আবাসন ব্যবসায় রাতারাতি কোটিপতি মোস্তাফিজ, অবশেষে প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার

রাজশাহী ব্যুরো, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৪, ১৯:৪০ | প্রকাশিত : ২৬ মার্চ ২০২৪, ১৪:৩০

‘গ্রিন প্লাজা রিয়েল এস্টেট কোম্পানি লিমিটেডের’ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোস্তাফিজুর রহমান। মাত্র বছর চারেক আগে পালিত বাবার পেনশনের জমানো ৯০ লাখ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে শুরু করেন এই আবাসন ব্যবসা। তবে এই ব্যবসায় নেই রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) অনুমোদন।

অনুমোদনহীন এই অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে প্রতারণা করে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে। তার জীবনযাপন দেখলে মনে হবে মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশের রাজপুত্র। চড়েন বিলাসবহুল হ্যারিয়ার গাড়িতে। রাজশাহী চেম্বার অব কমার্সের মতো প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের পদও বাগিয়ে নিয়েছিলেন একবার। অবশেষে আবাসন ব্যবসার নামে প্রতারণার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন রাজশাহীর গ্রীণ প্লাজা রিয়েল এ্যাস্টেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান।

মঙ্গলবার ভোরে রাজশাহী মহানগরীর হাউজিং ষ্টেট এলাকা থেকে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বোয়ালিয়া থানার ওসি হুমায়ুন কবির বলেন, ‘মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে অনেকগুলো প্রতারণা অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।’

সোমবার রাতে মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে বারো লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়। জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার এজাজুল হক নামের এক ব্যক্তি এ মামলাটি দায়ের করেন। এজাজুল হক অভিযোগ করেন তার নিকট একটি ফ্ল্যাট বিক্রি করে ১২ লাখ টাকা নেন মোস্তাফিজ। কিন্তু তিনি ওই ফ্লাটটি না দিয়ে উল্টো এজাজকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সমস্ত কাগজপত্র জোর করে কেড়ে নেন।

এদিকে পুলিশের আরেকটি সূত্র জানায়, মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে ৬৩ লাখ টাকা নিয়ে ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারণার অভিযোগে মোস্তাফিজের আরও একটি অভিযোগ দেয়া হয় বোয়ালিয়া থানায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক নারী সেই অভিযোগ দেন। তবে পুলিশকে মধ্যস্থতা করে তার নামে ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার জন্য মোস্তাফিজকে চাপ প্রয়োগ করতে অভিযোগটি দেন সেই নারী।

ওই নারীর অভিযোগ, ‘মহানগরীর ঘোড়ামারা এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ভবনে মোস্তাফিজ ৬৪ লাখ টাকা দাম ধরে তার নিকট বিক্রি করেন। এরই মধ্যে ওই নারী মোস্তাফিজকে ৬৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। কিন্তু এখন আরো ১১ লাখ টাকা বেশি দাবি করছেন মোস্তাফিজ। ওই টাকা না দিলে ওই নারীকে ফ্ল্যাটটি রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিচ্ছেন মোস্তাফিজ। ওই নারী এর আগে একবার রাজশাহীর সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। মেয়রের হস্তক্ষেপে তিনি ফ্ল্যাট বুঝে পেলেও তাকে রেজিস্ট্রি দেননি মোস্তাফিজ।’

প্রসঙ্গত, মাত্র ১০-১২ বছর আগেও রাজশাহীর একটি বেসরকারি কোম্পানির অফিস সহকারী ছিলেন মোস্তাফিজ। পড়াশোনার খরচ যোগাতে প্রয়াত এক ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ওই ব্যাংক কর্মকর্তাকে বাবা এবং তার স্ত্রী নাসরিন সুলতানাকে মা ডেকেছিলেন মোস্তাফিজ। তাদের নিকট থেকেও প্রতারণা করে প্রায় কোটি টাকা এবং ৩ কাঠার একটি জমি আবাসন ব্যবসার নাম করে লিখিয়ে নেন মোস্তাফিজ। এরপর থেকে মোস্তাফিজের উত্থান শুরু হয় রাজশাহী নগরীতে। একের পর এক প্রতারণা করে মাত্র পাঁচ সাত বছরের মাথায় সেই প্রতারক মোস্তাফিজ অন্তত ২০ কোটি টাকার মালিক হয়ে যান।

(ঢাকাটাইমস/২৬মার্চ/প্রতিনিধি/এসআইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :