মসজিদের নিচে আর মন্দির খোঁজা চলবে না, এ কার হুঁশিয়ারি ভারতে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৪| আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:০৪
অ- অ+
ভারতের উত্তরপ্রদেশে মুঘল আমলে নির্মিত সামভাল শাহী জামে মসজিদকে ঘিরেও ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে

ভারতে মসজিদের নিচে মন্দির খোঁজার বাতিক তৈরি হয়েছে সম্প্রতি। বিভিন্ন জায়গায় যেখানে ঐতিহাসিক বা ঐতিহ্যবাহী মসজিদ রয়েছে, সেখানেই মন্দির ছিল দাবি করে জরিপের আবেদন জানাচ্ছে কট্টর হিন্দুরা। ভারতীয় আদালতও সেই অনুযায়ী নির্বিচারের আদেশ দিয়ে দিচ্ছে। যদিও ভারতের ভারতের উপাসনাস্থল আইনের কয়েকটি ধারার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া একাধিক আপিলের শুনানিতে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি বলেছেন, উপাসনালয় নিয়ে আপাতত নতুন কোনো মামলা করা যাবে না।

এসব ‘অধর্মের’ বিরুদ্ধে এবার মুখ খুললেন মোহন ভাগবত, যিনি নিজেও হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর নেতা।

ভারতের ডানপন্থি হিন্দু জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক অর্ধ-সামরিক সংগঠন ‘রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) নেতা ভাগবত বলেছেন, “রাম মন্দির একটা বিশ্বাস ও আস্থার বিষয় ছিল। আর হিন্দুদের মনে হয়েছিল, এটা অবশ্যই গড়ে তোলা উচিত। কিন্তু, যেভাবে নতুন বেশ কিছু স্থানে একই ধরনের ইস্যু তুলে ধরা হচ্ছে এবং তার ফলে যে ঘৃণা ও শত্রুতার বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে, তা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

হিন্দুস্তান টাইমস এ খবর দিয়েছে।

পত্রিকাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইদানীং দেশজুড়ে এক নয়া ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। দেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন মসজিদের সমীক্ষার দাবি তুলে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে ছোট-বড় নানা আকারের হিন্দুপন্থি সংগঠন, কিংবা কোনো হিন্দু নেতা বা ব্যক্তি। উদ্দেশ্য একটাই, সেই মসজিদের স্থানে কোনো যুগে মন্দির ছিল কি না, সেটা যাচাই করে দেখা। এর জেরে সম্প্রতি দেশের নানা প্রান্তে অশান্তি, সাম্প্রদায়িক হিংসা পর্যন্ত ছড়িয়েছে।

এমন আচরণের তীব্র ধিক্কার জানিয়েছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। এই ধরনের ঘটনা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি।

মহারাষ্ট্রের পুণেতে আয়োজিত 'বিশ্বগুরু ভারত' কর্মসূচির মঞ্চে ভাষণ দিচ্ছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত

বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের পুণেতে আয়োজিত 'বিশ্বগুরু ভারত' কর্মসূচির মঞ্চে দেওয়া ভাষণে ভাগবত বলেন, “ইদানীং কিছু হিন্দু নেতা দেশের নানা প্রান্তে অযোধ্যার রাম মন্দিরের মতো 'ডিসপিউট' তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। এটা গ্রহণযোগ্য নয় একেবারেই।”

ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ উল্লেখ করে ভাগবত বলেন, “ভারতের সেই নজির গড়ে তোলা উচিত, যেখানে বিভিন্ন ধর্মে বিশ্বাসী ও সম্প্রদায়ের মানুষ একইসঙ্গে পাশাপাশি সহাবস্থান করতে পারে।”

উল্লেখ্য, সম্প্রতি কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের একাংশ উত্তরপ্রদেশের সম্ভলের জামা মসজিদ, এমন কি রাজস্থানের আজমির শরিফ নিয়েও সমীক্ষার দাবি তোলা হয়। বিষয়টি নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে।

সেই প্রেক্ষাপটে মোবন ভাগবত বলেন, “ভারতকে তার অতীতের সমস্ত ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তবেই বিশ্ব মানচিত্রে ভারত 'রোল মডেল' হয়ে উঠতে পারবে। আমাদের প্রমাণ করতে হবে, নানা বৈচিত্র্য থাকা সত্ত্বেও কীভাবে একত্রে থাকা যায়।”

‘অযোধ্য়ার রাম মন্দিরের বিষয়টি ছিল স্বতন্ত্র’- এমন মন্তব্য করে ভাগবত বলেন, “তার সঙ্গে অন্যান্য ঘটনা গুলিয়ে ফেললে চলবে না।”

ভাগবত বলেন, “সমাজে এই ধরনের বৈষম্য ও বিবাদ মেটানোর সবথেকে ভালো উপায় হলো প্রাচীন সংস্কৃতিতে ফিরে যাওয়া।

“চরমপন্থা, আগ্রাসী মনোভাব, জোর জবরদস্তি করা এবং অন্য ধর্মে আরাধ্যকে অপমান করা আমাদের সংস্কৃতি নয়।” বলেন মোহন ভাগবত।

এরপর কার্যত ঘোষণার সুরে বলেন, “এখানে সংখ্য়াগুরু, সংখ্য়ালঘু বলে কিছু নেই। আমরা সকলেই এক। এই দেশে যেন প্রত্যেকেই তার ধর্মবিশ্বাস অনুসারে ঈশ্বরের উপাসনা করার সুযোগ পান।”

(ঢাকাটাইমস/২০ডিসেম্বর/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ওষুধ ছাড়াই ঘরোয়া উপায়ে দূর করুন হজমের সমস্যা
সব দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে বাংলাদেশ: প্রেস সচিব
মে দিবস ২০২৫-এ বয়ে আনুক কর্মজীবীদের আশার আলো
৩২ বছর পর ৩১ জুলাই হতে যাচ্ছে জাকসু নির্বাচন
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা