হঠাৎ বাস বন্ধ, বিপাকে যাত্রীরা

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
| আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০১৭, ১৪:৪৯ | প্রকাশিত : ১২ নভেম্বর ২০১৭, ১০:০০

আজ সকালে থেকেই ঢাকামুখী সব গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। পূর্ব ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ করে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। উপায় না পেয়ে অনেকেই সিএনজি ও রিকশা ভাড়া করে গন্তব্যস্থলে যাচ্ছেন। যাত্রীদের ধারণা ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশকে ঘিরেই গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে বাস মালিকরা।

আজ দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দলটির অভিযোগ, এই সমাবেশে বাইরে থেকে লোক আসা ঠেকাতে ঢাকার আশপাশের জেলার পরিবহন মালিকদের গাড়ি চলাচল কমিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতারা। এ ছাড়া ঢাকার মধ্যেও গণপরিবহন চলাচল কমানোর কথা বলা হয়েছে।

দূরপাল্লা এবং নগর পরিবহন হঠাৎ বন্ধের জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ বন্ধ করতেই এই কৌশল নেয়া হয়েছে।

আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, রবিবার সকাল থেকেই ঢাকার কাছের জেলাগুলো থেকে ঢাকামুখী সব গণপরিবহন রয়েছে। গাজীপুর, সাভার, আশুলিয়া, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, সোনারগাঁও থেকে ঢাকার উদ্দেশে কোনো বাস ছাড়ছে না।

এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামীসহ সব ধরনের যাত্রী। উপায় না পেয়ে দুর্ভোগকে সঙ্গী করেই কেউ কেউ সিএনজি অটোরিকশা- এমনকি রিকশায় করে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও ঢাকায় আসছেন।

কাছের জেলাগুলো থেকে বাস না আসায় চাপ পড়েছে রাজধানীতেও। ঢাকার অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী বাসের দেখা মিলছে খুব কম।

মহাখালী বাস স্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন মিশু নামের এক যাত্রী। ‍তিনি যাবেন মগবাজার। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করেও বাসের দেখা পাচ্ছেন না। একটি দুইটি বাস আসলেও তাতে তিল ধারনের ঠাঁই নাই। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে দিগুন ভাড়া দিয়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছান তিনি।

মতিঝিলে কথা হয় এক নারী যাত্রীর সঙ্গে। তিনি যাবেন বাংলামোটর। ঢাকাটাইমসকে তিনি জানান, ৪০ মিনিট ধরে বাসের অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু বাসের দেখা মিলছে না। উপায় না পেয়ে রিকশা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছেন তিনি।

শনিরআখড়া থেকে আমাদের প্রতিবেদক মোসাদ্দেক বশির জানান, শনিরআখড়া, রায়েরবাগ, কাজলা, চিটাগাং রোডে হাজার হাজার মানুষ বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। রাস্তায় কোনো বাস নেই। দুই একটি বাস পাওয়া গেলেও যাত্রীরা তাতে উঠতে পারছেন না। পুলিশ বাস থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নারায়ণগঞ্জে বাস বন্ধ, ট্রেন চলছে

নারায়ণগঞ্জ থেকে আমাদের প্রতিনিধি মাজহারুল ইসলাম রোকন জানিয়েছেন, সকাল থেকে সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা ট্রেন চলাচলও অস্বাভাবিক রয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে সব গণপরিবহন বন্ধ করা হয়েছে।

রবিবার সকাল থেকেই অনেকটা অঘোষিত হরতালে পরিণত হয় নারায়ণগঞ্জ শহর। শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো ছিল ফাঁকা। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও এসি বাস চালু রয়েছে। সকার থেকে এ বাসগুলো শহরের মেট্রো হল ও চাষাঢ়া কাউন্টার থেকে ছেড়ে যাচ্ছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, সকাল থেকে প্রয়োজনীয় কাজে ঢাকা যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করলেও কোনো বাস তারা পাচ্ছেন না। উপায় না পেয়ে অনেকে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের ট্রেন অনেক দেরিতে ছাড়ছে আজকে।

ট্রাফিকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সকাল থেকেই বাস চলছে না। তবে এর কারণ সম্পর্কে আমার জানা নেই। জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুকুল ইসলাম রাজীব ঢাকাটাইমসে বলেন, বিএনপির সমাবেশে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ যাতে ঢাকা যেতে না পারে সজন্য সরকার গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে।

উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন চললেও ঢাকাগামী পরিবহন বন্ধ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি ফয়সাল আহমেদ জানিয়েছেন, গাজীপুরে উত্তরবঙ্গগামী সব ধরনের যানবাহন চললেও ঢাকাগামী যাত্রীবাহী কোনো পরিবহন চলছে না। উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী বিভিন্ন পরিবহনের বাস গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্তা থেকে ঘুরিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে ঢাকাগামী যাত্রীরা পরিবহন সংকটে পড়ে বাসস্ট্যান্ডগুলোতে ভিড় জমিয়েছেন।

এ ব্যাপারে গাজীপুর ট্রাফিক বিভাগের এএসপি সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, তারা কোনো গাড়িকে বাধা দিচ্ছেন না। পরিবহনের লোকেরাই গাড়ি নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছেন না। তবে কী কারণে তারা গাড়ি নিয়ে যাচ্ছে না সে ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবহন নেতা সুলতান উদ্দিন সরকার কোন কথা বলতে রাজি হননি।

মুন্সীগঞ্জ-ঢাকা বাস চলাচল বন্ধ

মুন্সীগঞ্জ (সিরাজদিখান) প্রতিনিধি সাখাওয়াত হোসেন জানান, ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সিরাজদিখানে সব ধরনের পরিবহন বন্ধ রয়েছে। উপজেলার কুসুমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে সিরাজদিখান পরিবহন এবং বেতকা বাস্ট্যান্ড থেকে এসএস পরিবহনের কোনো বাস ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি।

রবিবার সকাল থেকেই উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক ফাঁকা থাকায় কার্যত হরতালের আবহ তৈরি হয়।

যাত্রীদের অভিযোগ, সকাল থেকে প্রয়োজনীয় কাজে ঢাকা যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করলেও কোনো গণপরিবহন পাননি তারা। উপায় না পেয়ে সিএনজি, ব্যাটারিচালিত অটোতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

সিরাজদিখান থানার উপপরিদর্শক (তদন্ত) জানান, সিরাজদিখান থেকে গণপরিবহন আজ কম চলাচল করছে। তবে কী কারণে কম চলাচল করছে তা আমাদের জানা নাই।

(ঢাকাটাইমস/১২নভেম্বর/এমবি/জেডএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

গবেষণায় ভালো করলে স্বাস্থ্যসেবায় আমূল পরিবর্তন আসবে: বিএসএমএমইউর উপ-উপাচার্য

হাসিনা-থাভিসিন দ্বিপাক্ষীক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা স্বেচ্ছাচারিতামূলক: টিআইবি

রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

একযোগে আট বিভাগে সম্পন্ন হলো ৪৬তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা

৭৬ বছরের রেকর্ড ভাঙছে তাপপ্রবাহ

তাপপ্রবাহে রেলের কর্মীদের জন্য ৫ নির্দেশনা

মানবসম্পদ উন্নয়নে উচ্চ শিক্ষার বিকল্প নেই: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

তাপমাত্রার মতোই বেড়েছে সবজি ও মাছ-মাংসের দাম

১৬ জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ, দুই জেলায় অতি তীব্র

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :