বাহন ও আবাসন সংকটে ফেনী পুলিশ
ফেনীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীর আবাসন ও গাড়ি সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে। চিকিৎসা সেবার জন্য নেই কোন অ্যাম্বুলেন্সও। থানা পর্যায়ে এক-দু’টি গাড়ি থাকলেও ছাগলনাইয়ার ঘোপাল তদন্তকেন্দ্র ও সোনাগাজীর আদর্শ গ্রাম তদন্তকেন্দ্রে কোন গাড়িই নেই। বোগদাদিয়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের গাড়ি থাকলেও না থাকার মতোই।
যা বুধবার ফেনী পৌর চত্বরে আয়োজিত সুধী সমাবেশে সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারী তার বক্তব্যে প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্র সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এছাড়া সোনাগাজী ও ছাগলনাইয়া সার্কেলের নবাগত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারকে রিকুইজিশন গাড়ির উপর ভরসা করতে হয়। অবশ্য এসব সংকট সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ফেনীতে সফররত স্বরাষ্ট্র সচিব।
তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিগগির একযোগে এসব সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলার ৬ উপজেলায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন পর্যায় থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত ১ হাজার ৭০ পদের মধ্যে ৯২৬ জন কর্মরত রয়েছেন।
প্রত্যেকটি থানায় পুলিশের আবাসন সংকটও তীব্র। ফেনী মডেল থানার দ্বিতীয় তলায় গাদাগাদি করে কর্মকর্তা এমনকি কনস্টেবলদের থাকতে হয়। কখনো কখনো বারান্দায় পর্দা টেনে থাকেন তারা। পাশের পুরনো থানার জরাজীর্ণ ভবনে থাকেন এসআই ও এএসআই পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা। বর্ষাকালে টিনশেড ভবনটি পানিতে জুবুথুবু হয়ে যায়। অনেকটা মানবেতর জীবন-যাপন করেন তারা।
শহরের মহিপাল পল্লী বিদ্যুৎ সংলগ্ন স্থানে সাংসদ নিজাম উদ্দিন হাজারীর দেয়া জায়গায় ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলে আবাসন সমস্যা অনেকটা কমে যাবে বলে মনে করছেন জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সূত্র আরো জানায়, ফেনী মডেল থানায় ৩টি গাড়ি থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। জেলা সদরের এ থানার প্রতিদিন দায়িত্ব পালনে আরো ৫-৬টি ইমা গাড়ি রিকুইজিশন করতে হয়। শহর পুলিশ ফাঁড়ি রাতে টহল ডিউটির দুটি সিএনজি অটোরিকশা নিতে হয়।
বোগদাদিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে রয়েছে ব্রিটিশ আমলের লক্কর-ঝক্কর একটি গাড়ি। পবিরহন সমিতি এ ফাঁড়িতে প্রতিদিন দুটি ইমা গাড়ি সরবরাহ করে। একই চিত্র জেলার অপরাপর থানাগুলোতেও। সবকটি থানার জন্য নিয়মিত টহলে প্রতিদিন ২৫-৩০টি তথা মাসে ৮শ গাড়ি রিকুইজিশন করতে হয়। এছাড়া সহকারী পুলিশ সুপারদের জন্য রিকুইজিশন করতে হয় মাইক্রোবাস। আবার ওসির গাড়ি ভিআইপি প্রটোকলে যাওয়ায় তাকেও বিপাকে পড়তে হয়।
সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) মো. খালেদ হোসেন জানান, চাহিদার তুলনায় জেলায় গাড়ির সংখ্যা অনেক কম। এ কারণে রিকুইজিশন ছাড়া উপায় থাকে না। গাড়ির সমস্যা দূর হলে পুলিশ বিভাগের গতিও অনেক বাড়বে।
তিনি আরো বলেন, ব্রিটিশ আমলে ফিটনেসবিহীন গাড়ি দিয়ে পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। এতে অনেকসময় ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগে অপরাধীরা পালিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার মো. রেজাউল হক পিপিএম বলেন, পুলিশের যে জনবল রয়েছে তা আরো ২০ শতাংশ বাড়ানো প্রয়োজন। একইসাথে মহাসড়কে টহলের জন্য ট্রাফিক পুলিশও বাড়াতে হবে। এছাড়া ফেনী মডেল থানা ও ছাগলনাইয়া থানার জায়গাটি পুলিশের নামে লিখে দেয়ার দাবি জানান।
(ঢাকাটাইমস/৯ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/এলএ)
মন্তব্য করুন