শরীয়তপুরে মুরগি নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ১

শরীয়তপুরের জাজিরায় মুরগি নিয়ে তুচ্ছ বিরোধের জেরে নজরুল মাদবর (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় নিহতের বাবা লতিফ মাদবর এবং ছোট ভাই সুমন মাদবর আহত হয়েছেন।
শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নজরুল মাদবর মারা যান।
এর আগে, শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে জাজিরা পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম আড়াচন্ডি গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নজরুল মাদবরের বাড়ির মুরগির বাচ্চা প্রতিবেশী বোরহান মাদবরের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। এসময় বোরহান মাদবরের সাথে স্থানীয় আবু সালাম মাদবর, জলিল মাদবর, রাজন মাদবর ও মনু মাদবর ধারালো অস্ত্র নিয়ে নজরুল মাদবরের উপর হামলা চালায়। এসময় লতিফ মাদবর ও ভাই সুমন ছাড়াতে গেলে নজরুলসহ তারা গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে নজরুল মাদবর ও সুমন মাদবরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয় এবং লতিফ মাদবরকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রাখা হয়। শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত নজরুল মাদবরের মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী কল্পনা আক্তার বলেন, ‘আমাদের মুরগির বাচ্চা বোরহান মাদবরের বাড়িতে যায়। পরে বোরহান মাদবর আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে কয়েকজনে মিলে গালি দেয়। তার প্রতিবাদ করার কারণে আমার স্বামীর ওপর তারা ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখন আমি আমার স্বামীকে বাঁচাতে গেলে ওরা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর আমার দেবর ও শ্বশুর এগিয়ে গেলে তাদেরকেও এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তারা আমার স্বামীকে খুন করেছে, আমি ফাঁসি চাই।’
নিহতের মেজোভাই জসিম মাদবর বলেন, ‘আমি আমার অটোভ্যান নিয়ে কাজের যাওয়ার সময় শুনতে পাই। বোরহান মাদবরের সাথে আমার বড়ভাই নজরুল মাদবরের সাথে বাকবিতণ্ডা হচ্ছে। একপর্যায়ে আমাদের সাথে দীর্ঘদিন জমি সংক্রান্ত বিরোধের প্রতিপক্ষ হক মাদবরের ছেলেরা এসে বোরহান মাদবরের সাথে মিলে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমার ভাইয়ের ওপর হামলা চালায়। এসময় আমার ছোট ভাই ও বাবা এগিয়ে গেলে তাদেরকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের সঠিক বিচার চাই।’
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-আমিন বলেন, ‘মুরগী নিয়ে বিবাদের জেরে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে নজরুল মাদবর, সুমন মাদবর ও তাদের বাবা লতিফ মাদবর আহত হন। পরে তাদের জাজিরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে নজরুল ও তার ভাই সুমন মাদবরের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাজনক অবস্থায় মারা যান। এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন। আমরা যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
(ঢাকা টাইমস/১৬নভেম্বর/এসএ)

মন্তব্য করুন