বেশিক্ষণ এসিতে থাকলে স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক

স্বাস্থ্য ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ মে ২০২৩, ১১:২৯ | প্রকাশিত : ২০ মে ২০২৩, ১০:৪৪

প্রকৃতিতে প্রতিদিনই বাড়ছে তাপমাত্রা। কাঠফাটা রোদ আর ভ্যাপসা গরমে নাভিশ্বাস চারদিক। গরম থেকে বাঁচতে অনেকেই সারাদিন এসিতে থাকেন। এসিতে থাকলে গরমের অনুভূতি কমে যায় ঠিকই কিন্তু তার ফলাফল হতে পারে অন্যরকম। গরম বাড়ায় ঘর থেকে বের হতেও কষ্ট হচ্ছে মানুষের। সেই সঙ্গে অনেকেই গরম থেকে বাঁচতে নানা উপায় খুঁজতে থাকেন। গরম থেকে স্বস্তি পেতে অনেকেই ঘরে কুলার লাগান আবার কেউ এসি ব্যবহার করেন।

এসিতে গেলে সঙ্গে সঙ্গে ঘাম শুকিয়ে যায় এবং গরম থেকে আরাম পাওয়া যায়। কিন্তু আপনি কি জানেন দীর্ঘক্ষণ এসিতে থাকা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ অনেকক্ষণ এসিতে থাকার পর হঠাৎ এসি থেকে বের হয়ে এলে গরম বেশি অনুভূত হয়। এ কারণে স্বাস্থ্যের আরও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সাবধান! আপনিও যদি গরম থেকে বাঁচতে চান তাহলে দিন-রাত এসির মধ্যে কাটানো বন্ধ করুন। আরাম পেতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনছেন না তো! হ্যাঁ, এসিতে সারাদিন থাকলে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। দীর্ঘক্ষণ এসিতে থাকলে কী কী সমস্যায় পড়তে পারেন জেনে নিন।

স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে

দীর্ঘক্ষণ এসিতে ঘুমালে আপনি হয়তো তাপ অনুভব করেন না এবং অনেক শীতলতা অনুভব করেন কিন্তু তা ঠান্ডা, সর্দির সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। এই কারণে আপনার ঠান্ডা, গরম এবং ঠান্ডা সমস্যা হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মনে রাখবেন কিছু সময় শুধু এসি চালান এবং অসুস্থ হওয়া এড়ান। বিশেষ করে অনেকেই বাইরে থেকে ঘেমে এসেই এসি চালিয়ে বসেন। তাদের জন্য সতর্ক বার্তা শোনাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ঘাম হচ্ছে শরীরের দূষিত বর্জ্য, এটি বের হয়ে গেলেই ভালো। কিন্তু বাইরে থেকে ঘেমে এসে এসির বাতাসে বসলে ওই ঘাম আবার শুকিয়ে গায়েই বসে যায়। তাতে হতে পারে নানা শারীরিক জটিলতা। বড় ধরনের ঠান্ডাও লেগে যেতে পারে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, বাইরে থেকে ঘেমে আসলে প্রথমে একটা গামছা বা তোয়ালে দিয়ে ঘামটা ভালো করে মুছুন। এরপর কিছুক্ষণ ফ্যানের বাতাসে শরীরকে স্বাভাবিক করে তবেই এসির বাতাসে বসুন।

ডিহাইড্রেশন সমস্যা

যাদের দীর্ঘক্ষণ এসি রুমে থাকতে হয় তারা বেশিরভাগই ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। এসি ঘরের মধ্যে থাকলে এসি শরীর থেকে সব আর্দ্রতা শুষে নেয় | তাই বেশি সময় যদি এসি ঘরের মধ্যে থাকার প্রয়োজন হয় তাহলে বেশি করে পানি খান একটু পরপরই।

রোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়

শরীরে গরম লাগার ফলে শরীর থেকে দূষিত বর্জ্য ঘাম আকারে শরীর থেকে নির্গত হয়। এসিতে থাকার ফলে শরীরে ঘামের সৃষ্টি হয় না ফলে ধীরে ধীরে শরীর থেকে দূষিত বর্জ্য নির্গত হওয়ার এই পথ রুদ্ধ হয়ে যায় যার ফলে মারাত্মক শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

শরীরে ব্যথা বেদনা বাড়ায়

দীর্ঘক্ষণ এসি-তে ঘুমালে ধীরে ধীরে শরীরে ব্যথা শুরু হয়। সারারাত এসিতে ঘুমালে কোমর ব্যথা, হাত-পা ব্যথা, মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এমন অবস্থায় এই ব্যথা-বেদনা এড়িয়ে সময় মেনে এসিতে থাকুন।

শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা বাড়ে

এসির মধ্যে থাকলে চোখ, নাক, গলায় অসুবিধা হতে পারে। এই যেমন নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, ড্রাই থ্রোট বা সাইনোসাইটিসের সমস্যা হতে পারে। বা চোখ দিয়ে পানি পড়া শুরু হতে পারে। এটা বহু গবেষণাতেই প্রমাণিত।

বেশি ক্লান্তি বোধ করা

এসির কাজই হলো অফিস বা ঘরকে ঠাণ্ডা করে দেওয়া। কিন্তু ঠাণ্ডা করার পাশাপাশি এসি আমাদের শরীরকেও বেশ ক্লান্ত করে দেয়। এছাড়া খেয়াল করলে দেখা যাবে যে, এসি ঘরে থাকলে ঘুমঘুম ভাব থাকে সবসময়, মেজাজও ভালো লাগেনা।

ত্বকের সমস্যা ‘ড্রাই ইচি স্কিন’

সাধারণত গরমকালে আমরা এসির ব্যবহার বেশি করি | এই সময় সূর্যের এক্সপোজারও অনেক বেশি থাকে বলে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে শুরু হয় চুলকানির সমস্যা। একে বলা হয় ` সিক বিল্ডিং সিন্ড্রোম `।

বাড়তে পারে অ্যাজমা-অ্যালার্জি

দীর্ঘ সময় এসি রুমে থাকলে অ্যাজমা আর অ্যালার্জি বেড়ে যেতে পারে। একে তো ঠাণ্ডার সমস্যায় পড়ে হাচি-কাশি শুরু হয়। আবার এসিগুলো এবং এসি থাকা ঘরগুলো ঠিকমতো পরিস্কার করা না হলে সেই ঘরে থাকলে অ্যাজমা আর অ্যালার্জি হওয়ার প্রবণতা অনেকটা বেড়ে যায় ।

চোখ শুষ্ক হয়ে যায়

দীর্ঘসময় এসি ঘরে থাকলে চোখ শুষ্ক হয়ে যায় এর ফলে চোখ কড়কড় করবে বা চুলকাতে থাকবে। সেই সেঙ্গে চোখ জ্বালাপোড়াও করতে পারে। আবার বেশি সিরিয়াস সমস্যা হলে চোখে অস্পষ্ট বা ঝাপসা ভাব চলে আসতে পারে।

ইনফেকশাস ডিজিজ হতে পারে

দীর্ঘ সময় এসিতে থাকার ফলে নাকের প্যাসেজ ড্রাই হয়ে যায়। ফলে মিউকাস মেমব্রেনে ইরিটেশন হতে পারে বা মিউকাস শুকিয়ে যেতে পারে | এর ফলে যেকোনো ধরনের ভাইরাস সহজেই শরীরে প্রবেশ করতে পারে, আপনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।

এসি থেকে ডেঙ্গু হতে পারে

শুধু তাই নয়, এসির পানি যেখানে পড়ে, সেখানে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়াবাহিত প্রাণঘাতী মশার জন্ম হয়। সেক্ষেত্রেও সাবধান থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই গরমে সুস্থ থাকতে এসিতে থাকুন কিন্তু নিয়ম মেনে।

(ঢাকাটাইমস/২০ মে /আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :