পুলিশ হেফাজতে বিষপান করা নারী ঢামেকে মারা গেছেন, দায়িত্বে অবহেলায় তিন পুলিশ বরখাস্ত

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে ফিরোজা আশরাফী নামে এক নারীর, যিনি গত ১০ জুলাই (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর ভাটারা থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন বিষপান করেছিলেন। শুক্রবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ভাটারা থানার তিন পুলিশ সদস্যকে তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত করে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

বরখাস্ত সদস্যরা হলেন— এসআই (নিরস্ত্র) জামাল হোসেন, নারী কনস্টেবল শারমিন এবং নাছিমা।

ভাটারা থানার ওসি রাকিবুল হাসান ঢাকাটাইমসকে জানান, বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকাল চারটার দিকে ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ ফিরোজা আশরাফীকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। তিনি জানান, আশরাফীর শ্বাসকষ্টের কথা বললে ‘লিগ্যাল এইড’ সংগঠনের সহায়তায় তার বাসা থেকে ইনহেলার আনান। কিন্তু ইনহেলারের প্যাকেটের ভেতরে বিষ ছিল; যা আশরাফী পান করেন।

ঘটনার পরপরই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় মৃত্যুবরণ করেন।

জানা গেছে, ফিরোজা আশরাফীর সঙ্গে তার স্বামী ইসমাঈল সুজনের দাম্পত্য কলহ চলছিল। ভাটারা থানার ওসি জানান, আশরাফী বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় থাকতেন এবং তার স্বামী পল্লবীতে। বৃহস্পতিবার ভোরে আশরাফী ঘুমন্ত অবস্থায় স্বামীর গোপনাঙ্গ কেটে দেন এবং পরে নিজেই তাকে এয়ারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান।

এই ঘটনার পর খবর পেয়ে হাসপাতালে উপস্থিত স্বামীর স্বজনরা। সেখানে তার সঙ্গে (আশরাফী) স্বজনদের কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর তিনি ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চান। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ভাটারা থানায় নিয়ে যায়।

ওসি রাকিবুল আরও জানান, আশরাফীকে থানায় আনার পরই পল্লবী থানা পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে; তাকে থানা পুলিশ হেফাজতে নিবে। এরই মাঝে ঘটে যায় বিষপানের ঘটনা।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ঘটনায় ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’ আইনে একটি মামলা ভাটারা থানায় রুজু হয়েছে। পাশাপাশি দায়িত্বে অবহেলার জন্য অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ভাটারা থানা সূত্রে জানা গেছে, নিহত আশরাফী অনলাইনের মাধ্যমে ওই বিষ কিনেছিলেন। সেই নম্বর ও বিষ কেনার কথোপকথনের প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/এসএস)