শিক্ষকদের কর্মসূচিতে ‘অনৈতিক শিক্ষক’

এন এইচ সাজ্জাদ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২২ জুলাই ২০১৮, ১৫:৪১ | প্রকাশিত : ২২ জুলাই ২০১৮, ১৩:৩৫
রুশাদ ফরিদী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নিপীড়নবিরোধী’ শিক্ষকদের ব্যানারে একজনের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক এবং অশিক্ষকসুলভ আচরণের কারণে গত সাত বছর ধরেই তিনি নানা সময় শাস্তি পেয়ে আসছেন। এখনও তিনি বরখাস্ত আছেন।

এই শিক্ষকের নাম রুশাদ ফরিদী। তিনি অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের কারণে ২০১১ সালের ২১ জুলাই রুশাদকে ছয় মাসের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে ২০১২ সালের ৯ জুলাই বিভাগের ২০ জন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে আপত্তিকর ও অশিক্ষকসূলভ আচরণের অভিযোগ করেন। সেই প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট সভায় তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।

তিন বছর পর রুশাদকে বিভাগে যোগদানের অনুমতি দিলেও তিন বছর পদোন্নতি না দেয়ার শাস্তি দেওয়া হয়। কিন্তু দুই বছর যেতে না যেতেই ২০১৭ সালের ১২ জুলাই তাকে আবার বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে আবার অব্যাহতি দেয়া হয়।

এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্তে তৎকালীন প্রো-উপাচার্যের নেতৃত্বে গঠন করা হয় কমিটি। চার সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও এক বছরেও দাখিল হয়নি সেটি।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাদের পেটানোর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বামপন্থী কয়েকজন শিক্ষক প্রতিবাদী কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে আসেন। গত ১৫ জুলাই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষকদের কর্মসূচিতে গিয়ে একজন শিক্ষকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

এর প্রতিবাদে গত ১৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা। সেখানেই যোগ দেন রুশাদ। আর এই কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ শব্দটি ‘গালি’, ‘শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধ করেননি, তার বাবাও মুক্তিযুদ্ধ করেছেন?’, ‘পেশিশক্তি ব্যবহার সরকার পতনের কারণ হবে’ জাতীয় বক্তব্য দেয়া হয়।

ডান থেকে প্রথমে রুশাদ ফরিদীআর শিক্ষকদের এই কর্মসূচিকে ঘিরে এতদিন প্রশংসা থাকলেও রুশাদের অংশগ্রহণ এবং জাতির জনকের মুক্তিযুদ্ধ করেননি জাতীয় বক্তব্য দেয়ার পর থেকে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে শিক্ষকদের।

এ বিষয়ে প্রতিবাদী শিক্ষকরাও কিছু বলছেন না। এ বিষয়ে জানতে শিক্ষকদের কর্মসূচিতে নিয়মিত উপস্থিত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক তানজীম উদ্দিন খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘আমি মিটিংয়ে আছি’ বলে ফোন কেটে দেন। আগের দিনও তার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেদিনও তিনি ফোন কেটে দেন।

সব ষড়যন্ত্র বলছেন রুশাদ

তবে রুশাদ আহমেদ অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ষড়যন্ত্র বলছেন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এনে বাধ্য করা হয়েছে ছুটি নিতে, আমি ইচ্ছা করে ছুটি নেইনি।’

শিক্ষকদের কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে রুশাদ আরও বলেন, ‘আমি এখনও বিশ্ববিদ্যালয়র শিক্ষক, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষে আমার কথা বলার অধিকার আছে।’

তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে এই শিক্ষক বলেন, ‘আমি সব সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনমূলক সমালোচনা করতাম, বিশেষ করে সেশন জট, ক্লাস-পরীক্ষা ঠিকমত না হওয়া ও বিভাগের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে কথা বলতাম। কিন্তু তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষর এগুলো পছন্দ হতো না। তাই তারা আমার বিরুদ্ধে এই বানোয়াট অভিযোগ করেছে।’

২০১৭ সালের ৭ জুলাই রুশাদ ফরিদি একটি জাতীয় দৈনিকে একটি মতামত কলাম লেখেন। তার দাবি, এই মতামত লেখার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে।

তৃতীয় দফা ব্যবস্থা যদি মতামত কলাম লেখার কারণে হয়, তাহলে অনৈতিক সম্পর্ক ও অশিক্ষকসুলভ আচরণের জন্য এর আগেও নেয়া দুই দফা ব্যবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে রুশাদ আগের কথাই পুনরুল্লেখ করেন যে, তিনি অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার বলে এসব চক্রান্ত করা হয়েছে।

এই শিক্ষক বলেন, ‘আমি ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই বিষয়টি (বহিষ্কারাদেশ) নিয়ে হাইকোর্টে রিট করি এবং হাইকোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেয় কিন্তু কর্তৃপক্ষ নোটিশের কোনো উত্তর দেননি।

ঢাকাটাইমস/২২জুলাই/এনএইচএস/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

প্রাক মুঘল আমলের ঢাকার ইতিহাস বের করার তাগিদ

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে মোবাইল ফটোগ্রাফি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত

পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে হাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন

যুক্তরাজ্য গেলেন ঢাবি উপাচার্য, রুটিন দায়িত্বে সীতেশ বাছার

এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার যে সুযোগ দিচ্ছে মালয়েশিয়া

বাহরাইনে এসএসসি পরীক্ষার ফল পেয়ে উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা

মাধ্যমিকে বেড়েছে পাসের হার, কমেছে জিপিএ ফাইভ

আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় হ্যাকাথনে চ্যাম্পিয়ন শাবিপ্রবি

ঈদের পর থেকে শনিবারও বন্ধ রাখা হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

মাদরাসা বোর্ডে জিপিএ-ফাইভ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :