দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না দৌলতদিয়া ঘাটে

এম, মনিরুজ্জামান, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১০:৩২

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথের ঝঞ্জাট আর কমছে না।নদীতে স্রোত কমলেও ফেরি বিকল, নইলে ঘাট ভেঙে ফেরি ভিড়তে পারছে না। ফলে গত এক মাস ধরে প্রতিদিনই শুধু দৌলতদিয়া ঘাটেই শত শত গাড়ি আটকা পড়ছে।

ঈদের সময় টানা ১৫ দিন ঘাট দিয়ে প্রতিদিন দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার গাড়ি ও মানুষ যাতায়াত করে। তখন যানজট অনেকেই এক রকম মেনে নেয়। কিন্তু এখন নদীতে পানি কমে স্রোত নাই বললেই চলে। ফেরি পারাপারে সময় লাগছে মাত্র ৩০ মিনিট। কিন্তু গত পাঁচ দিন ধরে এ নৌপথের নির্ধারিত ১৮টি ফেরি মধ্যে দুটি রো রো ও দুটি ইউটিলিটি ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিকল হয়ে পাটুরিয়ার ভাসমান কারখানায় পড়ে থাকায় যানজট প্রকট আকার ধারণ করেছে।

রবিবার সকাল দশটায় দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের বাংলাদেশ হ্যাচারিজ এলাকা পর্যন্ত চার কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে বিভিন্ন বাসের যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হয়। এছাড়া প্রতিদিনই মহাসড়কের দুই পাশজুড়ে তিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ও শতাধিক বাস ও ছোট গাড়ি পারের জন্য অপেক্ষা করে দীর্ঘ ৩/৪ ঘণ্টা ধরে। এতে ওই বাসযাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগে রয়েছেন। ট্রাকের পণ্যে ধরেছে পচন।

ফলে অনেক যাত্রী প্রতিদিনই বাস ছেড়ে লঞ্চে নদী পার হয়ে গন্তব্যে কষ্টে চলছেন। আর ব্যবসায়ীরা পণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া খরচে পড়ে লোকসান দিচ্ছেন।

দেশের ব্যস্ততম দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে চারটি ফেরি বিকল হওয়ায় স্বাভাবিক পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। দুই পারে শত শত গাড়ি আটকে পড়েছে।

বিআইডাব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৮টি ফেরির মধ্যে বর্তমানে চারটি ফেরি বিকল হয়ে আছে। রো রো (বড়) ফেরি খানজাহান আলী, আমানত শাহসহ একটি কে-টাইপ (মাঝারি) ফেরি কপোতী নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান নামের অন্য একটি রো রো (বড়) ফেরির মেরামতকাজ চলছে পাটুরিয়ার ভাসমান কারখানা মধুমতিতে।

এদিকে দৌলতদিয়া ঘাটে আটকে পরা ট্রাক চালকরা জানান, দৌলতদিয়া ঘাটের ঝঞ্জাট আর যাবে না। এখন ফেরি বিকল কৃত্রিম। বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ ভালো ফেরির ইঞ্জিন বিকল করছে ঘাটে যানজট সৃষ্টি করার জন্য।

আমরা ফেরির এই কৃত্রিম সংকট থেকে বাঁচতে এ ব্যস্ততম নৌপথে নতুন রো রো ফেরি চাই।

কিন্তু পাটুরিয়ার ওই ভাসমান কারখানায় কর্মরত বিআইডাব্লিউটিসির কারিগরি বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী (আরিচা অঞ্চল) মো. এনামুল হক অপু ঢাকাটাইমসকে জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে চলাচলকারী ফেরিগুলোর অনেক বয়স হয়েছে। তাই ইঞ্জিন দুর্বল হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নানা যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়ায় ফেরিগুলো ঘন ঘন বিকল হয়ে পড়ছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ এ নৌপথেটে ফেরির সংকট লেগেই থাকছে।

ঘাট সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, পদ্মায় বয়ে যাওয়া স্রোতের তীব্রতা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। উভয় পারের সব ফেরিঘাট সচল রয়েছে। কিন্তু ফেরি সংকটের কারণে পারাপার ব্যাহত হওয়ায় দৌলতদিয়া ঘাটে পাঁচ শতাধিক বিভিন্ন গাড়ি আটকে পড়ে আছে।

রাজবাড়ীর রাবেয়া পরিবহন বাস কম্পানির দৌলতদিয়া ঘাট সুপারভাইজার মহাব্বত হোসেন ঢাকাটাইমসকে জানান, দৌলতদিয়া ঘাটের যানজট এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেখানে আটকে পড়ে বিভিন্ন বাসের সাধারণ যাত্রী, বিশেষ করে নারী ও শিশুরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মরত রাজবাড়ীর ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) মৃদুল রঞ্জন দাস ঢাকাটাইমসকে জানান, দৌলতদিয়া ঘাটে সৃষ্ট যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজবাড়ী সদর থানার আহলাদীপুর এলাকায় ঢাকাগামী পণ্যবাহী শতাধিক ট্রাক আটকে রেখেছে হাইওয়ে পুলিশ। তবে ঘাটের পরিস্থিতি বিবেচনায় সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে ওই ট্রাকগুলো ছেড়ে দেয়া হবে।

বিআইডাব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকাটাইমসকে জানান, ফেরি সংকটের পাশাপাশি বিভিন্ন গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় দৌলতদিয়া ঘাটে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :