ভালোবাসার গায়ে ফাগুনের রঙ

​​​​​​​তানিয়া আক্তার, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০১

উত্তরের হিমেল হাওয়া শেষে প্রকৃতিতে বইছে দখিনা বাতাসজানান দিচ্ছে আজ বুধবার ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী দিন, পহেলা ফাল্গুনএই ফাল্গুনে ফুলের বনে দোলা লাগে, দোলা লাগে মনেওব্যাকুল হৃদয় বসন্ত দিনেই হারিয়ে যেতে চায়এরই মধ্যে বসন্তের প্রথম দিনেই নতুন মাত্রা যোগ করেছে ভালোবাসা দিবসএকই সুঁতোয় গাঁথা বসন্ত আর ভালোবাসায় আজ প্রস্ফুটিত হবে ভালোবাসার প্রসূন

বাঙালীর প্রাণে বসন্তের আবেদন আবহমান কাল থেকেষড়ঋতুর সর্বশেষ ঋতু বসন্তফাল্গুন ও চৈত্র মাস মিলে হয় বসন্তশীতের বিদায় বেলায় এবং গ্রীষ্মের আগে এর আগমনবহুবছর ধরে দিবসটি উদযাপিত হয় বহুভাবেমোঘল সম্রাট আকবর ১৫৮৫ সালে প্রবর্তন করেছিলেন বসন্ত উৎসবপ্রাচীন আমল থেকেই পালিত হওয়া বসন্ত উৎসব বাংলাদেশে উদযাপনের রীতি চালু হয় বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকেতবে বাংলা বর্ষপঞ্জি দফায় দফায় বদলে যায়গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী অনুযায়ী সাধারণত ফাল্গুন মাস ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতোসর্বশেষ ২০২০ সাল থেকে সরকারিভাবে ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখ থেকে শুরু হয় পহেলা ফাল্গুনবাঙালির নিজস্ব এই সার্বজনীন প্রাণের উৎসবটি এখন ব্যাপক সমাদৃতএছাড়াও বসন্তের দিনগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালীর গৌরবময় ঐতিহ্য১৯৫২ সালের আট ফাল্গুন বা একুশের পলাশরাঙা দিনে ভাষার জন্য বুকের রাজপথও রঞ্জিত হয়েছিল

বসন্ত বরণ বাঙালির অন্যতম সাংস্কৃতিক উৎসব হওয়ায় সব বয়সীরা মেতে উঠে আনন্দেবাহারি ফুলের ডালা সাজিয়ে বসন্তের আগমনে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদআয়োজন করে আসছে বসন্ত উৎসবদিনভর বর্ণাঢ্য র‌্যালি, সূচনা সংগীত, কবিতা আবৃত্তি, গানসহ নানা কর্মসূচি থাকেবাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশের বইমেলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, শাহবাগ, চারুকলা চত্বর, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ধানমণ্ডি লেক, বলধা গার্ডেনসহ নানা জায়গায় আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলোতে দিনভর তরুণতরুণীসহ সব বয়সীদের অংশগ্রহণে নব উদ্যমে জেগে উঠে প্রতিটি প্রাণ

এদিকে পশ্চিমা রীতির ভ্যালেন্টাইনস ডে বা ভালোবাসা দিবস পালিত হয় ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখবেশ কয়েক বছর ধরে দেশেও ঘটা করে উদযাপিত হয়ে আসছে দিবসটিগত কয়েকবছর ধরে ফাল্গুন দিনে ভালোবাসার রঙে মেতে ওঠে তরুণ প্রজন্মবাসন্তী শাড়িচুড়ি আর লাল পাঞ্জাবী পরে তরুণ তরুণীরা ঘুরে বেড়ায়মনের মানুষের কাছে প্রণয় নিবেদনে এমন দিনের জন্য ব্যকুল থাকে তারাএকসঙ্গে বেড়ানো, উপহার দেওয়া, খেতে যাওয়ার মতো আন্দময় মুহূর্তগুলো সারাজীবনের সঞ্চয় করে রাখতে চায় যুগলরাচিরপুরাতন আবেগ নতুন করে বহিঃপ্রকাশ করে এই দিনেভালোবাসতে চায়ভালোবাসা পেতে চায়তবে এই দিনটি শুধুই প্রিয়জনের জন্যই নয়পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গেও উদযাপিত হয় দিনটিবইমেলা প্রাঙ্গণও সব বয়সীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে

গ্রামীন জনপদেও কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে আগুনরাঙা ফাগুন আর বাতাসে শিমুলে মাদকতায় শুরু হয় নানা আয়োজনশাখায় শাখায় নতুন মুকুলের ঘ্রাণ আর পলাশশিমুলের মাদকতায় মাতাল হয় তরুণতরুণীরাখোঁপায় ফুল গুঁজে আর হাতভর্তি কাঁচের চুড়িতে প্রিয়জনের অপেক্ষায় থাকবে ষোড়শীবরের পাতে রঙ্গিন পিঠে দেবার অপেক্ষায় থাকবে বাঙালির বধুকোকিলের ডাকে আর নতুন পত্রপল্লবে প্রান্ত থেকে কেন্দ্রের সববয়সীরা ভালোবাসার রঙে মেতে ওঠুক বসন্ত বন্দনায়

(ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/কেএ/এসআইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :