‘জঙ্গি’ সাদ্দামকে ঘৃণা করেন বাবা

তৌহিদ বকশি ঠান্ডা, কুড়িগ্রাম
 | প্রকাশিত : ০৭ জানুয়ারি ২০১৭, ১৭:৫৯

রাজধানীতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নাটের গুরু হিসেবে চিহ্নিত নুরুল ইসলাম মারজানের সঙ্গে নিহত সন্দেহভাজন জঙ্গি সাদ্দাম হোসেনের জন্য দুঃখ নেই তার বাবার। গণমাধ্যম থেকে সাদ্দামের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছেন এই বাবা তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, সন্তান এই পথে গেছে-সেটা তিনি ভাবতেও পারেননি। সন্তানের এই কর্মকা-কে তিনি ঘৃণা করেন।

সন্দেহভাজন এই জঙ্গির বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার তিস্তাপাড়ের চর বিদ্যানন্দ গ্রামে। ছয় ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন চতুর্থ। সাদ্দাম বিয়ে করেছিলেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে। সেখানেই শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন তিনি।

সাদ্দামের বাবা তাজুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে জানান, বেশ কয়েক মাস ধরেই পরিবারের সঙ্গে তার কোনো যোাগযোগ ছিল না। এমনকি টেলিফোনেও কথা হয়নি।

কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান জানান, সাদ্দাম উত্তরাঞ্চলের সবকটি জঙ্গি হামলায় জড়িত ছিলেন। ২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়ায় জাপানি নাগরিক হোসি কুনিও এবং ২০১৬ সালের ২২ মার্চ কুড়িগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী হত্যায় সক্রিয়ভাবে অংশ নেন তিনি।

সাদ্দাম হোসি কুনিওসহ কমপক্ষে পাঁচটি হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ শাখা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিট। তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে।

নিজের সন্তানের বিরুদ্ধে এতো সব অভিযোগ শুনে হতবাক তাজুল। তিনি বলেন, ‘সে এত ঘৃণ্য কর্মকা-ের জড়িত হবে তা কখনো ভাবতেও পারিনি।’

তাজুল জানান, সন্তানের জঙ্গি কর্মকা-কে ঘৃণা করলেও শেষবারের মত লাশটি দেখতে চান তিনি।

সাদ্দামের নিজ গ্রাম চর বিদ্যানন্দের জয়নাল শেখ বলেন, ‘আগে মাঝে মধ্যে সে (সাদ্দাম) বাড়িতে আসলেও গত দুই বছরেও আমরা তাকে দেখিনি। তবে গ্রামের ছেলের জঙ্গি সম্পৃক্ততায় আমরা লজ্জিত।’

কুড়িগ্রামের সাদ্দাম গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বিয়ে করলেও পড়াশোনা করতেন লালমনিরহাট সরকারি অনার্স কলেজে। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে তিনি ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন।

একই অভিযানে নিহত নুরুল ইসলাম মারজানের গ্রামের বাড়ি পাবনার হেমায়েতপুরে। তার এই পরিণতিতে দুঃখ পেলেও বাবা এবং মা-দুজনই বলেছেন, মারজান তার কৃতকর্মের ফল পেয়েছে।

মারজানের বাবা নিজামউদ্দিন বলেছেন, ‘আমার ছেলে কৃতকর্মের ফল পেয়েছেন। বাবা হিসেবে আমার দুঃখ নেই।’

মা সালমা খাতুন বলেন, ‘খারাপ কাজের শাস্তি সে পেয়েছে। যা হওয়ার হয়ে গেছে। ছেলের বিচার হয়ে গেছে খুশি হইছি। দেশের ক্ষতি করেছে আমার ছেলে। আমার ছেলের বিচার হইছে আমি খুব খুশি হইছি।’

(ঢাকাটাইমস/০৭জানুয়ারি/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :