তাজ্জব কাণ্ড! প্রক্সি ধরা পড়েও রাবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম তানভীর!

রাবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৩ আগস্ট ২০২২, ১৩:১৯| আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২২, ১৩:৩২
অ- অ+

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় শিফটে প্রথম হওয়া তানভীর আহমেদের হয়ে প্রক্সি দিয়েছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক শিক্ষার্থী। বায়েজিদ খান নামের ফোকলোর বিভাগের সেই শিক্ষার্থী আটক হন প্রক্সি দিতে গিয়ে।

তবে মঙ্গলবার রাবির ‘এ’ ইউনিটের দ্বিতীয় শিফটে ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে মেধা তালিকায় প্রথম হয়েছেন তানভীর আহমেদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, ৩৯৫৩৪ রোল নম্বরধারী তানভীর ৯২ দশমিক ৭৫ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন।

গত ২৬ জুলাই রাবির ‘এ’ ইউনিটের দ্বিতীয় শিফটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেদিনই তানভীরের হয়ে সত্যেন্দ্রনাথ বসু একাডেমিক ভবনে প্রক্সি দেওয়া অবস্থায় ধরা পড়েন বায়েজিদ। পরে তাকে এক বছরের দণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

পরীক্ষার দিনই রাবির জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসকের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রক্সি দিতে গিয়ে বায়েজিদকে জেলে পাঠানোর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। একই দিন বায়েজিদ ছাড়া আরও তিনজনকে প্রক্সির ঘটনায় কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

রাবির ওয়েবসাইটে আরও দেখা গেছে, ৬২৮২৮ রোল নম্বরধারী ইশরাত জাহান নামে আরেক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীও মেধাতালিকায় আছেন। তার হয়ে প্রক্সি দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মেহজাবীন।

নিয়ম অনুযায়ী প্রক্সি বা জালিয়াতি ধরা পড়ার পর ইশরাত বহিষ্কার হওয়ার কথা থাকলেও প্রকাশিত ফলে তিনিও পাস করেছেন। ‘এ’ ইউনিটের তৃতীয় শিফটে ৪৬ দশমিক ৯০ পেয়ে ৬ হাজার ৯২১তম অবস্থানে রয়েছেন।

প্রক্সিকাণ্ডের পরও তানভীর আহমেদের প্রথম হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ‘এ’ ইউনিটের সমন্বয়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইলিয়াছ হোসেন জানান, ‘তার হয়ে কেউ প্রক্সি দিয়েছে এমন তথ্য আমাদের দেওয়া হয়নি। প্রক্সি ধরা পড়লে তার খাতা আলাদা করে ফেলা হয়। কিন্তু এটি আমাদের অবহিত করা হয়নি বিধায় তার (তানভীর) নাম রয়ে গেছে। ভর্তি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে তার ফল বাতিল করা হবে।’

এদিকে প্রক্সিতে ধরা পড়ার পরও ফল প্রকাশিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। প্রক্সি প্রমাণ হওয়ার পরও ফল প্রকাশের মাধ্যমে পরীক্ষা কমিটি তাদের ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকরা।

ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর খাতা সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হওয়া উচিত ছিল। তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনি। ওই শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশের মাধ্যমে পরীক্ষা কমিটির ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।’

নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বখতিয়ার আহমেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে বেশ সতর্ক থাকে। তারপরেও যদি এমনটি হয়ে থাকে তবে এটি বড় ভুল।’

‘একটি ছেলে প্রক্সি দিতে এসে যখন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়, তখন এটি প্রমাণিত যে সে প্রক্সি দিয়েছে। তার মানে তাৎক্ষণিক ওই পরীক্ষার্থীর ‍উত্তরপত্র বাতিল হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। এটি ভর্তি পরীক্ষা কমিটির জন্য বড় ব্যর্থতা।’

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বিষয়টি মাত্র শুনলাম। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইউনিট প্রধানই এ বিষয়ে ভালো উত্তর দিতে পারবেন।’

(ঢাকাটাইমস/০৩আগস্ট/প্রতিনিধি/ডিএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
শেখ হাসিনার অপকর্মের খবর রাখতেন বলেই সাগর-রুনিকে হত্যা করা হয়েছে: সালাম আজাদ
আল্লামা সুলতান যওক নদভীর ইন্তেকালে জামায়াত আমিরের শোক
এমন দেশ চাই যেখানে ফ্যাসিস্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না: ব্যারিস্টার অসীম
বগুড়ায় দুই সাংবাদিকের ওপর হামলা, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা