বাতিল মাল আ.লীগকে আর কেউ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন না: নুরুল হক নুর

গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘আমাদের মত প্রকাশের ভিন্নতা রয়েছে, তবে ঐক্যের বিষয়ে সকলে এক ও অভিন্ন। বাতিল মাল আওয়ামী লীগকে আর কেউ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন না। বাংলাদেশে প্রায় ৫০টি রাজনৈতিক দল রয়েছে। এর মধ্যে একটি দল না থাকলে দেশের কিছুই হবে না।’
রবিবার চাঁদপুর হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা গণঅধিকার পরিষদের উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের স্মরণে ও আহতদের সুস্থতা কামনায় আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘রাজনীতি পয়সা কামানোর জায়গা নয়। রাজনীতি হলো জনসেবার স্থান। যে যেই দল করেন না কেন, সকলে মনে রাখবেন কেউ যেন বলতে না পারে আগেই ভাল ছিল। আমরা নতুন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে রাজনৈতিক কারণে কাউকে হয়রানি করা হবে না। হামলার শিকার হতে হবে না, মামলার শিকার হতে হবে না। রাজনীতিবিদেরা জনগণকে জিম্মি করে লুটপাট করবেন না, লুটপাট করে দেশের টাকা বাইরে পাঠাবেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে সামরিক বাহিনী যদি জনগণের পাশে এসে না দাঁড়াতো, তাহলে দেশে একটি গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হতো। গণঅভ্যুত্থানের পরে সেনাবাহিনীকে কেন জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে।’
কিছু বুদ্ধিজীবী কৌশলে গণঅভ্যুত্থানে সেনা কর্মকর্তাদের অবদান অস্বীকার করে বিভাজন তৈরি করতে চান। এতে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণে সবাইকে এ বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
নুরুল হক নুর বলেন, ‘কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের ধারাবাহিক কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদের প্রতিধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। আমরা চাই না, আওয়ামী লীগের মতো আগামীর বাংলাদেশে আবার কেউ ফ্যাসিবাদ কায়েম করুক। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিদেশি শক্তির ওপরে ভর করে এ দেশে গণহত্যা চালিয়ে মায়ের বুক খালি করেছে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করে, ভিন্নমতের মানুষের নামে মামলা-হামলা দিয়ে, ভারতের নীলনকশায় এই দেশে ফ্যাসিবাদী ও একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে যারাই কথা বলেছেন, লড়াই করেছেন, তাদের কারাগারে যেতে হয়েছে। আমরা আওয়ামী লীগের মতো আগামীর বাংলাদেশে আবার কেউ ফ্যাসিবাদ কায়েম করুক, সেটা চাই না।’
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ব্যাপারে কোন ছাড় নয়। এই চাঁদপুরে আর দীপু মনির জন্ম হতে দেওয়া হবে না। আর বালুখেকোঁ সেলিম খানের জন্ম না হয়। যদি লুটপাটকারীরা ক্ষমতায় আসেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হন, তাহলে এ পরিস্থিতির আর বদল হবে না। লড়াই সংগ্রাম আমরা করেছি সহনশীল, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য। আপনাদের সেই সুযোগ এসেছে। সঠিক প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি নিজেদের চিন্তা, সমাজ ও রাজনীতির সংস্কারও জরুরি। ক্ষমতাকেন্দ্রিক যে দানবীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা পরিবর্তন করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো যেন ক্ষমতায় গিয়ে দানব হয়ে উঠতে না পারে, তার জন্য আমরা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও চার বছরমেয়াদি সংসদের কথা বলছি। দুর্বৃত্তায়িত রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনে তরুণদের নতুন রাজনীতিতে এগিয়ে আসতে হবে।’জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কাজী রাসেলের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মো. মাহমুদুল হাসান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক অনুষ্ঠানে বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক সাংবাদিক জাকির হোসেনের যৌথ পরিচালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিম উল্যাহ সেলিম, কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি নাজমুল হোসেন, চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জহির উদ্দিন বাবর প্রমুখ।
(ঢাকা টাইমস/২৩মার্চ/এসএ)

মন্তব্য করুন