দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির উদ্দেশ্যেই ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ পুলিশের ওপর চড়াও হয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির উদ্দেশ্যেই ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ পুলিশের ওপর চড়াও হয় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্টসহ পৃথিবীর ৭৮ দেশের সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ, ওআইসিসহ পৃথিবীর ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থার বর্তমান সরকারকে অভিনন্দন জানানো দেখে গণতন্ত্র মঞ্চ প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায়।’
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকার ২০২৪-২০২৫ মেয়াদের নতুন নির্বাহী পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চকে যে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তারা তার বাইরে গিয়ে বেআইনী ভাবে ব্যারিকেড অতিক্রমের সময় পুলিশ তাদের বারণ করে। তারা সেটি না মেনে পুলিশের একজন সদস্যকে ধরে ফেলে। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য হয়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ‘তাদের দলের নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় করা হচ্ছে’ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে হাছান বলেন, ‘বরং দেখা যাচ্ছে প্রতিদিন তাদের নেতা-কর্মীরা ছাড়া পাচ্ছে।’
এর আগে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকার নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানান চট্টগ্রাম-৭ আসন থেকে নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, ১১২ বছরের পুরনো ‘চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকা’ চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য ঢাকায় এজেন্ট এবং প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে। এতো দীর্ঘ সময় ধরে রাজনীতিমুক্ত এই সংগঠন চট্টগ্রামবাসীর মিলনমেলা এবং সব উন্নয়নমূলক সংগঠনের জন্য এক উদাহরণ।
দেশের সুষম উন্নয়নের জন্য প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণকে জরুরী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিভাগের উন্নয়নে বৃহৎ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরে ৮৫ লাখ মানুষ বসবাস করে। গত ১৫ বছরে চট্টগ্রাম বদলে গেছে। বহু বছর ধরে বলা হচ্ছিল বঙ্গবন্ধু টানেলের কথা। এটি যে বাস্তবায়ন হবে অনেকেই ভাবেনি। কিন্তু আজ সেটি দৃশ্যমান বাস্তবতা।’
সারাদেশের উন্নয়নকল্পেই চট্টগ্রামের উন্নয়ন এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় চট্টগ্রামের অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে হাছান বলেন, ‘এতো সুন্দর মেরিন ড্রাইভ হবে আমরা ভাবিনি, কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল হবে যা দক্ষিণ এশিয়ার কোথাও নেই- এটিও আমরা কেউ ভাবিনি। মঙ্গলবার ২৪ জন বিদেশি মিশন প্রধানসহ ৩৪ জন কূটনীতিক চট্টগ্রাম সফরে গিয়ে এগুলো দেখে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রামে মেট্টোরেল করবো। এখন সমীক্ষা চলছে। মূল শহরে এটি পাতালে হবে। শহরের বাইরে সেটি এলিভেটেড এক্সপ্রেস আকারে হবে। চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শিল্প এলাকা হবে দেশের সর্ববৃহৎ শিল্প এলাকা। এখানে ১৫ লাখ মানুষ কাজ করবে, আরো ২০ লাখ মানুষ জড়িত থাকবে।’
অচিরেই চট্টগ্রামে একটি প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেল চালু হবে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশ টেলিভিশনের চট্টগ্রাম শাখা ২৪ ঘণ্টা সম্প্রচার হচ্ছে। এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান। তিনি আমাকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন বলে আমি কাছ থেকে বিষয়টি দেখভাল করতে পেরেছিলাম।’
একইসাথে ‘পলিটিক্যাল ডিনাইয়াল’ বা সবকিছুতে না বলার অপসংস্কৃতি এবং অপরাজনীতি যদি না থাকতো তাহলে দেশের আরও উন্নতি হতো উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
চট্টগ্রাম সমিতি, ঢাকার ২০২৪-২০২৫ মেয়াদের নতুন নির্বাহী পরিষদের অভিষেক অনুষ্ঠানে ৪১ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কার্যনির্বাহী কমিটিতে সাবেক কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী সভাপতি এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার উজ্জ্বল মল্লিক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক অভিষেক কমিটির সদস্য সচিব মো. শাহাদাত হোসেন হিরোর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সমিতির নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক সচিব মমিনুর রশিদ আমিন, উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবদুল করিম ও সাবেক তথ্য সচিব দিদারুল আনোয়ার।
(ঢাকাটাইমস/২৮ফেব্রুয়ারি/এমএইচ/এসআইএস)

মন্তব্য করুন