ডলারের দাম কমেছে, হ্রাস পেয়েছে আমদানি ব্যয়ের চাপ

ব্যাংকিং খাতে ডলারের দাম কমতে শুরু করেছে। টানা দেড় সপ্তাহ ধরে প্রতি ডলারে গড়ে ৬০ পয়সা কমেছে। দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো মঙ্গলবার গড়ে প্রতি ডলার বিক্রি করেছে ১২২ টাকা ৪০ পয়সা করে, যা আগের সর্বোচ্চ মূল্য ১২৩ টাকা থেকে কম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার দিনের শুরুতে ডলারের দাম ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা। দুপুরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১২২ টাকা ৫৫ পয়সায়। দিন শেষে আবার তা নেমে আসে ১২২ টাকা ২৫ পয়সায়। দিনটিতে আন্তঃব্যাংক লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ১০ লাখ ডলার, যার গড় দর দাঁড়ায় ১২২ টাকা ৪০ পয়সা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির ফলে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে, যার ফলে ব্যাংকগুলোতে চাহিদা কিছুটা কমেছে। এ কারণেই দাম কমতে শুরু করেছে। এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকিও বড় ভূমিকা রেখেছে।
প্রসঙ্গত, গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে ডলারের মূল্য বাজারে ছেড়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে বাজারে ছেড়ে দেওয়ার পরও ডলার নিয়ে কোনো অস্থিরতা তৈরি হয়নি, কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর নজরদারিতে ছিল।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, সরকার পরিবর্তনের পর বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ অনেক বেড়েছে। একইসঙ্গে রপ্তানি আয়ে ধারাবাহিক উন্নতি দেখা যাচ্ছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোকে শুধুমাত্র আমদানি দায় পরিশোধ করতে হচ্ছে, কারণ অন্যান্য খাতে ঋণ পরিশোধের চাপ কমে এসেছে। এর ফলে ডলারের চাহিদা আরও কমেছে।
আরও এক ইতিবাচক দিক হলো—আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা ইত্যাদি উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণের অর্থ ছাড় পাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
বিশ্ববাজারেও ডলারের দাম পড়তির দিকে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানিতে বাড়তি শুল্ক আরোপ করায় আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের দর প্রায় ৯ শতাংশ কমেছে, যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের বাজারেও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ডলারের দাম কমায় টাকার মান কিছুটা বাড়ছে, ফলে অবমূল্যায়নজনিত মূল্যস্ফীতির চাপও কিছুটা হ্রাস পাচ্ছে—যা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির জন্য স্বস্তির বার্তা বয়ে আনছে।
(ঢাকাটাইমস/৯ জুলাই/আরজেড)

মন্তব্য করুন