আলো স্বল্পতায় বন্ধ রয়েছে খেলা

রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনে দুর্দান্ত খেলে পাকিস্তানকে ১৭২ রানে অলআউট করেছে বাংলাদেশ। যার ফলে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ১৮৫ রান। ১৮৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ৭ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪২ রান তোলে টাইগাররা। কিন্তু এরপরে আলো স্বল্পতার কারণে খেলা আর চালিয়ে যাওয়া আর সম্ভব হয়নি। আপাতত বন্ধ রয়েছে খেলা।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন সাদমান ইসলাম ও জাকির হাসান। শুরু থেকেই দেখেশুনেই খেলতে থাকেন এই দুই ব্যাটার। ৬ ওভারে ৩৬ রান করে চা বিরতিতে যান এই দুই ওপেনার।
চি বিরতি থেকে ফিরে আর মাত্র এক ওভারই খেলা হয়। এরপরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় খেলা। কেননা রাওয়ালপিন্ডির আকাশে ঘনকালো মেঘ, জ্বালানো হয়েছে স্টেডিয়ামের সব কটি ফ্লাডলাইট। তবে ম্যাচ–উপযোগী আলো নেই বলে খেলা বন্ধ করেছেন আম্পায়াররা। এরই মধ্যে মাঠকর্মীরা পিচ ঢেকে দিয়েছেন। যে কোনো মুহূর্তে বৃষ্টি নামার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে রাওয়ালপিন্ডিতে গতকালের (রবিবার) দুই উইকেটে ৯ রান নিয়ে আজ চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছিল পাকিস্তান। পাকিস্তানের হয়ে মাঠে নামেন আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটার সাইম আইয়ুব আর তার সঙ্গে ক্রিজে নামেন শান মাসুদ।
এই দুই ব্যাটারই দেখেশুনে খেলতে থাকেন। ক্রমেই বাংলাদেশের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠছিল এই জুটি। অবশেষে এই জুটিকে থামিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দিলেন তাসকিন। তাসকিনের বলে মিড অফে শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে গেলেন সাইম আইয়ুব। আউট হওয়ার আগে করেন ৩৫ বলে ২০ রান। তার বিদায়ে ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
সাইম আইয়ুবের বিদায়ের পর বাবর আজমের সঙ্গে জুটি বাঁধেন শান মাসুদ। তবে এই জুটিক বেশিদূর এগোতে দেননি নাহিদ রানা। চতুর্থ দিনে বোলিংয়ে এসেই নিজের প্রথম ওভারেই তিনি তুলে নিলেন উইকেট। নাহিদ রানার বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে গেলেন শান মাসুদ। তার বিদায়ে ৬২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান।
দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে সাজঘরে ফিরে যান বাবর আজম। তাকেও ফেরান নাহিদ রানা। নাহিদ রানার বলে প্রথম স্লিপে সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান বাবর। বাবরের বিদায়ে মাত্র ৬৫ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে পাকিস্তান।
বাবরের বিদায়ের পর একই ওভারে নাহিদের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যেতে পারতেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তবে নাহিদের বলে ক্যাচ তালুবন্দী করতে ব্যর্থ হন সাদমান। যার ফলে জীবন পান রিজওয়ান।
তবে রিজওয়ানকে না পারলেও নিজের তৃতীয় ওভারে সৌদ শাকিলকে ফিরিয়ে টানা তিন ওভারেই উইকেট নিলেন নাহিদ রানা। নাহিদ রানার বলে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন শাকিল। তার বিদায়ে ৮১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে স্বাগতিকরা।
৮১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়া পাকিস্তান দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন জীবন পাওয়া রিজওয়ান। আগা সালমানকে সঙ্গে নিয়ে লাঞ্চ বিরতির আগের সময়টুকু নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন তিনি। লাঞ্চ বিরতির আগে আর কোনো বিপদ হয়নি পাকিস্তানের। যার ফলে ৬ উইকেটে ১১৭ রান করে লাঞ্চ বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।
বিরতি থেকে ফিরে আগা সালমানকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। প্রথম টেস্টেও বাংলাদেশকে ভুগিয়েছিলেন তিনি। তবে আজ ভয়ঙ্কর ওঠার আগেই তাকে থামালেন হাসান মাহমুদ। হাসান মাহমুদের বলে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান ৭৩ বলে ৪৩ রান করা রিজওয়ান। তার বিদায়ে ভাঙে ৫৫ রানের জুটি।
রিজওয়ানের বিদায়ের পরের বলেই মোহাম্মদ আলিকে ফেরান হাসান মাহমুদ। হাসান মাহমুদের বলে স্লিপে শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে শূন্য রানেই সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তার বিদায়ে ১৩৬ রানে ৮ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
হাসান মাহমুদের জোড়া আঘাতের পর পাকিস্তান শিবিরে আঘাত হানেন আরেক পেসার নাহিদ রানা। আবরার আহমেদকে ফিরিয়ে নিজের চতুর্থ উইকেট শিকার করেন তিনি। নাহিদ রানার বলে স্লিপে শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান আবরার আহমেদ। আউট হওয়ার আগে করেন ১২ বলে ২ রান।
আবরার আহমেদের বিদায়ের পর মির হামযাকে নিয়ে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চড়াও হতে থাকেন আগা সালমান। শেষ উইকেটে তারা গড়লেন ২৭ রানের জুটি। তাতেই বাংলাদেশের সামনে টার্গেট হয় ১৮৫। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন সালমান আগা।
(ঢাকাটাইমস/০২সেপ্টেম্বর/এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন