দেখেশুনে ভালোবেসে বিয়ের পরও যেসব কারণে সংসারে সুখ থাকে না

কবিগুরুর একটা গান আছে, ‘ভালোবেসে সখী নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখো তোমার মনের মন্দিরে’। আমাদের মতো ছাপোষা বাঙালির তো এইটুকুই চাওয়া। ভালোবাসার মানুষের কাছে প্রেমের আবদারটুকু মিটে গেলেই আমাদের মনে দোলা দেয় বসন্তের দক্ষিণা বাতাস। তখন সব বেদনা ভুলে একে অপরের সঙ্গে বেঁধে বেঁধে জীবন কাটানো যায়।

তবে অনেকের ভাগ্যে এই সমান্য সুখটুকুও জোটে না। তাই তারা দেখেশুনে বিয়ের পরও সঙ্গীর থেকে দূরে দূরেই থাকেন। এই কারণেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তৈরি হয় গভীর শূন্যতা। এমনকি এক ছাদের তলায় থাকার পরও তাদের মধ্যে তৈরি হয় আলোকবর্ষ দূরত্ব। দিনের পর দিন এমন নিম্নচাপ সইতে সইতে সম্পর্কের ভিতটাই নড়ে যায়। তখন বিচ্ছেদের খাদের মুখে পৌঁছে যায় দাম্পত্য।

তাই সম্পর্কের ভালো চাইলে আপনাকে সতর্ক হতে হবে। আর অবশ্যই জেনে নিতে হবে যে, স্বামী-স্ত্রীর ঠিক কোন কোন ভুলে দেখেশুনে বিয়ে করেও সুখী হন না দম্পতিরা। তারপর এসব ভুল করা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। আশা করছি, এতেই আপনাদের দাম্পত্যে ফুটবে ভালোবাসার ফুল।

অসম্মান করলেই ফাঁসবেন​

বিবাহিত জীবনে একে অপরকে সম্মান দেয়া খুবই জরুরি। নইলে কিন্তু কোনোদিনই নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি হবে না। বরং পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই ভুলটা শুধরে নেয়া দরকার। সঙ্গীকে সম্মান দিন। তার কথা শুনুন। তার মতামতকে গুরুত্ব দিন। এতেই দেখবেন আপনাদের এলোমেলো সম্পর্ক সঠিক লাইনে চলে আসবে।

সময় না দিলেই চিত্তির!​

দাম্পত্যের অচেনা পরিসরে একে অপরকে সময় না দিলে তো মহা ফাঁসা ফেঁসে যাবেনই! বিশেষত, দেখেশুনে বিয়ে করার পর পরস্পরকে সময় না দিলে দাম্পত্যের বাঁধনই তো মজবুত হবে না। এই কারণেই পরস্পরের মধ্যে বাড়তে থাকবে দূরত্ব। তাই যত ব্যস্ততাই থাকুক না কেন একে অপরকে সময় দিতেই হবে। কাটাতে হবে বিশেষ মুহূর্ত। এতেই দেখবেন দাম্পত্যের বাগানে ফুটবে গোলাপফুল।

মতের অমিলই সমস্যার মূল​

বিরুদ্ধ মত সবসময় স্বাগত। তাতে মানসিক নমনীয়তা বাড়ে। তবে দাম্পত্যের পরিসরে স্বামী-স্ত্রী সব ব্যাপারে বিরুদ্ধ মত পোষণ করলে কিন্তু হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কাই বেশি! তখন কোনো মতেই শান্তিতে সংসার করা সম্ভব হবে না। তাই পরস্পরের মধ্যে সমঝোতা করে নেয়া দরকার। তবেই যুদ্ধংদেহী পরিস্থিতি থেকে মুক্তি মিলবে। সুখে সংসার করতে পারবেন।

অত্যধিক পরিবারপ্রীতিই ঝামেলায় ফেলে

চার হাত এক হওয়ার পর স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই নিজেদের পরিবারের প্রতি অত্যধিক নির্ভরতা কাটাতে হবে। নচেৎ এই ভ্রান্ত আচরণের কারণে অচিরেই বিরাট সমস্যায় পড়বেন! এমনকি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে চিঁড় ধরে যেতেও পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব পরিবারপ্রীতি কাটান। এই কাজটা করতে পারলেই দেখবেন পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা কয়েকগুণ বাড়বে। সংসার হবে সুখের।

বিপদের অপর নাম একঘেয়েমি

এই অট্টালিকা সর্বস্ব প্রাণহীন শহরে দিনের পর দিন জীবনযাপন করলে সম্পর্কের কাঠামোর ওপর জং পড়তে বাধ্য। তাই একে অপরের ভালো চাইলে সময় পেলেই একটু বেরিয়ে আসুন। পাহাড়ের কোলে কিংবা অসীম সমুদ্রের পাশে বসে নিজেদের সম্পর্ককে আবার বাঁচিয়ে তুলতে হবে। তাহলেই দাম্পত্যে আসবে ভালোবাসার জোয়ার।

(ঢাকাটাইমস/১৪সেপ্টেম্বর/এজে)