পূর্ব রাজাবাজারে রাস্তা প্রশস্তকরণের লক্ষ্যে এলাকাবাসীর সঙ্গে রাজউক চেয়ারম্যানের মতবিনিময়

রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম।
শনিবার পূর্ব রাজাবাজারের নাজনীন স্কুল ও কলেজে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রাজউক চেয়ারম্যান উপস্থিত এলাকাবাসীদের কাছে থেকে তাদের রাজউক সংশ্লিষ্ট সমস্যা সম্পর্কে জানেন এবং তা সমাধানের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
মতবিনিময় সভায় পূর্ব রাজাবাজার এলাকার রাস্তা প্রশস্তকরণের লক্ষ্যে এলাকাবাসীর অভিমত গ্রহণ, রাস্তার জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণ থেকে বিরত করার নির্দেশনা এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অবহিতকরণ- এ বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এ সময় রাজউক এর পক্ষ থেকে অবহিত করা হয়, ড্যাপ অনুযায়ী যতটুকু রাস্তা আছে সে অনুসারে রাস্তা প্রশস্ত করতে ব্যত্যয়কৃত ভবনের বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ডিপিডিসি, তিতাস গ্যাস ও ওয়াসা রাজউকের সঙ্গে সহযোগিতা করবে বলে অবহিত করে।
সভায় রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, ‘নির্মাণাধীন ভবনে কোন ব্যত্যয় ঘটানো চলবে না। সকল নির্মাণ কার্যক্রম নকশা অনুযায়ী হতে হবে। যে কোন ব্যত্যয় পাওয়া গেলে ইউটিলিটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। এক্ষেত্রে রাজউক জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর জেনারেটর ব্যবহার করলে, জেনারেটর জব্দ করা হবে। প্রয়োজনে ভবনের নকশা বাতিল করতেও রাজউক প্রস্তুত। ৩৩৮২টি নির্মাণাধীন ভবন চিহ্নিত করা হয়েছে যেগুলোতে ব্যত্যয় রয়েছে। সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জুলাই আন্দোলনের শহীদ মুগ্ধ, আবু সাঈদ দের চেতনাকে বুকে ধারণ করে আমরা এখানে এসেছি। তাদের এই আত্মত্যাগ মনে রেখে আমরা নিয়ম মেনে চলবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিলোত্তমা ঢাকা না গড়ে শুরুতে বাসযোগ্য ঢাকা গড়ার প্রত্যয় আমরা নিচ্ছি। অন্যের ব্যত্যয়ের উদাহরণ না দেখিয়ে নিজে নিয়ম মেনে ভবন নির্মাণ করলে অন্যরাও নিয়ম মেনে চলতে অনুপ্রাণিত হবে।’
এসময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘রাস্তা প্রশস্তকরণ এবং জনগণকে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা সম্পর্কে অবহিতকরণ আজকের সভার উদ্দেশ্য। গত কয়েক দশক ধরে ঢাকায় মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, ভবন বেড়েছে, কিন্তু স্যুয়ারেজ বাড়েনি। নাগরিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পায়নি। এর প্রধান কারণ অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ। এর জন্য জনগণকে সচেতন হতে হবে। অন্যথায় বাসযোগ্য নগরী গড়ে তোলা সম্ভব হবে না।"
সভায় উপস্থিত রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) মো. হারুন-অর-রশীদ বলেন, ভবনগুলোতে নির্মাণকালে ব্যত্যয় হলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হবে। এছাড়াও এমন নিয়ম করা হচ্ছে যাতে রাজউক অনুমোদন দিলে ডিপিডিসি বা অন্যরা সংযোগ দিবে, অন্যথায় নয়। আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি ঝামেলাহীন ভবন রেখে যেতে চাই যেন তাদের হয়রানির শিকার না হতে হয়। এর পূর্বে পরিদর্শনকালে ব্যত্যয়কৃত কিছু ভবনে লাল কালির দাগ দেওয়া হয়েছে, ভবন মালিকদের বলা হয়েছে অপসারণ করে নিতে। তারা সেটা না করলে রাজউক থেকে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত এলাকাবাসীদের একজন বলেন, গত ৪০ বছরেও এমন কোন সভা বা মতবিনিময় সভা এলাকাবাসী দেখেনি। এর জন্য তারা রাজউককে সাধুবাদ জানান। এছাড়াও তারা রাজউক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- রাজউক এর পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ মো. মনিরুল হক, সংশ্লিষ্ট জোনের পরিচালকসহ রাজউকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, ডিপিডিসি, তিতাস, ঢাকা ওয়াসার প্রতিনিধিবৃন্দ, এলাকাবাসীদের প্রতিনিধিবৃন্দসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকগণ।
(ঢাকাটাইমস/১৯এপ্রিল/জেবি/এমআর)

মন্তব্য করুন