‘আ.লীগের ছায়াসঙ্গী’ সার্চ কমিটির সংলাপের ফল শূন্য: রিজভী

নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করতে গঠিত সার্চ কমিটিকে আওয়ামী লীগের ছায়াসঙ্গী ও সরকারের বর্ধিত প্রকাশ বলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি জানান, সার্চ কমিটির সংলাপের ফলাফল নিয়ে তার সংশয় আছে।
রবিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘তারা রাজনৈতিক দলের কাছে নামের তালিকা চেয়েছে এবং বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে বৈঠক করবে। তবে অতীতে নির্বাচন কমিশন নিয়ে যে সংলাপ হয়েছে তার ফলাফল ছিল শূন্য।’
শনিবার সার্চ কমিটির প্রথম বৈঠকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়া ৩১ দলের কাছে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের জন্য পাঁচটি করে নাম চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরই মধ্যে দলগুলোর কাছে এই চিঠি পৌঁছে গেছে।
রিজভী বলেন, ‘গতরাতে আমরা চিঠি পেয়েছি। রাতে এই বিষয় নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক আছে। সেখানে নাম দেয়া না দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে। সিদ্ধান্ত হলে আপনারা জানতে পারবেন।’
রিজভী বলেন, ‘সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার সময় রাজনৈতিক দল,বিশিষ্ট নাগরিক,সংবিধান বিশেষজ্ঞসহ খ্যাতিমান আইনজীবীদের মতামত গ্রহণ করা হয়েছিল।সেসময় আওয়ামী লীগের নেতা,সংসদ সদস্যসহ সকলেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের বিপক্ষে মতামত দিয়েছিলেন। কিন্তু শুধুমাত্র এক ব্যক্তির ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করা হয়েছিল। একইভাবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রেও শুধুমাত্র ওই এক ব্যক্তির ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটেছিল।’
বিএনপি নেতা বলেন,‘এবারও একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে এক ব্যক্তির ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে না সেটির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়ার কোন অবকাশ নেই।’
সার্চ কমিটি দাবি করে তিনি বলেন,‘যেভাবে সরকারের প্রভাবিত ও আওয়ামী মনোভাবাপন্ন লোকদের দিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে তাতে তাদের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন হবে সেটি নিয়ে জনমনে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। এরা কতটুকু নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে পারবে সে বিষয়ে জনমনে তীব্র সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।’
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের বিরোধীতাকারীদের নিয়ে চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের মন্ত্রীরা যেভাবে দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতা,বুদ্ধিজীবী ও পরিবেশবাদীদের সমালোচনা ও গালিগালাজ করছেন তাতে তাদের এই বক্তব্য বিশ্বের স্বৈরশাসকদের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি।’
প্রধানমন্ত্রী শুধু নিজের বাকস্বাধীনতাতে বিশ্বাস করেন এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বিপক্ষে গেলেই তিনি সেটি মানতে চান না। ’ তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যারা কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করেছিল তারা এখন এধরনের পরিবেশ বিধ্বংসী প্রকল্প থেকে সরে আসতে শুরু করেছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশও তাদের দেশে এধরণের প্রকল্প স্থাপন করতে দেয়নি। অথচ শুধুমাত্র প্রভুদের মন রক্ষায় সুন্দরবন ধ্বংসকারী এই প্রকল্প সরকার গায়ের জোরে এবং বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে স্থাপন করতে যাচ্ছে।’
(ঢাকাটাইমস/২৯জানুয়ারি/বিইউ/ডব্লিউবি)

মন্তব্য করুন