সংসারে অশান্তি
যমজ দুই নবজাতককে ডোবায় ফেলে হত্যা, মা আটক

যশোরে কেশবপুরে স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক কলহের জেরে ডোবায় ফেলে ১২ দিন বয়সের যমজ ছেলে-মেয়েকে হত্যার অভিযোগে মা সুলতানা ইয়াসমিনকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সুলতানা ইয়াসমিন সাহাপাড়ার আবু বক্কর সিদ্দিকের স্ত্রী।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন (অপরাধ) জানান, দুই বছর আগে সুলতানা ইয়াসমিনের সঙ্গে আবু বক্কর সিদ্দিকের বিয়ে হয়। দুইজনের বিয়ের পূর্বে পৃথক সংসার ছিল। সুলতানা ইয়াসমিনের প্রথম সংসারের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। যার নাম অহনা ইয়াসমিন (১১)। আবু বক্কর সিদ্দিকের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর সুলতানা ইয়াসমিন বুঝতে পারে তার স্বামী অন্য নারীতে আসক্ত। তাই তিনি স্বামীকে সুপথে ফেরাতে এবং সংসারের দিকে মনোযোগী করতে বাচ্চা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এরইমধ্যে গত ১০ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে কেশবপুর শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে সুলতানা ইয়াসমিনের যমজ সন্তানের জন্ম হয়। যার মধ্যে একটি পুত্র সন্তান এবং একটি কন্যা সন্তান। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে প্রায় দেড় মাস পূর্বে বাচ্চা ভূমিষ্ট হওয়ায় জন্মের পর শিশু দুটির বিভিন্ন শারীরিক জটিতলা দেখা দেয়। বাচ্চাদুটিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। সুস্থ না হওয়ায় ২১ নভেম্বর পুত্র সন্তানটিকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তারা পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেন, পরের দিন পুনরায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাবেন।
ইতোমধ্যে বুধবার রাত দেড়টার দিকে পুত্র সন্তানটি নিস্তেজ হয়ে এলে মা সুলতানা ইয়াসমিন চিন্তা করেন, তার ছেলেটা হয়তো মারা গেল, স্বামীও পরনারীতে আসক্ত, মেয়েটিও শ্বাসকষ্টে ভুগছে, এখন তার কী হবে? তখন সুলতানা ইয়াসমিন তার মৃতপ্রায় পুত্র সন্তানটিকে বাড়ির সামনে দক্ষিণ পাশের ডোবায় নিক্ষেপ করে। পরে ঘরে ফিরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং কন্যা সন্তানটিকেও সবার অগোচরে একই ডোবায় নিক্ষেপ করেন। এর পর ঘরে ফিরে বাচ্চাদের পাওয়া যাচ্ছে না বলে গল্প সাজান নবজাতকদের মা। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন বাচ্চা দুটিকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন।
নবজাতকদের নানা আব্দুল লতিফ থানায় ফোন করে বাচ্চা পাওয়া যাচ্ছে না বলে পুলিশকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে খোঁজাখুঁজি করে একই ডোবা থেকে দুই নবজাতকের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, যমজ সন্তানদের ডোবায় নিক্ষেপের কথা স্বীকার করেছেন সুলতানা ইয়াসমিন। ঘটনায় জড়িত সুলতানা ইয়াসমিন পুলিশ হেফাজতে আছেন। এ বিষয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান তিনি।
(ঢাকাটাইমস/২৩নভেম্বর/এআর)

মন্তব্য করুন