মানিকগঞ্জে যুবককে পিটিয়ে হত্যায় দোষীদের শাস্তির দাবি

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর ২০১৭, ২১:২৮

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার কামতা গ্রামে এক যুবককে পিটিয়ে আহত করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার মারা যান। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকালে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন পালন করেছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে কামতা গ্রামের আবদুস সোবহানের মেয়ে সোনিয়া আক্তারকে বিয়ে করেন একই গ্রামের আবদুস সাত্তারের ছেলে আনিসুর রহমান। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অমতে আদালতে এফিডেবিটের মাধ্যমে এই বিয়ে হয়। এ কারণে শ্বশুরবাড়ির লোকজন আনিসুরের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। এরপর প্রায় ছয় মাস ধরে স্থানীয় ধানকোড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মনোয়ার হোসেনের সঙ্গে সোনিয়ার পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর প্রায় দুই মাস আগে বিভিন্ন মনোয়ারের প্রলোভন ও চাপে অভিভাবকদের অনুরোধে সোনিয়ার ও আনিসুরের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপরও আনিসুর মুঠোফোনে সোনিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। বিষয়টি জানতে পেরে ইউপি সদস্য মনোয়ার আনিসুরকে হুমকি-ধামকি দেন। বিষয়টি নিয়ে সোনিয়ার অভিভাবকেরা ক্ষিপ্ত হন। এর প্রেক্ষিতে গত ২৯ অক্টোবর বাড়ির অদূরে মনোয়ারের নির্দেশে সোনিয়ার স্বজনেরা লাঠি ও জিআই তারের মোটা পাইপ দিয়ে আনিসুরকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। এরপর মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই দিনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে আনিসুর মারা যান।

ঘটনার দিন সাটুরিয়ায় থানায় অভিযোগ করা হলেও মামলা নথিভুক্ত করা হয়নি। পরে গত রবিবার (১২ নভেম্বর) মানিকগঞ্জের বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলা করা হয়। মামলায় ইউপি সদস্য মনোয়ার হোসেন, সোনিয়ার বাবা আবদুস সোবহান, বড় আলামিন হোসেন ও মামাতো ভাই বাবু মিয়াসহ আটজনকে আসামি করা হয়।

আনিসুরকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে আজ বিকালে চারটার দিকে সাটুরিয়ার গোলড়া এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে উপজেলা শ্রমিকলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোনায়েম খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ আলী, ধানকোড়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক, ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিন হোসেন, মানিকগঞ্জ বারের আইনজীবী সেলিম হোসেন, গোলড়া বাসস্ট্যান্ড অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি হুকুম আলী ও নিহতের বড় ভাই নাসির উদ্দিন।

নাসির উদ্দিন বলেন, সোনিয়ার সঙ্গে ইউপি সদস্যের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। তাকে বিয়ে করার জন্য ইউপি সদস্য মনোয়ার হোসেন সোনিয়ার পরিবারকে চাপ দিয়ে আসছিল। এ কারণে ঘটনার দিন মনোয়ার হোসেন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তার ভাইকে মারার নির্দেশ দেন। তিনি নিজেও পেটান। তিনি আনিসুরের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।

অভিযোগের বিষয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ইউপি সদস্য মনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি এই প্রতিনিধির পরিচয় জানার পর ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর বক্তব্য নেয়ার জন্য একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

(ঢাকাটাইমস/১৭নভেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :