নিরাপত্তাকর্মীর হাত বেঁধে ব্যাংকের ১৪ লাখ টাকা চুরি: নেপথ্য খলনায়ক নিজেই

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২৩, ১৯:৩৬
অ- অ+

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (কোচাশহর শাখা) নিরাপত্তা প্রহরীকে হাত-পা বেঁধে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার নেপথ্যে ওই ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী গোলাম হোসেন জুয়েল (৩৭) নিজেই। ব্যাংক বন্ধের দিনে তিনিই ব্যাংকের ভল্ট হতে ১৪ লাখ ১৮ হাজার ৬৬০ টাকা চুরি করেন। ঘটনার তীর ভিন্ন দিকে নিতে নিজেই নিজের হাত-পা বেঁধে নাটক সাজান ব্যাংক ডাকাতির।

সোমবার দুপুরে জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানা চত্বরে এক প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান গাইবান্ধার পুলিশ সুপার কামাল হোসেন। গোলাম হোসেন জুয়েল গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শ্রীমতি গ্রামের মৃত শামসুল হকের ছেলে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে কামাল হোসেন জানান, গত ২৫ মে অনুমান বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রতিদিনের ন্যায় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, কোচাশহর শাখার ব্যবস্থাপক জেসমিন আকতার (৩১) সামগ্রীক কার্যক্রম শেষে ব্যাংকের ক্যাশ ভল্টে বিভিন্ন নোট ও কয়েনের সর্বমোট ১৪ লাখ ৪৫ হাজার২০০ টাকা গচ্ছিত রেখে ভল্টের তালাবদ্ধ করে সকল অফিস স্টাফসহ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ব্যাংক থেকে বের হয়ে যান। পরের দুইদিন ২৬ ও ২৭ তারিখ শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। পরে ২৮ মে সকালে তার অফিসের পরিচ্ছন্নকর্মী দুলাল মোবাইল ফোনে জানান ব্যাংকের মেইন গেইটের তালা খোলা। এমন সংবাদে ব্যবস্থাপক জেসমিন আকতার তাৎক্ষনিক তার সহকর্মী ফিল্ড অফিসার ফুয়াদ সরকার, ও জয়নুল আবেদীন, দ্বিতীয়য় কর্মকর্তা ফরহাদ কবীরসহ ব্যাংকে গিয়ে ব্যাংকের তিনটি তালা খোলা দেখতে পান । পরে ব্যাংকের ভিতরে প্রবেশ করে অফিসের চেয়ার টেবিল এলোমেলো দেখতে পান।

এসময় তিনি ব্যাংকের নিরাপত্তাকর্মী গোলাম হোসেন জুয়েলকে না দেখতে পেয়ে উপস্থিত সকলেই খুঁজতে থাকেন। খোঁজাখুঁজি এক পর্যায়ে ষ্টোর রুমের ভিতরে দরজা খোলা এবং গোলাম হোসেন জুয়েলকে হাত পা বাঁধা কিন্তু অক্ষত অবস্থায় দেখা যায়।

পরে বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকের নির্দেশে পুলিশকে অবহিত করেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং গোলাম হোসেন জুয়েল এর হাত ও পায়ের বাঁধন খুলে দেয়।

পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে গোলাম হোসেন জুয়েলকে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মুখে কিছু না বলিয়া অসুস্থ্যতার ভান করে। পরে পুলিশসহ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বটাকা রাখার ভল্ট পরিদর্শন করে দেখতে পান ভল্টের টাকা রাখার চাপ ডোর, গ্রীল ডোর ও লৌহ সিন্দুক (ভল্ট) খোলা এবং ২৫ মের লেনদেনের ১৪ লাখ ৪৫ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে

১৪ লাখ ১৮ হাজার ৬৬০ টাকা নেই। অবশিষ্ট ২৬ হাজার ৫৪০ টাকা কয়েক ও দশ টাকার নোট ভল্টে রক্ষিত অবস্থায় পাওয়া যায়।

তিনি আরো বলেন, ব্যাংক কর্মকর্তারা প্রায় জুয়েলের মাধ্যমে ভল্ট খোলা ও বন্ধের কাজ করতেন এবং গত ইং ২৫ মে তারিখেও জুয়েলকে ভন্ট বন্ধের দায়িত্ব দেন ও গেটের সকল চাবি তার কাছেই থাকে। তাই জুয়েলকে সন্দেহবশত ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জিজ্ঞেস করলে একেক সময় একেক রকম কথাবার্তা বলতে থাকে।

পরে থানা পুলিশ ব্যাংকের স্টাফসহ স্থানীয় লোকজনদের সামনে গোলাম হোসেন জুয়েলকে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি স্বীকার করেন নিজেই ব্যাংকের ভল্টের তালা সুকৌশলে খুলে ভল্টে রক্ষিত টাকা চুরি করে, নিজেই নিজের হাত-পা নিজেই বেঁধে ডাকাতির নাটক সাজান।

পরে গোলাম হোসেন জুয়েলের বাড়ি শ্রীপতিপুরের বসতবাড়ি এবং ওই ব্যাংকে তার শয়নকক্ষ হতে ১২ লাখ ৬৫ হাজার ৩০০ টাকা উদ্ধার করেন পুলিশ।

পুলিশ সুপার আরও জানান, এ ঘটনায় নিরাপত্তাকর্মী জুয়েলের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনার সাথে অন্য কারো সমপৃক্ততা আছে কিনা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২৯মে/এআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
টয়োটার ব্যবসা হারাচ্ছে নাভানা?
সারজিস বনাম নওশাদ: ভোটে কার পাল্লা ভারি?
মনোহরদীতে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা গণধোলাইয়ের শিকার
গণভবন জয় করেছি, এবার জাতীয় সংসদও জয় করব: নাহিদ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা