আওয়ামী লীগের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে: মান্না
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, যারা ক্ষমতায় আছে তারা অমানুষ। আওয়ামী লীগের কোনো মনুষ্যত্ববোধ নেই। বিগত ১৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগ লক্ষ-কোটি টাকা লুটপাট করেছে। এই সরকার মানুষের মধ্যে জ্ঞানের আলো জ্বালাতে পারে নাই। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে। এই সরকারকে পরিবর্তন করতে হলে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) প্রেসক্লাবে এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই) কর্তৃক আয়োজিত ‘শিক্ষা বাজেটে শুভংকরের ফাঁকি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
মান্না বলেন, সরকারের কাছে শিক্ষাখাতে যে বাজেট আশা করা হচ্ছে, তা অলীক। সরকার শিক্ষায় বাজেট বাড়াবে না কারণ জনগণ শিক্ষিত হতে শুরু করলে গণতন্ত্রের পক্ষে, অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সংগ্রাম শুরু করবে। শাসকগোষ্ঠী সেটা চায় না। সরকার নানা খাতে উন্নয়ন করছে, অবকাঠামো নির্মাণ করছে, কিন্তু মানুষের মনে জ্ঞানের যে ক্ষুধা, সেটা যদি না মিটানো হয় তাহলে সে উন্নয়নের দরকার নেই। মানুষ যখন অর্থনীতি, ইতিহাস সম্বন্ধে সচেতন হবে তখন সে বলবে আমরা এই উন্নয়ন চাই না। আমরা মানবতার উন্নয়ন চাই। এই উন্নয়ন হচ্ছে সরকারের লুটপাটের উন্নয়ন।
বক্তব্যে ইআরআইয়ের চেয়ারম্যান ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন বলেন, ‘২০২৩-২৪ অর্থ বছরে শিক্ষায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ৮৮ হাজার ১৬২ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। মোট বরাদ্দ জিডিপির তুলনায় ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তি খাতের বরাদ্দ যোগ করলে এই হার দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ।’
মিলন বলেন, ‘জাতীয় আয়ের (জিডিপি) হিসাবে ২ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ অর্থাৎ বড় বাজেটে বরাদ্দ সীমিত। যদিও আমরা বরাবরই শুনে থাকি শিক্ষাখাতে প্রায় ১৫ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অর্থ্যাৎ মানব সক্ষমতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। শিক্ষাখাতে বাজেটের বরাদ্দ বেশি দেখানোর জন্য অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের বাজেটকে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা ও প্রযুক্তি মিলিয়ে ৯৪ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা বা মোট বাজেটের ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
‘বলা চলে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রাক্কলিত ২৬ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষায় প্রাক্কলিত ৩৬ হাজার ৪ শত ৮৬ কোটি টাকা, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে নয় হাজার ১৫৩ কোটি টাকা, ও অন্যান্য অপারেটিং, উন্নয়ন সব মিলিয়ে মূলত এককভাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ মোট জাতীয় বাজেটের ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ। বাজেটে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যয়ের কিছু অংশও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত। অপরদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছে তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। সব মিলিয়ে শিক্ষা, বিজ্ঞান, তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বাজেটে সর্বোচ্চ ব্যয় ৯৪ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা অর্থ্যাৎ ১৫.৭ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়েছে। এটাকেই বলা হয় শুভংকরের ফাঁকি।’ বলেন মিলন।
এহছানুল হক মিলন বলেন, ‘প্রতি বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের সার্বিক অর্থনীতির জন্য যে চ্যালেঞ্জগুলো শনাক্ত করা হয় সেগুলো সার্বিকভাবে মোকাবেলা করার পদক্ষেপ নেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যার জন্য চ্যালেঞ্জ সনাক্ত করা এবং সে অনুযায়ী জাতীয় বাজেটে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অর্থনীতি, কর্মসংস্থান বা রেমিটেন্স, মানবসম্পদ উন্নয়ন কিংবা আর্থ সামাজিক উন্নয়ন করতে হলে শিক্ষা সংস্কার ও শিক্ষা বাজেটে গুরুত্ব দিতে হবে।’
(ঢাকাটাইমস/১৫জুন/জেবি/কেএম)