কম্বোডিয়া: দেখার আছে অনেক কিছু- ৪র্থ পর্ব

রেজাউল মাসুদ
  প্রকাশিত : ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪২
অ- অ+

পারিবারিক ভ্রমণ কিংবা হানিমুনের জন্য অনেকেই থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামে ভ্রমণ করেন। কিন্তু ভ্রমণ মৌসুমে এসব দেশে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় এবং যাতায়াত খরচ বেড়ে যায় বহুগুণে। এক্ষেত্রে এরকম কয়েকটা দেশের স্বাদ এক জায়গায় পেতে এবং নিরিবিলি ভ্রমণের জন্য কম্বোডিয়া হতে পারে সেরা পছন্দের ডেস্টিনেশন। পর্যটন নির্ভর এবং নিরাপত্তার দিক থেকে ভ্রমণার্থীরা এখানে দারুন স্বস্তি নিয়ে সর্বত্র চলাফেরা করে। তাই আমাদের এবারকার গন্তব্য ছিল দেখার মত সুন্দর একটি দেশ কম্বোডিয়া।

কম্বোডিয়ার দ্বিতীয় দিনে বের হয়েই চলে যাই লাওস এম্বাসি। হোটেল থেকে বের হতে না হতেই এত টুকটুক ড্রাইভার! আপনি কোথায় যাবেন এই প্রশ্ন !! আরেক ড্রাইভার বলে আপনার অ্যাপ যত ভাড়া আসে সেই ভাড়া দিয়েন। দেখলাম ২১ হাজার রিল আছে অর্থাৎ ৫ ডলার ভাড়া। সে এতে রাজি হয়ে যায়। আমরা তাদের সাথে দরাদরি করে নিই। ৩/৪ ডলারে ভাড়ায় টূক্টূক পাওয়া যায়। আমরা দশ মিনিটের মধ্যেই লাওস এমব্যাসিতে চলে আসি। লাওসে যেতে হলে রাজুর ভিসা লাগবে, আমাদের না। ব্যাংককে লাওসের ভিসা পেতে অনেক কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়। আমাদেরকে অনেকেই বলল কম্বোডিয়া থেকে খুব সহজেই ভিসা পাওয়া যায়। সঠিক পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় সাপোর্ট দিতে নমপ্যানে বসবাসরত ইকবাল ভাই তার প্রাডো নিয়ে দ্রুত এম্বাসিতে চলে আসে।

আমরা এম্বাসির কাজ শেষ করে জাদুঘর দেখে বিকেলে রাজমহল ঘুরেছি। তবে জাদুঘরে না যাওয়াই ভালো হুদা ডলার নষ্ট । ১০ ডলার লাগে এনট্রি ফি বাবদ। তবে রাজমহল ভালো লেগেছে সেটার জন্যও ১০ ডলার । রাজ মহলে সিল্ভার প্যাগোডা দেখে মনটা জুড়িয়ে গেল আমাদের। ইকবাল ভাই আমাদেরকে অনেক জায়গায় ঘুরে ঘুরে দেখালো, আবার দারুণ এক কম্বোডিয়ান রেস্টুরেন্ট লাঞ্চও করালো। সারাদিন রাজধানী শহরের নানান জায়গায় ঘুরে রাতে গেলাম নাইট মার্কেটে । এর আগে গেলাম সেন্ট্রাল মার্কেট ও অনেক গুলো ওয়াট টেম্পল দেখতে।

সে এক বিস্মৃত ইতিহাস। ইকবাল ভাই, ইতিহাস সম্পর্কে তার অনেক ধারণা, তিনি বলতেছিলেন নবম শতাব্দীর প্রথমভাগে বর্তমানের কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের অংশবিশেষ নিয়ে খেমার সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল। তাই ঐতিহাসিক কারণেই এ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের মধ্যে ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, বর্ণ ও মননে অনেক মিল লক্ষ করা যায়। এ সাম্রাজ্যের রাজধানীর নাম ছিল অ্যাংকর, যা বর্তমানে কম্বোডিয়ার অন্তর্গত। এর স্থিতিকাল ছিল নবম থেকে পঞ্চদশ শতাব্দী পর্যন্ত। এ সময় সাম্রাজ্য তার শৌর্য-বীর্য ও উন্নতির সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে ছিল। আবিষ্কৃত বহু প্রাচীন স্থাপনায় তার প্রমাণ মেলে। পৃথিবীর প্রাচীন সপ্তম আশ্চর্যের একটি এখানে রয়েছে-তা হলো হিন্দু-বৌদ্ধ মন্দির ‘অ্যাংকর ওয়াট’ বা সিটি টেম্পল।

ফোনে খায়ের ভাইয়ের ভাইয়ের আকুতি , "আপনারা কম্বোডিয়ায় এসেছেন অথচ অ্যাংকর ওয়াট দেখবেন না তা কি হয়! পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম এটি একটি! আন্টার্টিকা থেকেও মানুষজন এটি দেখতে আসে।" সিয়াম রিপ কম্বোডিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। রাজধানী থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে অ্যাংকর ওয়াটের অবস্থান সেখানে। নেটে সার্চ দিয়ে এর বিশালত্ব দেখে পুলকিত হয়ে উঠলাম! এত বড় সুযোগ হাতছাড়া করে কেউ! আমরা সিদ্ধান্ত নেই বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় স্মৃতিসৌধ অ্যাংকর ওয়াটে যাওয়ার।

চলবে...

লেখক: পুলিশ কর্মকর্তা

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
কলকাতায় হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার
তিন সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতিতে সরকারের সংশ্লিষ্টতা? যা বললেন উপদেষ্টা ফারুকী
ভেষজ ঔষধি ঢেঁড়স ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়
গরমে স্বাস্থ্য রক্ষায় কোন পাত্রে কতটুকু পানি পান করা নিরাপদ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা