গাজায় ইসরায়েলি হামলায় দুই জিম্মি নিহত

হামাস একটি নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে, যাতে দুই ইসরায়েলি জিম্মির লাশ দেখানো হয়েছে। তারা গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় মারা গেছে বলে দাবি করেছে হামাস।
জীবিত থাকা অবস্থায় জিম্মিদের আরেকটি ভিডিও প্রকাশ করার একদিন পর এই ভিডিও প্রকাশ হয়। ইসরাইল বোমাবর্ষণ অব্যাহত রাখলে তারা মারা যেতে পারে বলে সতর্ক করেছিল হামাস। খবর বিবিসির।
ইসরায়েল তাদের হামলায় নিহত হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হামাসের বিরুদ্ধে ‘মানসিক নির্যাতনের’ অভিযোগ করেছেন। তিনি আরও বলেন, আরও জিম্মি মুক্তির জন্য সামরিক চাপ অপরিহার্য।
সোমবার প্রকাশিত ভিডিওটিতে নোয়া আরগামানি নামে একজন মহিলাকে দেখা যাচ্ছে, যিনি জোর করে কথা বলছেন এবং বলছেন যাদের সঙ্গে তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে সেই যে দুই পুরুষকে হত্যা করা হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পুরুষরা, যাদের মধ্যে একজন ইতাই সভিরস্কি (৩৮), আমাদের নিজস্ব আইডিএফ হামলায় নিহত হয়েছে।’
‘হামলার পরে তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে ছিল, তবে হামাস যোদ্ধারা আমার জীবন বাঁচাতে সক্ষম হয়’- যোগ করেন নোয়া আরগামানি।
তবে ভিডিওটি কখন করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
জবাবে আইডিএফের মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, জিম্মিরা ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত হয়নি।’ তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এটা হামাসের মিথ্যাচার। যে বিল্ডিংটিতে তাদের রাখা হয়েছিল সেটি লক্ষ্য ছিল না।’
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, ‘হামাস ইসরায়েলি বাহিনী দ্বারা মারাত্মকভাবে মার খেয়েছে। তাদের জন্য যা বাকি আছে তা হলো (ইসরায়েলি) পরিবারের সদস্যদের মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে ইসরায়েলি সমাজের সংবেদনশীল স্নায়ুতে আঘাত করা।’
গ্যালান্ট ‘অব্যাহত সামরিক চাপের’ ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘তারা তখনই আমাদের সঙ্গে কথা বলে, যখন তারা কিছু চায়। যে মুহূর্তে আমরা তাদের বিনামূল্যে যুদ্ধবিরতি দেব, তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলবে না।’
রবিবার হামাসের প্রকাশিত ভিডিওটিতে ২৬ বছর বয়সী আরগামানিকে দেখা গেছে, জীবিত থাকা অবস্থায় দুজনের সঙ্গে। ভিডিওতে ইসরায়েলি সরকারকে তাদের আক্রমণ বন্ধ করতে এবং তাদের মুক্তির জন্য আহ্বান জানানো হয়।
সেই ফুটেজটি ‘আগামীকাল (সোমবার) আমরা তাদের ভাগ্য সম্পর্কে আপনাকে অবহিত করব’ এই ক্যাপশন দিয়ে শেষ হয়।
আরগামানি, সভিরস্কি এবং ভিডিওতে উল্লিখিত তৃতীয় জিম্মি ২৪০ জনের মধ্যে ছিলেন যাদের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের ধারাবাহিক অভিযানে তুলে নেওয়া হয়েছিল।
সেই হামলায় প্রায় ১৩০০ লোক, বিশেষ করে বেসামরিক লোকও নিহত হয়েছিল। গাজায় এখনও প্রায় ১৩২ জনকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজায় ইসরায়েলের তীব্র বোমাবর্ষণে এ পর্যন্ত ২৪ হাজারেরও বেশি লোককে হত্যা করেছে।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, গাজার জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গাজায় যখন আরও সাহায্য আসছে তখন জাতিসংঘের মানবিক সংস্থার প্রধান এই পরিস্থিতিকে অসহনীয় বলে বর্ণনা করেছেন।
ইসরায়েলি বাহিনী সোমবার গাজা উপত্যকা জুড়ে লক্ষ্যবস্তুতে বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে এবং দক্ষিণ ও কেন্দ্রীয় এলাকায় হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।
গ্যালান্ট বলেছেন যে দক্ষিণ গাজায় শীঘ্রই হামাসের বিরুদ্ধে অভিযানের নিবিড় পর্যায় শেষ হবে।
(ঢাকাটাইমস/১৬জানুয়ারি/এফএ)

মন্তব্য করুন