সাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, ভোরে পরিণত হতে পারে নিম্নচাপে
বঙ্গোপসাগরের কোলে আবারও আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়। মঙ্গলবার লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার সুস্পষ্ট লঘুচাপ দেখা দিয়েছে। সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভোরে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। যদি নিম্নচাপে পরিণত হয় তবে পরবর্তী দুই দিনে ঘূর্ণিঝড়ও হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে গতকাল (মঙ্গলবার)। সুস্পষ্ট লঘুচাপ দেখা দিয়েছে আজ (বুধবার)। এটি আগামীকাল ভোরে বা সকালে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। যদি নিম্নচাপে পরিণত হয় তবে পরবর্তী দুই দিনে ঘূর্ণিঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুধবার সকালে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসেও বলা হয়েছে, লঘুচাপটি দক্ষিণ আন্দামান সাগর এলাকায় আছে এবং এটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে।
লঘুচাপটি নিম্নচাপে রূপান্তর হয়ে সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় হলে এর নাম মিচাহং হলেও মিয়ানমার এর নাম দিয়েছে ‘মিগজাউম’। ধারণা করা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ের জন্ম হলে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত ও মিয়ানমারও পড়বে এর কবলে। তবে এখনও ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি না হওয়ায় সুস্পষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না কোন উপকূলীয় এলাকায় এটি আঘাত হানতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘ বুধবার সন্ধ্যায় লঘুচাপটি ১৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করেছে। বাংলাদেশে আঘাত হানবে কি না তা এখনই বোঝা যাচ্ছে না। যখন লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তর নেবে তখন জানা যাবে।’
চলতি বছর দেশে মোখা, হামুন ও মিধিলি এই তিনটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে একটি লঘুচাপ ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় মিধিলিতে রূপান্তর নিয়েছিল। সেই মিধিলির রেশ কাটতে না কাটতেই একই মাসে আরও একটি ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ অক্টোবর ও নভেম্বর ‘ঘূর্ণিঝড়প্রবণ’ মাস হিসেবে পরিচিত।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক ঢাকা টাইমসকে বলেন, অক্টোবর ও নভেম্বর হলো সাইক্লোন পিরিয়ড (ঘূর্ণিঝড়প্রবণ মৌসুম)। তাই সাইক্লোন হতেও পারে।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি আবহাওয়া অধিদপ্তরও জানিয়েছে লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তর নিলে পূর্বের তিনটি ঘূর্ণিঝড়ের চেয়েও শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে সব ধরনের প্রস্তুতি রাখছে সরকার।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড় সাম্প্রতিক অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে শক্তিশালী হতে পারে।’
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) পরিচালক (প্রশাসন) আহমাদুল হক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘লঘুচাপটি গভীর নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এখন পর্যন্ত যে ধরনের নিদর্শন দেখা যাচ্ছে যদি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় তবে এটি বেশ শক্তিশালী হবে । বিভিন্ন মডেলও বলছে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। তাই মাঠ পর্যায়েও প্রস্তুতি রয়েছে।’
(ঢাকাটাইমস/২৯নভেম্বর/টিএ/কেএম)