প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেলেন নোবেল

এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় দুই পা বিহীন নোবেল এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেয়ে রীতিমতো চমক দেখিয়েছেন। শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে এইচএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত একদিন তিনি কলেজে যাননি। জীবনের সকল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন বাবার কোলে চড়ে।
নোবেল ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় অদম্য মেধাবী। তাই প্রতিবন্ধকতা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ-ফাইভ সহ জেএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জনের পর ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জুড়ী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় শাখায় জিপিএ ৪.৮৩ পেয়ে চমক দেখায়।
মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার দক্ষিণ জাঙ্গীরাই গ্রামে নাহিদুল আমিন নোবেলের বাড়ি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় নোবেলের একদিন জ্বর হয়। চিকিৎসা নিতে গিয়ে জানা যায় নোবেল টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছে। এক সময় তার কোমর থেকে পা পর্যন্ত বিকলাঙ্গ হয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুটি পা নেই নোবেলের। তবে সে দুর্দান্ত মেধাবী ও কঠিন সংগ্রামী। পা না থাকলেও হাত দিয়েই চলে তার সব কাজ। পা না থাকায় চলতে ফিরতে বাবার কোলই তার একমাত্র ভরসা। বাবার কোলে চড়েই স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তার স্বপ্ন, লেখাপড়া শেষ করে ভালো মানুষ হওয়ার পাশাপাশি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার।
নোবেল জানান, পা হারানোর পর থেকে তার লেখাপড়া করা ও স্বাভাবিক চলাচলে মা-বাবাসহ পরিবারের সকলেই তাকে সবসময় সহযোগিতা করে আসছেন।
তিনি আরো বলেন, আমি সরকারের সুদৃষ্টি পেলে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।
নোবেলের বাবা হুমায়ুন কবীর বলেন, ছোটবেলা থেকে পা হারানোর পর থেকেই তার স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হবে। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমিসহ আমার পরিবার সব সময় তাকে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি।
জুড়ী তৈয়ুবুন্নেছা খানম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ফরহাদ আহমদ বলেন, অন্য সুস্থ স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের মত নোবেল লেখাপড়া না করতে পারলেও সে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। তার এ সাফল্যে আমরা সত্যিই গর্বিত।
জুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, নোবেলের অদম্য মেধার গল্প শুনে সত্যিই ভালো লাগছে। সরকারের পক্ষ থেকে নোবেলের প্রতি সবসময় সুদৃষ্টি থাকবে।
(ঢাকাটাইমস/১১ফেব্রুয়ারি/এলএ)

মন্তব্য করুন