বলাৎকারের সময় চিৎকারই কাল হলো সিহাবের, হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন ‘মুরগি চাচ্চু’

টঙ্গী-পূবাইল (গাজীপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:৫৬ | প্রকাশিত : ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:৩৪

গাজীপুর মহানগরের পূবাইল থানাধীন ৪০নং ওয়ার্ডের মাজুখানে (বলৎকার) করায় ব্যর্থ হয়ে পাশবিক নির্যাতনের পর শিশু সিহাব হোসেনকে (৬) হত্যার পর তাবলিগে চলে যায় আসামি নাসির মিয়া (২৮)। এরপর দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস পর পিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন নাসির মিয়া। আর এতে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে সফল হয় পিবিআই।

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার আসামির নাম নাসির মিয়া (২৮)। তিনি নোয়াখালীর কবিরহাট থানার সোনাপুর জমিদারহাট এলাকার কালাম মিয়ার ছেলে। তিনি পূবাইল থানাধীন ৪০ নং ওয়ার্ডের মাজুখান বাগেরটেক এলাকায় ভাড়া থাকতেন।

হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশু সিহাব হোসেনপূবাইল থানার ৪০নং ওয়ার্ডের মাজুখান উত্তরপাড়া জুয়েলের ছেলে পিবিআই জানায়, ২০২১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে শিশু সিহাব নিখোঁজ হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে পরদিন সকালে মাজুখান এলাকার একটি বাড়ির সামনে সিহাবের লাশ পাওয়া যায়। পরে সিহাবের স্বজনরা লাশ শনাক্ত করে বাড়ি নিয়ে যায়। খবর পেয়ে জিএমপির পূবাইল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ২৬ সেপ্টেম্বর নিহত শিশুর দাদী বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে পূবাইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন {মামলা নং-১৫(১১)২১}। পূবাইল থানা পুলিশ মামলা তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে পিবিআই নাসির মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার আসামি বরাত দিয়ে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, নাসির মিয়া মাজুখান উত্তরপাড়ায় জনৈক ফারুকের মুরগির দোকানে কর্মচারি হিসেবে কাজ করত। বেশিরভাগ সময় মালিক দোকানে থাকতেন না। নাসির নিজেই মুরগি ও ফিড বেচা কেনা করতেন। শিশু সিহাব মাঝে মধ্যে নাসির মিয়ার দোকানে আসত। অন্য মুরগি ফিড খেয়ে ফেলার সময় মুরগি তাড়ানোর জন্য নাসির খেলনা পিস্তল ব্যবহার করতেন। খেলনা পিস্তলের ছোড়া গুলি সিহাব কুড়িয়ে আনতো। নাসির মাঝে মধ্যে সিহাবকে চিপস্ কিনে দিত। শিশু সিহাব নাসিরকে মুরগি চাচ্চু বলে ডাকতো। এভাবে সিহাবের সঙ্গে নাসিরের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আসামি নাসির একই মহল্লায় ভাড়া থাকতো।

পিবিআই কর্মকর্তা আরো জানান, ঘটনায় জড়িত আসামি নাসির বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন। ঘটনার দিন দুপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সময় সিহাব নাসিরের রুমে যায়। নাসির তখন ল্যাপটপে নীল ছবি দেখে উত্তেজিত হয়ে শিশু সিহাবকে (বলৎকারের) চেষ্টা করে। সে সময় সিহাব চিৎকার দেয়। পরে তার মুখ চেপে ধরে পাশবিক নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে সিহাবের দেহ নিস্তেজ হয়ে যায়। পরে মৃতদেহ খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে দরজা লাগিয়ে নাসির বাইরে চলে যায়। পরদিন ভোররাতে সিহাবের লাশ সালাম মুন্সীর বাড়ির পাশে ফেলে রাখে নাসির। ঘটনার তিনদিন পরে নাসির এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম চলে যায়। দুদিন পরে সেখান থেকে ফিরে। এর ১ সপ্তাহ পর নাসির ৪০ দিনের চিল্লায় (তাবলিগে) চলে যায়।

তিনি আরো জানান, গ্রেপ্তার নাসির বৃহস্পতিবার এ ঘটনার দায় শিকার করে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২১জানুয়ারি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :