পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে মোটরসাইকেলের দীর্ঘ সারি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৪০ | প্রকাশিত : ২০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩০
ছবি ফেসবুক ব্যবহারকারী আকরাম হোসেনের ওয়াল থেকে নেওয়া

দীর্ঘদিন বন্ধের পর ঈদ সামনে রেখে চলাচলের ভোগান্তি বিবেচনায় চালু করে দেওয়া হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল।

ছয়টি শর্ত মেনে বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই চলাচল শুরু করেছে মোটরসাইকেল। এদিন ভোর ৫টা ৫৫ মিনিট থেকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া টোল প্লাজা থেকে সেতুতে মোটরসাইকেল জমায়েত হতে শুরু করে। বেলা বাড়তেই জমতে শুরু করে দীর্ঘ লাইন।

সরজমিনে দেখা যায়, ঈদকে কেন্দ্র করে সেতু পারাপারে মাওয়া টোল প্লাজা অভিমুখের সড়কজুড়ে রয়েছে হাজারো মোটরসাইকেল। গভীর রাত থেকে সেতুতে পারাপারের জন্য মোটরসাইকেল নিয়ে টোলপ্লাজা অভিমুখের সড়কে অবস্থান নেন মোটরসাইকেল আরোহীরা। দীর্ঘদিন পর সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন তারা। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় টোলপ্লাজায় পুলিশ, ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করতেও দেখা গেছে।

জানা গেছে, অনেকেই মোটরসাইকেলের জন্য সেতু উন্মুক্ত করার নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই পারাপারের জন্য এসে উপস্থিত হন। তবে নির্ধারিত সময় হওয়ার আগে কাউকে সেতুতে উঠতে দেওয়া হয়নি। মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে এনে পদ্মা সেতু উত্তর থানার সামনে দিয়ে আলাদা লেনে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজার আগে আটকে রাখে পুলিশ।

ঘোষিত সময় সকাল ৬টার আগে কোনও মোটরসাইকেল পদ্মা সেতুতে উঠতে দেওয়া হবে না বলেও জানান দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘সেতু উন্মুক্তের নির্ধারিত সময়ের আগে যেসব মোটরসাইকেল পদ্মা সেতু প্লাজার কাছে চলে আসছে তাদের পদ্মা সেতু উত্তর থানার সামনে থেকে রোড ডাইভারশন দিয়ে ঘুরিয়ে আলাদা করে রাখা হচ্ছে।’

এদিকে পদ্মার সেতুতে চলতে মোটরসাইকেলের জন্য রয়েছে নির্ধারিত একটি টোল। এ ছাড়া পদ্মা সেতুর পরেও মোটরসাইকেলের জন্য রোড ডাইভারশন দেওয়া হয়েছে।

সেতু বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. ভিখারুদ্দোলা চৌধুরী বলেন, ‘একটি বুথ দিয়ে টোল আদায়ের পরিকল্পনা থাকলেও চাপ থাকায় আজ দুটি বুথ দিয়ে আদায় করা হচ্ছে। প্রতি মিনিটে টোল দিতে পারছে ২৫ থেকে ৩০টি মোটরসাইকেল। প্রথম ঘণ্টায় সকাল ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত ১ হাজার ৫৩৭টি মোটরসাইকেল সেতু পাড়ি দিয়েছে।’

গত বছরের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয় পদ্ধা সেতু। এর পর দিন যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। প্রথম দিন বিপুল সংখ্যক মোটরসাইকেল সেতু দিয়ে পার হয়। টাকার বিনিময়ে বাইকে করে সেতু পার করে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। এরমধ্যেই ওই দিন রাতে এক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই জন মারাত্মক আহত হন। ওই দুর্ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। পরদিন সেতুটি দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করে সরকার।

গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন বলে জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে চলবে মোটরসাইকেল। ২০ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে। সেতুর বাম পাশে সার্ভিস লেন দিয়ে চলবে। স্পিড লিমিট ঘণ্টায় থাকবে ৬০ কিলোমিটার। গতি এর বেশি তোলা যাবে না।’

তিনি জানান, ‘কোনোভাবেই সার্ভিস লেনের বাইরে মূল সেতুতে মোটরসাইকেল আসতে পারবে না। নির্ধারিত হারে টোল প্রদান করতে হবে। যদি নিয়ম না মানে তাহলে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হবে।’

মানতে হবে যে নির্দেশনা: সেতু কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নির্ধারিত টোল দিয়ে মোটরসাইকেল সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হতে পারবে। এর জন্য নির্ধারিত টোলবুথ ও নির্ধারিত লেন ব্যবহার করতে হবে; কোনও অবস্থাতেই নির্ধারিত লেন পরিবর্তন করা যাবে না; ওভারটেকও করা যাবে না; চালক ও আরোহীকে হেলমেটসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাসামগ্রী ব্যবহার করতে হবে; কোনও অবস্থাতেই সেতুর ওপর দাঁড়ানো বা ছবি তোলা যাবে না; চালকসহ সর্বোচ্চ দুজন মোটরসাইকেলে চড়তে পারবেন।

বর্ণিত শর্তসমূহ প্রতিপালন করে পদ্মা সেতু ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সবাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। এসব শর্ত না মানলে মোটরসাইকেল চলাচলের এ সুযোগ বাতিল করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২০এপ্রিল/কেআর/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :