তেঁতুলিয়ার ইলিশ যাবে পদ্মা সেতু দিয়ে

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ জুন ২০২২, ১৯:৪৮

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা থেকে নদীপথে রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য জেলায় তেঁতুলিয়া নদীর ইলিশ মাছ পাঠতে গেলে প্রায়ই ভোগান্তির শিকার হতো জেলেরা। পদ্মা সেতু চালু হলে সড়ক পথে নির্ভিগ্নে নিদৃষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য পৌঁছে যাবে গন্তেব্যে। এতে করে জেলে ও কৃষকদের ভাগ্য পরিবর্তনে ভুমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১০ হাজারেরও বেশি রয়েছে জেলে পরিবার। যারা তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ শিকার করে স্থানীয় আড়তদারদের মাধ্যমে নদী পথে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাতো। নদী পথে মাছ পাঠাতে গিয়ে নদীর নাব্য সংকট, লঞ্চের ঘন ঘন যান্ত্রিক ত্রুটি, প্রাকৃডুশ দুর্যোগসহ লঞ্চের ধীরগতির কারনে নিদৃষ্ট সময়ে গন্তেব্যে পৌঁছাতো না।

এ কারণে প্রায়ই লোকসানের মুখে পড়তো আড়তদাররা। যার প্রভাব গিয়ে পড়তো তেঁতুলিয়ার নদীর ওপর নির্ভরশীল দরিদ্র জেলেদের উপর।

উপজেলার তেঁতুলিয়া নদী তীরবর্তী কালাইয়া বন্দরের মৎস আড়তদার সমিতির একাধিক ব্যবসায়ীরা জনিয়েছেন, জেলেরা রাতভর মাছ ধরে সকালে নিয়ে আসেন আড়দে। সেই মাছ ফ্রিজিং করে লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার বিকাল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এরপড় সারারাত প্রায় ১৬ থেকে ১৭ ঘন্টা পৌছাতে লাগে। আবার কোনো কোনো সময় নদীর নাব্য সংকট, যান্ত্রিক ত্রুটি, ও লঞ্চের ধীর গতির জন্য ২০ থেকে ২২ ঘণ্টাও লেগে যায়। দীর্ঘ সময়ে মাছ বরফে থাকার কারণে মাছের গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকা কষ্টকর। দাম বাজার তুলনামূলক কম পাওয়া যায়।

ভাই ভাই মৎস্য আড়দের মালিক অমর দাস বলেন, আমরা যখনই বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারব না। তার প্রভাব সরাসরি জেলেদের উপর পরে। পদ্ম সেতু খুলে গেলে রাতে ধরা মাছ ভোর বেলাই সড়ক পথে ঢাকা পাঠানো যাবে মাত্র ৫ থেকে ৬ ঘণ্টায়। এতে করে মাছের গুণাগত মান যেমন অক্ষুন্ন থাকবে তেমনি দামও পাওয়া যাবে বাজারের অন্যান্য এলাকার মাছের চেয়ে বেশি। পদ্মা সেতু খুলে গেলে প্রতিযোগীতার বাজারের আমরাই হব সেরা। জেলেরা বেশি লাভবান হবেন।

চরবেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের প্রবীণ জেলে বাদশা মাঝি বলেন, মাছ ধরি রাতভর কষ্ট করে মাঝে মধ্যে বাজার ভালো পাই আবার কম পাই। মহাজন জানিয়েছেন, পদ্মা সেতু চালু হলেই নাকি আমাদের ভাগ্য খুলে যাবে। আমরা নাকি মাছ বিক্রিতে বেশি লাভ পাবো।

উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তা মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, উপজেলার জেলেদের দীর্ঘ বছরের একটি সমস্যা ছিল ঢাকায় নদী পথে মাছ পাঠানো। সেই সদস্যা দুর হবে পদ্মাসেতু চালু হলেই। আশা করা যাচ্ছে উপজেলার জেলেদের ভাগ্য পরিবর্তনে পদ্মাসেতুর ভুমিকা অপরিসিম হয়ে উঠবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে উপজেলায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে একটা উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। বাউফল পৌরসভা থেকে ঢাকায় সরাসরি বিআরটিসি (শিতাতাপ নিয়ন্ত্রিত) বাস চালু হবে ২৬ জুন থেকে। এ ছাড়াও উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ কৃষি পণ্য যা নদী পথে আসা যাওয়া করতো পদ্মা চালু হলে সড়ক পথে আসা যাওয়া করবে। এসকল যানবাহন যাতে নির্ভিগ্নে চলাচল করতে পারে তার জন্য প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।

(ঢাকাটাইমস/২০জুন/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :