রানা প্লাজা ধসে আহতদের প্রায় অর্ধেক এখনও কর্মহীন
সাভারের রানা প্লাজা ধসে আহত শ্রমিকদের ৪০ শতাংশেরও বেশি এখনও কোনো কাজ পায়নি বলে জানিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন এইড। সংস্থাটির এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানানো হয়।
শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে জানানো হয়, রানা প্লাজা ধ্বসে আহত এক হাজার ৪০৩ জন শ্রমিককে নিয়ে জরিপ চালান তারা। পাশাপাশি প্রাণ হারানো ৬০৭ জন শ্রমিকের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছে জরিপকারীরা।
আহত যাদের ওপর জরিপ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৫৭ শতাংশ বিভিন্ন চাকরি বা আয়বর্ধক কাজে যুক্ত হয়েছেন। বাকি ৪২ দশমিক ২ শতাংশ এখনও বেকার।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে রানা প্লাজা ধসে পড়ে। এ সময় সেখানে পাঁচটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ চলছিল। পরের কয়েক দিন ধরে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নেয়ার পাশাপাশি ভেতরে আটকা পড়া এবং নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে সেনাবাহিনী।
ভবনটি থেকে এক হাজার একশরও বেশি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়ে গুরুতর আহত ও পঙ্গু হওয়ার পাশাপাশি নিখোঁজ হন অনেকে।
বিশ্বজুড়ে তোলপার ফেলা এই দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশে পোশাক খাতের কর্মপরিবেশের নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে চলে আসে। সেই সঙ্গে নিহতদের স্বজনদের ক্ষতিপূরণ এবং বেঁচে ফেরা ও আহতদের কাজ দেয়ার বিষয়ে অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে।
তবে অ্যাকশন এইড বলছে, বেঁচে যাওয়া শ্রমিকদের মধ্যে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ পরে কাজে ফেরেন ওই বছরই। আর ২৬ দশমিক ৩ শতাংশ কাজে ফিরতে পারেন পরের বছর। ২০১৫ সালে কাজে ফেরা শ্রমিকদের হার দাঁড়ায় ৪৪ শতাংশ। ২০১৭ সালে এই হার হয় ৫৭ দশমিক ৬ শতাংশ।
অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, ‘চার বছর পরও এত বিশাল সংখ্যক শ্রমিকদের এই অবস্থা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
গবেষণায় বলা হয়, ২০১৭ সাল পর্যন্ত আহতদের মধ্যে ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশ শারীরিকভাবে সেরে উঠেছেন। মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে ১২ দশমিক ৪ শতাংশের অবস্থা। আর ১৩ দশমিক ১ শতাংশের শারীরিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে।
এই দুর্ঘটনায় ট্রমা আক্রান্তদের মধ্যে ৫৭ দশমিক ২ শতাংশ মানসিকভাবে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে উঠেছ্নে। ৩০ দশমিক ৮ শতাংশের মানসিক আঘাত রয়ে গেছে। স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন ১২ শতাংশ মানুষ।
ঢাকাটাইমস/২২এপ্রিল/জেআর/ডব্লিউবি