মির্জাপুরে উদ্ধার হওয়া গরু ফিরিয়ে দিতে ৫০ হাজার টাকা চাইলেন এসআই

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে চুরি হওয়া দুটি গরু উদ্ধারের পর মালিককে ফিরিয়ে দিতে পুলিশের এক এসআই ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গরুর মালিক উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের ফজলু শেখের আত্মীয়রা বৃহস্পতিবার এ অভিযোগ করেন।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে উপজেলা সদরের বাওয়ার কুমারজানী গ্রামের ফজলু শেখের বাড়ির গোয়ালঘরের তালা ভেঙে একটি দেশি দুধেল গাভী ও একটি লাল রঙের বকনা বাছুর চুরি করে নিয়ে যায় চোরের দল। এ ঘটনায় গরুর মালিক ফজলু শেখ মির্জাপুর থানায় মামলা করেন।
এদিকে ঘটনার দিন গভীর রাতে পুলিশ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে উপজেলার জামুর্কী ইউনিয়নের কদিম ধল্ল্যা নামক স্থান থেকে চুরি হওয়া ওই দুই গরু জব্দ এবং জেলার কালিহাতি উপজেলার মালতী দক্ষিণপাড়া গ্রামের তোফাজ্জাল হোসেন তোতার ছেলে আল আমিনকে (৩৫) আটক করে। এ সময় চুরির গরু বহনকারী ট্রাকও জব্দ করা হয়। পরে ফজলু শেখ তার চুরি যাওয়া গরুর সঙ্গে উদ্ধারকৃত গরু মিল পান। এরপর আল আমিনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। উদ্ধার হওয়া গরু দুটির বাজার মূল্য আনুমানিক দুই লাখ টাকা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মির্জাপুর থানা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী হাসান উদ্ধারকৃত গরু বাছুরসহ ফেরত দিতে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় দুইজন বিএনপি নেতা ও ফজলু শেখের ভাগ্নে উজ্জ্বল সিকদারের সামনে এক বিএনপি নেতা তার ব্যক্তিগত ফোন দিয়ে এসআই আলী হাসানের সঙ্গে লাউড স্পিকারে কথা বলেন। এ সময় বাছুরসহ গাভী মালিককে ফিরিয়ে দিতে আলী হাসান ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। উজ্জ্বল সিকদার ওই বিএনপি নেতার মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। এ প্রস্তাব দেওয়ার পরও আলী হাসান রাজি হননি। তিনি বৃহস্পতিবার চোর আল আমিনকে টাঙ্গাইলের আদালতে হাজির করেন। তবে গাভীসহ বাছুর ফিরিয়ে দিতে ভুক্তভোগীদের কোনো সহায়তা করেননি।
উজ্জ্বল সিকদার জানান, তারা এসআই আলী হাসানকে গরু ফেরত দিতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি না দিয়ে ৫০ হাজার টাকা চান। তিনি টাকা দিলে থানা থেকে গরু দিবেন। না দিলে আদালত থেকে নিতে হবে বলে জানিয়েছিলেন।
তিনি জানান, লাউড স্পিকার দিয়ে ফোনে কথা বলার সময় আলী হাসান টাকা চেয়েছেন। তিনি সেখানে উপস্থিত থেকে টাকা চাওয়ার কথা শুনেছেন।
মুঠোফোনে বিএনপির ওই নেতা জানান, গাভী ফেরত দিতে এসআই ৫০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন। তারা ১০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। কিন্তু তিনি তা মানেননি।
ফজলু শেখের চাচাতো ভাই নাসির শেখ জানান, আদালতে গিয়ে কীভাবে গরু ফেরতের আবেদন করতে হবে এ বিষয়ে পুলিশ তাদের সহযোগিতা করেনি।
এসআই মোহাম্মদ আলী হাসান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “তাদের আদালত থেকে গরু নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “গরু ফেরত পেতে মালিকসহ আত্মীয়দের আদালতে আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কেউ টাকা চাইলে তার কাছে অভিযোগ করতে পারতেন।”
(ঢাকাটাইমস/০৯মে/এফএ)

মন্তব্য করুন