গাইবান্ধায় কিশোর বন্ধুর হাতে সহপাঠী খুন!

গাইবান্ধা প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ২১:২১ | প্রকাশিত : ২০ এপ্রিল ২০২৪, ২০:৫৬
সেপটিক ট্যাংকে ফেলে হত্যা করা হয় বন্ধু সম্রাটকে

গাইবান্ধার সাঘাটায় অনলাইনে জুয়া খেলতে গিয়ে ক্যামেরা বন্ধকের জেরে সম্রাট (১৭) নামের এক বন্ধুকে খুন করেছে আরেক বন্ধু। পরিকল্পিতভাবে ঘুমের ট্যাবলেট মিশ্রিত কোমলপানীয় পান করিয়ে অজ্ঞান হলে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে হত্যা করা হয় সম্রাটকে।

শনিবার সন্ধ্যায় হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক।

এর আগে শুক্রবার দিনগত রাত ১ টার দিকে উপজেলার উপজেলার পশ্চিম বাটি গ্রামের এক পুলিশ সদস্যের বসত বাড়ির পিছনের সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে সাঘাটা থানা পুলিশ। গত ১৭ এপ্রিল ওই বন্ধুর বাড়িতে ক্যামেরা আনতে গিয়ে নিখোঁজ হয় কিশোর সম্রাট।

নিহত সম্রাট মুক্তিনগর ইউনিয়নের আফজাল হোসেনের ছেলে। এছাড়া অভিযুক্ত রিফাত (১৭) সাঘাটা উপজেলার পশ্চিম বাটি গ্রামের মিলন হাজারীর ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত সম্রাট এবং অভিযুক্ত রিফাত একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা দুজনে একই বিদ্যালয়ের একই ক্লাসের শিক্ষার্থীও। সম্প্রতি অনলাইন জুয়া খেলে টাকা খোয়ান (হারেন) সম্রাট।

টাকা হেরে সম্রাট তার ক্যামেরা বন্ধু রিফাতের কাছে দশ হাজার টাকায় বন্ধক রাখেন। তার কয়েকদিন পরে বন্ধু রিফাতের কাছে ক্যামেরা ফেরত নিতে যান সম্রাট। কিন্তু এ সময় সম্রাট জানতে পারেন রিফাত অনলাইন জুয়ায় টাকা হেরে বন্ধক নেওয়া ক্যামেরা বগুড়ায় ১৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। পরে এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।

এর জেরে গত ১৭ এপ্রিল পরিকল্পিতভাবে সম্রাটকে ক্যামেরা নিতে নিজ বাড়িতে ডাকেন রিফাত। একইদিন বিকালে সম্রাট বন্ধু রিফাতের বাড়িতে ক্যামেরা নিতে এসে নিখোঁজ হয়। পরে অনেক খোঁজাখুঁজির করেও সন্তানকে না পেয়ে পর দিন ১৮ এপ্রিল নিখোঁজ সন্তানের সন্ধান চেয়ে সাঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে সম্রাটের পরিবার।

জিডিতে তারা রিফাতের ডাকে সম্রাট বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি বলে উল্লেখ করেন। পরে শুক্রবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিফাতকে আটক করে সাঘাটা থানা পুলিশ।

আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বন্ধু সম্রাটকে খুন করে সেপটিক ট্যাংকে গুম করে রাখার কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত রিফাত।

পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন রাত ১টার দিকে পশ্চিম বাটী গ্রামের এক পুলিশ সদস্যের বসত বাড়ির পিছনের সেপটিক ট্যাংক থেকে নিহত সম্রাটের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গাইবান্ধার সহকারী পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘অভিযুক্ত রিফাত পরিকল্পিতভাবে তার বন্ধু সম্রাটকে কোমলপানীয়র সাথে ৭/৮ টি ঘুমের ট্যাবলেট মিশ্রিত পানি পান করায়। যা খেয়ে খুব দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ে সম্রাট। পরে ঘুমন্ত সম্রাটকে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে হত্যা করা হয়। যা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিফাত পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। বন্ধক রাখা ক্যামেরা বিক্রি করা নিয়ে দুই বন্ধুর দ্বন্দ্বের জেরে এক বন্ধু অপর বন্ধুকে হত্যা করে বলে জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। অভিযুক্ত রিফাতকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২০এপ্রিল/প্রতিনিধি/এসআইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :