প্রচণ্ড দাবদাহে পুড়ছে মাদারীপুরের পাটখেত

দাবদাহ আর বৃষ্টিহীনতায় পুড়ছে মাদারীপুরের পাটখেত। বৈশাখের তপ্ত রোদে তাই পাটখেত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। পাটের জমিতে ঘন ঘন সেচ দেওয়ায় যেমন উৎপাদন খরচ বাড়ছে, তেমনি প্রচণ্ড খরায় জমির আগাছা পরিষ্কার করতে পারছেন না কৃষকরা।
এমনটা চলতে থাকলে উৎপাদন অনেকটা হুমকির মুখে পড়বে বলেও আশঙ্কা কৃষকদের। আর কৃষি বিভাগের দাবি, সেচ ব্যবস্থায় উৎপাদন বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে চাষিরা।
সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের মধ্যচক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গেল কয়েক দিনের তীব্র দাবদাহে পাট গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। খেতেই মরে যাচ্ছে পাট গাছ। কোথাও শুকিয়ে মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে ঘন ঘন সেচ দিয়েও গাছের আশানুরূপ পরিবর্তন আনতে পারছেন না। অনাবৃষ্টির কারণে পাট গাছের বৃদ্ধি না হওয়ায় জমিতে আগাছার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্বিগুণ হারে। এবার প্রতি বিঘা পাট চাষ করতে খরচ হয়েছে ১৯ হাজার ৫০০ টাকার মতো। যা গতবারের চেয়ে অন্তত ২ হাজার বেশি। এরপরে গাছ শুকিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্যে সেচ দিচ্ছেন চাষিরা। ফলে আরো বাড়তে পারে উৎপাদন ব্যয়। এতে হিমশিম খাচ্ছেন চাষিরা।
খোয়াজপুরের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েকদিনের প্রচণ্ড গরমে মাঠ ফেটে চৌচির। পাটগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। একটুখানি বড় হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন চললে এবার পাট আবাদ ধসে পড়বে। অনেকেই সেচ দিলেও এক দুই দিন পরে আবার শুকিয়ে যায়। এতে মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে উঠছে।’
আর মাদারীপুর জেলা কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় এবার ৩৭ হাজার ৪০২ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে অধিকাংশ জমিতে বপন কাজ শেষ হয়েছে এবং অনেক স্থানে চারা বড় হয়ে গেছে। কিন্তু রোগের কারণে পাটের ক্ষতি হওয়ায় চাষিদের বিকালে পানি সেচ দেওয়ার পরামর্শ কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আব্দুল মতিন বিশ্বাস বলেন, এই গরমে পাটের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে, সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে কৃষকদের বলছি, যেন বিকালে সেচের মাধ্যমে পাট গাছ জীবিত রাখে। এতে গাছ মরবে না। যদি পানি না দেওয়া হয়, তাহলে কৃষকের ক্ষতি হবেই। অন্যদিকে এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পাটের দাম বাড়ার সম্ভাবনাকে হিসেবে দেখছেন। তাই সাময়িক ক্ষতি মেনে নিতে তার আহ্বান।
মাদারীপুর জেলায় অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসেবে পাটের অবস্থান শীর্ষে। গতবছর পাটের মূল্য ভাল পাওয়ায় কৃষকরাও এবার বেশি জমিতে পাট চাষ করেছেন।
(ঢাকা টাইমস/২৬এপ্রিল/প্রতিনিধি/এসএ)

মন্তব্য করুন