয় এবং এই অবমাননা প্রায়শই হতাশা, উদ্বেগ এবং অন্যান্য অনেক মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাধির বিকাশের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ওয়েবিনারের সঞ্চালক এবং ‘লেটস টক মেন্টাল হেলথ (এলটিএমএইচ)’- এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি, আনুশা চৌধুরী বলেন, লোকলজ্জার ভয়, অন্যের দৃষ্টিতে ছোট হওয়া বা বিশ্বাস না করা আমাদের সম্প্রদায়ের অনেক নারীকে নীরব দুর্ভোগের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। নারীদের উচিত তাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা এবং সকল সংগ্রামকে অতিক্রম করার জন্য নিজেদের অনুভূতিগুলো সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে এগিয়ে আসা।

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে কখনোই নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়া সম্ভব নয়, তাই আনুশা চৌধুরী নারীর ক্ষমতায়নের ওপর বিশেষভাবে জোর দেন।

ওয়েবিনারের অতিথি হিসেবে মরোক্কো থেকে সাহিত্যিক ডক্টর হাইন্ড বুহিয়া যোগ দেন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া থেকে নারী উদ্যোগতা মিরিলি তোলেকিমা, সিনিয়র পেট্রোলিয়াম প্রকৌশলী, থট লিডার, স্টিম এবং এনার্জি বিশেষজ্ঞ, নারী ক্ষমতায়ন আইনজীবী এবং ব্যবসায়িক প্রশিক্ষক ড. ড্যাফনে সোয়ারেস ছিলেন ইউএই থেকে।

অতিথিরা মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে নারীদের সংগ্রাম বিষয়ে আলোচনা করেন।

ডা. হাইন্ড বলেন, সাফল্যের ৯৫ শতাংশ নির্ভর করে যে কারো মানসিক শক্তির ওপর এবং বাকি পাঁচ শতাংশ নির্ভর করে কৌশল এবং অন্যান্য ব্যাপারে। তিনি বলেন, নারীদের বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়াই তাদেরকে দুর্বল করে তোলে। তাদের নিজেদের উপরেই নিজেদের বিশ্বাস নেই। তার মতে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে নারীদেরই এগিয়ে আসা উচিত।

মিরিলি তোলেকিমা নারীদের আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে অভিভাবকত্বের বিষয়টি এবং পরিবারের গুরুত্বকে অগ্রাধিকার দেন। নারীরা সবসময় নিজের চেয়ে অন্যের জন্য নিজেকে নিখুঁত করার ওপর বেশি জোর দেয়। নারীদের অন্যদের নেতিবাচকতার ওপর মনোযোগ না দিয়ে বরং তাদের নিজেদের শক্তির ওপর বেশি জোর দেওয়া উচিত এবং এরই মাধ্যমে তারা বিশ্বকে পরিবর্তন করতে পারে। বর্তমান বিশ্বের দৃশ্যপট পরিবর্তন করতে ‘এসটিইএম’-এর মতো বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে নারীদের এগিয়ে আসা উচিত।

ডা. ড্যাফনি তার ব্যবসায়িক প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেছেন। নারীরা ছোটবেলা থেকে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায় না। তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতার কথা বলেন। তিনি লিঙ্গ বৈষম্য সম্পর্কে সমাজে স্থাপিত বিভিন্ন নিন্দা সম্পর্কে দর্শকদের আলোকিত করেন। সবার উচিত বিশ্ব পরিবর্তনে এগিয়ে আসা, ট্যাবু এবং কলঙ্ক থেকে মুক্ত একটি প্রজন্ম তৈরি করার জন্য যা যা প্রয়োজন সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা। উন্নতি এবং সাফল্য পেতে পুরুষ এবং নারী উভয়েরই একসঙ্গে কাজ করা উচিত।

এখনই সময় প্রত্যেক নারীকে তাদের নির্যাতন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের সংগ্রাম সম্পর্কে কথা বলতে উৎসাহিত করার। নারীদের কথা শোনার সময় এসেছে কারণ নারীরাও শোনার যোগ্য, তাদের মতামতেরও গুরুত্ব আছে। আনুশা চৌধুরী একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধায় পূর্ণ বিশ্ব তৈরির আশা নিয়ে অধিবেশনটি শেষ করেন।

(ঢাকাটাইমস/০৪ফেব্রুয়ারি/কারই/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

নারীমেলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :