‘শেখ হাসিনা ফিরেছিলেন বলেই আজ আমরা সম্মানিত’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ গণতন্ত্র এবং উন্নয়ন, উভয় শক্তিতে বলীয়ান হয়ে বিশ্বের মধ্যে অগ্রযাত্রার মডেল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আআমস আরেফিন সিদ্দিক।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ঢাকাটাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক আরও বলেছেন, দেশে ফিরে শেখ হাসিনা অবিরাম অগণতান্ত্রিক ও স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির মোকাবেলা করে চলেছেন। শেখ হাসিনার যোগ্য ও সফল নেতৃত্বের জন্য বাংলাদেশ, এদেশের মানুষ আজ বিশ্বে একটা সম্মানজনক অবস্থানে এসে পৌঁছেছে।
১৯৮১ সালের এই দিনে দীর্ঘ নির্বাসন শেষে বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকার কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। এ সময় তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পান।
পরবর্তী সময়ে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
১৭ মে শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত হন প্রায় ১৫ লাখ মানুষ। সেদিন শেখ হাসিনা বলেছিলেন বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি দেশে এসেছেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই।
এ উপলক্ষে ঢাকাটাইমসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের একজন বিরল নেতৃত্ব। আজ বাংলাদেশ পৃথিবীর যে কোনো সভ্য দেশের সাথে তুলনীয়। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি অর্জনের লড়াইয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনেকখানি এগিয়ে গেছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী শক্তি বাংলাদেশকে ব্যর্থ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা স্বাধীনতাবিরোধীদের ভয়ংকর ষড়যন্ত্র সফল হতে দেননি। তিনি শুধু আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন তা নয়, পুরো বাংলাদেশকে তিনি আগলে রেখেছেন, সব ষড়যন্ত্র আর বাঁধাকে জয় করে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রকে একটি শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছেন।
আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অগণতান্ত্রিক শক্তি, স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধী শক্তি শেখ হাসিনাকে ভয় পায়, এজন্যই বারবার তার উপর হামলা হয়েছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার কথা স্মরণ করে ঢাবি উপাচার্য বলেন, এমন আরও অনেকবার বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যার চেষ্টা করেছে অন্ধকারের শক্তি, কিন্তু সফল হতে পারেনি।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন সময়কালীন পরিস্থিতি বর্ণনা করে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সেদিন বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে শেখ হাসিনার ভাষণে জাতির মনে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছিল যে, সামরিক শাসকশ্রেণির একদিন নিশ্চয় পতন হবে। শেখ হাসিনা কিন্তু পরবর্তীতে সামরিক শাসককদের পতন ঘটাতে সক্ষম হয়ে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের পথে আনতে পেরেছিলেন।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, অগণতান্ত্রিক শক্তির সমর্থনপুষ্ট সর্বশেষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও শেখ হাসিনা যেন দেশে ফিরতে না পারেন এজন্য তৎকালীন সরকার অনেক চেষ্টা করেছে, তাকে বিমানে উঠতে পর্যন্ত দেয়নি। এরপরেও কিন্তু শেখ হাসিনা কিন্তু দেশে ফিরেছেন এবং বাংলাদেশকে পুনরায় গণতন্ত্রের পথে এনেছেন।
আরেফিন সিদ্দিক আরও বলেন, শেখ হাসিনাকে শুধু ভালোবাসলেই হবেনা, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে যাতে দেশীয় ও বিদেশী বিরোধী শক্তি যেন কোনোভাবেই ষড়যন্ত্র করে সফল হতে না পারে।
ঢাকাটাইমস/ ১৭ মে/এসএএফ
মন্তব্য করুন