সাভারে পুলিশ কর্মকর্তা কাফী-শাহিদুলের নেতৃত্বেই চলে তাণ্ডবলীলা

৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে পুলিশ গুলি ছুঁড়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যাসহ আন্দোলনের সূচনা থেকে এ পর্যন্ত সাভারে মারা গেছেন ছাত্রছাত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন কয়েক শতাধিক। যাদের অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। এ সকল হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি স্থানীয় বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীসহ আন্দোলনে অংশ নেওয়া লোকজনের বাড়িতে ঢুকে চলতো ভাঙচুর ও লুটপাট।
এ সব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ (সুপার-ক্রাইম এন্ড অপস) ও ট্র্যাফিক (সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) আব্দুল্লাহিল কাফী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
তবে তাদের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের অস্ত্রধারী নেতাকর্মীরাও থাকতেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এ কারণেই আন্দোলন চলাকালে বিক্ষুব্ধ জনতা সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের তিনটি থানায় ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এসময় প্রাণ হারায় পুলিশের একাধিক সদস্য।
যেভাবে অশান্ত হয়ে উঠল সাভার:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে গত ১৮ জুলাই শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে সাভারে যোগ দেন কয়েক হাজার সাধারণ শিক্ষার্থী। সেদিন শিক্ষার্থীদের এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা অবৈধ অস্ত্র হাতে নির্বিচারে গুলি চালায়। এসময় তাদের পাশেই ছিলেন পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
সেদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যায় পুলিশের এপিসির উপরে ছররা গুলি খেয়ে পড়ে আছেন মিরপুরের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) মেধাবী শিক্ষার্থী শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন। সেই এপিসির পাশেই আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী।
আন্দোলন মোকাবেলা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার বিষয়ে সেদিন আব্দুল্লাহীল কাফী ও শাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ যথাযথ দায়িত্ব পালন না করে শিক্ষার্থীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায় পাশাপাশি ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরাও হামলা চালায় নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের উপর। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সদস্যরা সেদিন প্রকাশ্যে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের উপর গুলি করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। মূলত শাইখ আশহাবুল ইয়ামিনের মৃত্যুর পর থেকেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সাভারের সর্বস্তরের জনতা।
নিহত ইয়ামিনের বাবা মো. মহিউদ্দিন বলেন, 'গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরেও আমার ছেলে জীবিত ছিল। কিন্তু পুলিশ আমার ছেলেকে চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে এভাবেই তাদের সাঁজোয়া জানের উপর রেখে ঘুরে বেড়িয়েছে। এক পর্যায়ে আমার ছেলেকে নির্মমভাবে গাড়ির উপর থেকে রাস্তায় ফেলে টেনে হিঁচড়ে রোড ডিভাইডারের উপর দিয়ে অন্যপাশে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। একজন জীবন্ত মানুষকে এভাবে কোনো মানুষ নিচে ফেলে দিতে পারে না। আমি কারও কাছে বিচার চাই না। কারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে সেটি দিবালোকের মতো স্পষ্ট। এখন সরকার যদি চায় তাহলে তাদের বিচার করবে। তবে আমি কারও কাছে বিচার চাই না। আমি একটা জিডিও করিনি। ছেলের লাশের পোস্টমর্টেম করাইনি। শুধু আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি। সবাই দোয়া করবেন, আমরা যেন ধৈর্য ধরতে পারি।'
বিএনপি নেতাদের বাড়িতে হামলার নেতৃত্বে পুলিশ:
মৃত্যুর এক বছর ৭ মাস ১১ দিন পর বাস পোড়ানোর নাশকতার মামলায় আসামি করা হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (জাকসু) সাবেক সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও আশুলিয়া থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজগর হোসেনকে। আর এতেই বিতর্কের মুখে পড়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ।
এছাড়া বিএনপি-জামায়াত নেতাদের বাড়ি বাড়ি অভিযানের নামে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
সাভার পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাভার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুর রহমান উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১৫ জুলাই পাড়ি জমান থাইল্যান্ডে। অথচ তিনি নিজে উপস্থিত থেকে গাড়ি পুড়িয়েছেন ভাঙচুর করেছেন, এমন অভিযোগে শুধু সাভার মডেল থানাতেই ৫টি নাশকতার মামলায় আসামি করা হয় তাকে। পরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয় তার বাড়িতে।
এ বিষয়ে কাউন্সিলর আব্দুর রহমানের স্ত্রী দিলরুবা রহমান রুমি জানান, পুলিশের লাঞ্ছনার হাত থেকে রেহাই পেতে আমি দুই সন্তান নিয়ে বাসা ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাই। প্রতিবেশীদের সিসি ক্যামেরার দৃশ্য মতে ২২ জুলাই রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ আমার পৌরসভার মজিদপুর এলাকার বাসায় গিয়ে তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে প্রথমেই ভেঙ্গে দেয় সিসি ক্যামেরার ডিভিআর। চূর্ণ বিচূর্ণ করা হয় চারপাশের গ্লাস, টিভি, আলমারি, ওভেন, আসবাবপত্র ও সন্তানদের দুটি ল্যাপটপ। আলমারি ভেঙ্গে লুট করে নগদ ৪০ হাজার টাকা ও ৫০ ভরির মতো স্বর্ণালংকার।
একই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে সাবেক সহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (সম্প্রসারণ) শহিদুল্লাহ কাউসার বলেন, আমার বড় মেয়ে কাউসার হাবিবার স্বামী ঢাকা জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর খোরশেদ আলম। বিএনপির রাজনীতি করার অপরাধে গত ২১ জুলাই বেলা ৩টার দিকে পুলিশের গাড়ি বহর আসে আমাদের মহল্লায়। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা আমার সি ৯/৭ বাড্ডা ছায়াবিথীর বাসায় ঢুকে ৪ থেকে ৫ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। নিচ তলা, ওপর তলার সব জানালার কাচ, প্রাইভেট কার, ভাড়াটিয়াদের ৫টি মোটরসাইকেল, দুটি ফ্রিজ, তিনটি এসি, টিভি, আসবাবপত্র ভেঙে তছনছ করে। লুটপাট করে ব্যাংক থেকে ওঠানো ব্যবসার জন্য রাখা নগদ ২৯ লাখ টাকা। গাড়ি বিক্রির ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। দোকান ভাড়ার ৫০ হাজার ৮০০ টাকাসহ দুটি স্বর্ণের চেইন, ৫টি মোবাইল। নিচ তলা, ওপর তলার হাই কমোড, বেসিন, পানির কল কিছুই অক্ষত রাখেনি। কার কাছে বিচার দেব। আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নেই। তবে বলতে পারেন ৫ আগস্ট আমরা বিচার পেয়েছি।
বিএনপি নেতা ও সাভার সিটি সেন্টারের দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ওবায়দুর রহমান অভি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন ১৮ জুলাই। অথচ নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলায় তিনি নিজে উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, গাড়ি পুড়িয়েছেন মর্মে তাকে সাভার মডেল থানার একাধিক মামলায় আসামি করা হয়।
ওবায়দুর রহমান অভি বলেন, আবদুল্লাহিল কাফী ও শহিদুল ইসলাম বাড়ি বাড়ি যান আর ভাঙচুর করেন। তার ভয় দেখিয়ে জাহিদ হোসেন জুয়েল নামের এক সোর্স আমার পরিবার থেকে ৫ লাখ টাকা নেন। অথচ টাকা দিয়েও আমার বাড়ি রক্ষা হয়নি।
অভির স্ত্রী মাসুমা আক্তার জানান, পুলিশের ভয়ে আমরা নিরাপদে চলে যাই। অথচ অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে ২৩ জুলাই রাতে সাভার সিটি সেন্টারের ১১ তলায় আমার বাসার তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মূল্যবান ঝাড়বাতি, জানালার গ্লাস, টেবিলের গ্লাস, চারটি টেলিভিশন ও ফ্রিজ ভেঙে তছনছ করে। লুটপাট করে বাড়িটি খোলা রেখেই চলে যায়। এ ধ্বংসাবশেষ দেখে আমার দুই কন্যা ও শিশুপুত্র এখনও ভয়ে শিউরে ওঠে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও সাভারের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশের তাণ্ডবের এমন অসংখ্য উদাহরণের সাক্ষ্য দিচ্ছে তাদের বাসা-বাড়িগুলো। জনগণের বন্ধুর পরিবর্তে এমন ডাকাত তৈরি করলে মানুষ কতটা ফুঁসে ওঠে তার প্রমাণ মানুষ দেখেছে ৫ আগস্ট’। এসব ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি আমি।
রেহাই পায়নি সাংবাদিকরাও:
৫ আগস্ট সকালে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ছোঁড়া বুলেটে আহত হন সাংবাদিক সৈয়দ হাসিবুন নবী ও খোকা মোহাম্মদ চৌধুরী।
ওইদিন বিকালে সাভার প্রেসক্লাবের পিওন মনঞ্জয়কে কাছ থেকে গুলি করায় তার ডান হাতটি কেটে ফেলতে হয়েছে। এছাড়া ২১ জুলাই পুলিশের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয় সাভারের স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক ফুলকির অফিস।
এর আগে ১৭ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আব্দুল্লাহিল কাফির উপস্থিতিতে সাভার ট্র্যাফিক বিভাগের অ্যাডমিন হোসেন শহিদ চৌধুরীসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বেদম মারধর করে।
আহত সাংবাদিক সৈয়দ হাবিবুন নবী বলেন, 'গত ৫ তারিখে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাভার সার্কেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিদুল ইসলামের নির্দেশে আমার উপর গুলি চালানো হয়। এসময় আমি চিৎকার করে বলি আমি একজন সাংবাদিক এবং আমার পরিচয় পত্র ও হাতে থাকা মাইক্রোফোনটি তাদের দেখাতে থাকি। কিন্তু তার পরেও তারা আমাকে কাছ থেকে গুলি করে। এতে আমার সারাদেহে অসংখ্য গুলি লাগে। ডান চোখ গুলিতে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এখনো আমি সেই চোখে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাইনি।'
সাভার প্রেসক্লাবের পিওন মঞ্জয় মল্লিক (১৮) বলেন, 'আন্দোলনকারীরা ওই দিন প্রেসক্লাবে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমি ভয়ে ক্লাব থেকে বের হয়ে থানার দিকে দৌড়াতে থাকি। এ সময় একটি গলির ভেতরে ঢোকার পর পুলিশের এক কনস্টেবল বন্দুক তাক করে আমার দিকে আসেন। আমি পরিচয় দেওয়ার পর ওই পুলিশ গুলি না করে আমাকে গলি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ দেন। কিন্তু গলি থেকে বের হয়ে সামনের দিকে এগোতেই পেছন থেকে তিনি আমাকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। গুলি এসে লাগে আমার ডান হাতের কনুইয়ের নিচে। গুলি লাগার এক-দেড়ঘণ্টা পর লোকজন আমাকে উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। ওই দিনই চিকিৎসকেরা আমার হাত কেটে ফেলেন।'
সাভার প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক ফুলকির সম্পাদক নাজমুস সাকিব বলেন, 'সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইতে পুলিশ সুপার ও আওয়ামী লীগের অন্যতম দোসর আবদুল্লাহিল কাফির নির্দেশে ছাত্রজনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য মানুষ হত্যা করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন অনেকেই। এই কাফির নেতৃত্বেই দৈনিক ফুলকির অফিস ভাঙচুর এবং লুটপাট করা হয়েছে। অবিলম্বে একটি গণতদন্ত কমিশন গঠন করে কাফিসহ দায়ী পুলিশদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে দেশবাসীর কাছে পুলিশ প্রশাসনের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার আহ্বান জানাচ্ছি।'
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী ও পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানের মুঠোফোনে ঢাকা টাইমসের পক্ষ থেকে একাধিকবার কল করলেও তাদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দোহাই দিয়ে অভিযোগের বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।
(ঢাকাটাইমস/১৬আগস্ট/পিএস)

মন্তব্য করুন