তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরি কেন জাতীয় জাদুঘরে নেই, প্রশ্ন ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর

জাতীয় নেতা, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরির পাণ্ডুলিপি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে কেন নেই- এই প্রশ্ন তুলেছেন লেখক, অর্থনীতিবিদ ফয়জুল লতিফ চৌধুরী।
শুক্রবার নিজের ফেসবুক পেইজে এক পোস্টে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।
ফয়জুল লতিফ চৌধুরী সাবেক কূটনীতিক ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সাবেক পরিচালক।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “জাদুঘরে ২০১৪ সালে যোগদানের পর লক্ষ্য করি নিদর্শন সংগ্রহ, বিশেষ করে, সমকালীন নিদর্শন সংগ্রহের জন্য উদ্যোগ নেই। কোনো ব্যক্তি উদ্যোগী হয়ে দান করলে সেটা নেওয়া হয় মাত্র। ২০১৫ সালের শুরুতে বার্ষিক এক হাজার নিদর্শন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ শুরু করি।”
তিনি বলেন, “তাজউদ্দীন আহমদ বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে যুদ্ধ করে তিনি প্রবাসী সরকারকে টিকিয়ে রেখেছিলেন। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে প্রত্যাবর্তনের পর শেখ মুজিব রাষ্ট্রপতির পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আবদার করেন। তাজউদ্দীন আহমেদ সে আবদার রক্ষা করেন। ১৯৭৪ সালের ২৬ অক্টোবর শেখ মুজিব মন্ত্রিসভা থেকে তাজউদ্দীন আহমেদ বহিষ্কার করেন। কী দুঃখ! কী লজ্জা!”
পোস্টে আরও যা লিখেছেন ফয়জুল লতিফ চৌধুরী জাদুঘরে পুরোনো অনেক পুঁথি আছে কিন্তু সমকালীন লেখকদের পাণ্ডুলিপি নেই। অনুরোধক্রমে হাসান আজিজুল হক সর্বপ্রথম একটি পাণ্ডুলিপি দান করেন। ততদিনে তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা শারমিন আহমদ রচিত ‘তাজউদ্দীন আহমদ : নেতা ও পিতা’ প্রকাশিত হয়ে হৈচৈ ফেলে দিয়েছে। খণ্ডে খণ্ডে প্রকাশিত হচ্ছে তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরি।
তখন সংস্কৃতি বিষয়ক সংসদীয় পর্ষদের সভানেত্রী তাজউদ্দীন আহমদের আরেক কন্যা সিমিন হোসেন রিমি। ২০১৭ সালে একদিন সংসদীয় পর্ষদের সভা শেষে তাঁকে অনুরোধ করি, ‘তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরির পাণ্ডুলিপি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে দান করুন। আমরা সযত্নে সংরক্ষণ করব ও ডিসপ্লে করতে চাই।’
সিমিন হোসেন রিমি খুব মিষ্টি করে হেসে বললেন, ‘ডিজি সাহেব, তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরির পাণ্ডুলিপি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরেই থাকা উচিৎ। কিন্তু আপনারা তা রাখতে পারবেন না। নিয়ে যাওয়া হবে।’
এ কথার ওপর আর কথা চলে না। অসহায় দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কেবল বলতে পারলাম, ‘বুঝতে পেরেছি ম্যাডাম।’
(ঢাকাটাইমস/১৬আগস্ট/এফএ)

মন্তব্য করুন