গাজায় ৪ দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে চারদিনের এ যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক আলজাজিরা।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির এই চার দিনে বন্দিমুক্তি ছাড়াও গাজায় বিপুল সংখ্যক ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করবে। এর মধ্যে শুক্রবারই ২০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে ১ লাখ ৪০ হাজার লিটার জ্বালানি এবং কমপক্ষে চার ট্রাক গ্যাসও থাকবে।
এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে। ১৩ জন জিম্মি সন্ধ্যায় মুক্তি পাবেন। এই সময়ের মধ্যে জিম্মিদের মধ্যে যারা একই পরিবারের তাদের একত্রিত করা হবে। ৪ দিনের মধ্যে ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার যে চুক্তি হয়েছে সেটি অনুযায়ী প্রতিদিন নতুন করে আরও বেসামরিক জিম্মিকে যুক্ত করা হবে।’
তিনি বলেন, হামাস-ইসরায়েলের মধ্যে দিনব্যাপী যে আলোচনা হয়েছে সেটি আজ সকালে কার্যকর হয়েছে। এতে যুক্ত ছিল মিসর এবং যুদ্ধের অন্যান্য পক্ষগুলো। আলোচনা ভালোভাবে হয়েছে এবং আলোচনার পরিবেশ ইতিবাচক ছিল। আলোচনার ফলাফল অবশ্যই ছিল যুদ্ধবিরতির চুক্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। আমরা সবসময় বলেছি এমন কিছু প্রয়োজনীয় যেটি বাস্তবসম্মত এবং জিম্মিদের মুক্তির ক্ষেত্রে একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করবে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘এই সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষ হয়ে যাওয়ার পরপরই ইসরায়েলের সশস্ত্রবাহিনী হামাসের বিরুদ্ধে আরও অন্তত দুই মাস তীব্র লড়াই চালিয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনে প্রথম যে বিষয়টি আপনার দেখবেন তা হলো- জিম্মিদের মুক্তি। তবে বিষয়টি নিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার সুযোগ নেই। এটি কেবলই সাময়িক বিরতি।’
এরআগে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে প্রথমবারের মতো সমঝোতায় যেতে রাজি হয় ইসরায়েল ও হামাস। বুধবার কাতারের মধ্যস্থতায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি ও বন্দি মুক্তিতে সম্মত হয় দুপক্ষ।
এদিকে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও গাজা জুড়ে হামলা করেছে ইসরায়েল।
গাজায় ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইন্দোনেশিয়ার হাসপাতালে ‘তীব্র বোমাবর্ষণ’ করা হয়েছে। বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারপর থেকেই গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গত দেড়মাস ধরে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১৪ হাজার ৮০০ জনে ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজারের বেশি শিশু ও নারী রয়েছেন। এছাড়া কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
(ঢাকাটাইমস/২৪নভেম্বর/এমআর)