ঘোমটা পরে বিএনপি নির্বাচনে আসবে: ওবায়দুল কাদের
জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘তারা (বিএনপি) সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আসবে না বলেছে। তারা ঘোমটা পরে নির্বাচনে আসবে। বিএনপিতে উকিল সাত্তারের অভাব নেই। বিএনপির অনেকেই নির্বাচনে অংশ নিতে তলে তলে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।’
সোমবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে এসব বলেন ওবায়দুল কাদের।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আজকে রাজনীতিতে নতুন খেলা শুরু হয়ে গেছে। এ খেলা চক্রান্তের খেলা, এ খেলা ষড়যন্ত্রের খেলা। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে বিএনপি ভাবছে এবং তারা জানে আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিজয় অনিবার্য। তারা জানে বিদেশিরা পর্যন্ত বলে ‘শি মেড বি পপুলার’, সেই অত্যন্ত জনপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হারানো যাবে না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিও বুঝে গেছে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সঙ্গে নির্বাচন করে লাভ নেই। এটা বুঝতে পেরে আজকে ফখরুলের মনের জোর কমে যাচ্ছে। মনের জোর কমছে গলার জোর বাড়ছে। এখন প্রতিনিয়ত অদ্ভুত অদ্ভুত কথাবার্তা বলছে। এখন মনে হয় বেপরোয়া গাড়ির চালকের মতো রাজনীতির বেপরোয়া চালক ফখরুল যেভাবে পথ হারিয়ে দিশেহারা হয়ে গাড়ি চালাচ্ছে তাতে যেকেন সময় না দুর্ঘটনা হয়ে যায়। রাজনীতির দুর্ঘটনা ঘটার পথে হাটছে বিএনপি। এই অপশক্তিকে ঠেকাতে হবে।
সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, নিয়ম মাফিক সিটি নির্বাচন হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে। তাতে ফখরুলের এত মাথাব্যথা কেন? কী অসুবিধা বিএনপির? বিএনপি ঘোমটা পরা প্রার্থী দেয়, প্রকাশ্যে আসে না। নিয়ম অনুযায়ী সিটি নির্বাচন হবে। কেউ আসুক বা না আসুক। নির্বাচন কারো জন্য থেমে থাকবে না। বিএনপিও ঘুমটা পরে নির্বাচনে আসবে। এই নির্বাচন নিয়েও তাদের ভয়। কারণ এখানে হেরে গেলে জাতীয় নির্বাচনে আর সম্ভব না। এজন্য তারা ভয় পাচ্ছে।
'আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী দল' বিএনপি মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ কথা শুনে ঘোড়াও হাসে। দেশের ভেতর সবাই জানে কে সন্ত্রাসী দল। কানাডার আদালত বাংলাদেশে সন্ত্রাসী দল হিসেবে বিএনপিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সন্ত্রাসী দল বিএনপি, আর বিএনপি বলে সন্ত্রাসী দল আওয়ামী লীগ। মাথা খারাপ হয়ে গেছে, মাথা বিকল হয়ে গেছে বিএনপির। এখন সন্ত্রাস করবে এজন্য আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাস বলছে। গলাবাজি করছে। তারা সেটা করে আওয়ামী লীগের উপর দোষ চাপায়। তারা সন্ত্রাস করবে। ষড়যন্ত্রের প্রধান অনুষঙ্গ সন্ত্রাস।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসের রাজনীতি করে না। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসকে ঘৃণা করে। ঘৃণা করে বলেই ১৪ বছর ধরে একনাগারে শেখ হাসিনা ক্ষমতায়। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে মানুষের জন্য। আর বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে তাদের পকেটের জন্য। বিএনপির আন্দোলন রং বেরঙ্গের রংধনু আন্দোলন। কখনো পদযাত্রা, কখনো অবস্থান কর্মসূচি। এই রংধনু আন্দোলন বাংলাদেশের মানুষের কোন সাড়া জাগাতে পারেনি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশ ঘুরে দাড়াতে শুরু করেছে। জিনিসপত্রের দাম কমে যাবে। জ্বালানির দাম কমবে। বৈশ্বিক সংকটে দেশের মানুষের কষ্ট অনুভব করেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ৫২ দল এখন কয় দল আছে জানি না। মান অভিমানের পালা চলছে। এটা করতে করতে জোট কত সংখ্যা হয় সেটাই ভেবে দেখা দরকার। বাম ডান একাকার জগাখিচুড়ি ঐক্য। বিএনপির জগাখিচুড়ি ঐক্য গতবারও টিকেনি, এবারো টিকবে না।
ওবায়দুল কাদের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। স্বাধীনতার চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতীয় পতাকা উঁচিয়ে রাখব জীবনের বিনিময়ে। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির ঠিকানা বিএনপি। এই অপশক্তিকে রুখতে হবে, প্রতিহত ও পরাজিত করতে হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুলের সভাপতিত্বে শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডাক্তার মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।
(ঢাকাটাইমস/১০এপ্রিল/জেএ/কেএম)