কায়েস-সাইফউদ্দিনের রেকর্ড জুটিতে ২৭১

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:৫১ | প্রকাশিত : ২১ অক্টোবর ২০১৮, ১৮:৪৮

শুরুতেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নাকাল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। দলীয় ১৩৯ রানে ছয় উইকেট পড়ে যায় বাংলাদেশের। পরে সপ্তম উইকেট জুটিতে ১২৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে ভালো স্কোর এনে দেন ইমরুল কায়েস ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে ওয়ানডে সপ্তম উইকেট জুটিতে কায়েস-সাইফউদ্দিনের এই জুটিই এখন সেরা। তাদের এই রেকর্ড জুটিতেই জিম্বাবুয়েকে ২৭২ রানের টার্গেট দিয়েছে বাংলাদেশ।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিকরা। সুতরাং জয়ের জন্য ২৭২ রান দরকার জিম্বাবুয়ের।

ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ দল যখন একের পর এক উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে তখন ইমরুল কায়েস এক প্রান্ত আগলে রাখেন। দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলেন তিনি। ঠান্ডা মাথায় খেলে ইনিংসের ৪৯তম ওভার পর্যন্ত লড়েছেন এই ওপেনার। মোহাম্মদ মিথুন ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের সঙ্গকে কাজে লাগিয়ে ১১৮ বলে তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি। ১৪০ বলে ১৪৪ রান করে আউট হন তিনি। ওয়ানডেতে কায়েসের এটি ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস।

এদিন ব্যাটিংয়ে শুরুটাই ভয় জাগানিয়া ছিল বাংলাদেশের। দেশ সেরা ওপেনার তামিম ইকবালের দলে না থাকার কারণে ভরসা করা হয়েছিল লিটন কুমার দাসের উপর। সর্বশেষ এশিয়া কাপ এবং এনসিএলে তার ব্যাট ছন্দে থাকলেও আজ পুরোপুরি ব্যর্থ এই ওপেনার।

বাংলাদেশের ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে টেন্ডাই সাতারার বলে কাটা পড়েন লিটন। তাড়াহুড়ো করে মারতে গিয়ে কয়েকবার ব্যর্থ হয়ে চেয়েছিলেন সাতারার বলে ছক্কা হাঁকাতে। কিন্তু টাইমিং করতে না পারায় বল চলে যায় মিড অফে। সেখানেই ক্যাচ মুঠোয় নিয়ে লিটনকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে দেন সিফাস জুওয়াও। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৪ বলে ৪ রান।

এরপর ইমরুলের সঙ্গী হয়ে মাঠে নামেন অভিষিক্ত ফজলে মাহমুদ রাব্বী। একই ওভারে লিটনকে আউট করা সাতারার ফাঁদে পা দেন রাব্বীও। অভিষেকে রানের খাতা খুলতেই পারেননি ৩০ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ত্রয়োদশ ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেকে শূন্য রানে ফিরলেন তিনি।

চাপে পড়া বাংলাদেশকে উদ্ধার করতে চার নম্বরে নামেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু লেগ স্পিনার ব্রেন্ডন মাভুতার বলে বাজেভাবে সাজঘরে ফিরেন তিনিও। ২০ বলে এক চারে ১৫ রান করে ফিরে যান মুশফিক।

এরপর ওপেনার ইমরুল কায়েসকে সঙ্গ দিতে মাঠে নামেন মোহাম্মদ মিথুন। দুজনের ব্যাটে আশা জাগে বাংলাদেশের। দুজন মিলে গড়ে তুলেন ৭১ রানের পার্টনারশিপ। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা জুটি ভাঙেন কাইল জার্ভিস। নতুন স্পেলের দ্বিতীয় বলে কট বিহাইন্ড করে মিথুনকে ফেরান এই পেসার। আউট হওয়ার আগে ৪০ বলে তিন ছক্কা আর এক চারে ৩৭ রান করেন মিথুন। মিথুনের পর ব্যাট হাতে ব্যর্থ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (০) এবং মিরাজও (৪)।

এরপর চাপ সামলে সাইফউদ্দিনকে নিয়ে একাই লড়াই করে যান ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নামা ইমরুল কায়েস। অন্য প্রান্তে উইকেট যতো পড়েছে ততো যেন দায়িত্বশীল হয়ে উঠেছেন তিনি। বাজে বলে বাউন্ডারি এবং এক-দুই রান করে করে সচল রেখেছেন রানের চাকা।

গত জানুয়ারির পর মাঠে ফেরা সাইফ শুরুতে ভুগতে থাকেন। এরপর সেট হয়ে শট খেলতে শুরু করেন তিনিও। সপ্তম উইকেটে দুজন মিলে গড়েন ১২৭ রানের পার্টনারশিপ। কাইল জার্ভিসের বলে ইনিংসের ৪৮.৪ ওভারে থামে ইমরুলের ইনিংস। অল্পের জন্য দেড়শ মিস করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। আউট হওয়ার আগে ১৪০ বলে ১৪৪ রান করেন তিনি। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৩টি বাউন্ডারি এবং ৬টি ছক্কা দিয়ে। এটি তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। আগের সেরা ইনিংস ছিল ১১২ রান।

ইমরুলের পাশাপাশি ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন সাইফউদ্দিনও। প্রথম ৬৯ বলে নিজের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান এই অলরাউন্ডার। এর আগে তার সর্বোচ্চ রান ছিল ১৬। জিম্বাবুয়ের হয়ে ১০ ওভার বল করে ৩৭ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট সংগ্রহ করেন, কাইল জার্ভিস। ৫৫ রান দিয়ে তিনটি উইকেট নেন টেন্ডাই সাতারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ ইনিংস: ২৭১/৮ (৫০ ওভার)

(লিটন দাস ৪, ইমরুল কায়েস ১৪৪, ফজলে মাহমুদ রাব্বী ০, মুশফিকুর রহিম ১৫, মোহাম্মদ মিথুন ৩৭, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ০, মেহেদী হাসান মিরাজ ১, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৫০, মাশরাফি বিন মুর্তজা ২*, মোস্তাফিজুর রহমান ১*; কাইল জারভিস ৪/৩৭, টেন্ডাই সাতারা ৩/৫৫, ডোনাল্ড তিরিপানো ০/৬০, ব্রান্ডন মাভুতা ১/৪৮, সিকান্দার রাজা ০/৩৭, শন উইলিয়ামস ০/৩২)।

(ঢাকাটাইমস/২১ অক্টোবর/এইচএ/এসইউএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :