শার্শায় অর্ধশত শিক্ষার্থী অসুস্থ
শার্শার পাকশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানকালে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী একযোগে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতাল, শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চৌগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। কৃমিনাশক ট্যাবলেটের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে দাবি অভিভাবকদের।
তবে চিকিৎসকরা জানান, মাস হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়েছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীরা হলো, পাকশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সাবিয়া ইসলাম নিশি, আরিফা, জান্নাতুল, ৭ম শ্রেণির ছাত্রী মুন্নি, ১০ম শ্রেণির ছাত্রী স্মৃতি, ৭ম শ্রেণির ছাত্র রাসেল ও সাব্বির।
স্কুলের প্রতিবেশী সামসুন্নাহার বলেন, আজ বেলা ১১টার দিকে স্কুলের ছেলে-মেয়েদের প্রথম দিকে শরীরের মধ্যে কেমন যেন করতে থাকে। তারপর সবাই দুর্বল হয়ে পড়ে। আস্তে আস্তে ছেলেমেয়েরা বেঞ্চের ওপর শুয়ে পড়ে। এ সময় স্কুলের কয়েকজন শিক্ষককে জানালে তারা এটি গুরুত্ব না দিয়ে অফিসে চলে যান।
পরে স্থানীয় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আহসান কবিরকে মোবাইল ফোনে জানালে তিনি কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পাঠান। এরপর তড়িঘড়ি তাদের অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে দেয়া হয়।
অসুস্থ শিক্ষার্থীদের প্রথম পর্যায়ে শার্শার নাভারণ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়তে থাকলে কয়েকজনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে এবং চৌগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।
ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিফার মা নাজমুন নাহারসহ কয়েকজন অভিভাবক জানান, গত রবিবার স্কুল থেকে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়। তারই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
শার্শার ডিহি ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ রুহুল আমিন জানান, প্রথম পর্যায়ে স্কুলের কোনো শিক্ষক এগিয়ে আসেননি। অবস্থা গুরুতর হলে শিক্ষকরা স্কুলের সব রুমে রুমে তালা লাগিয়ে চলে যান।
খবর পেয়ে শার্শা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কুমার মন্ডল নাভারণ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান এবং অসুস্থ শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, চিকিৎসকরা তাকে বলেছেন মাস হিস্ট্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুর রশিদ জানান, সেখানে ১২ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাকশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, ওই কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেয়ে নয়, অন্য কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। এরপর তিনি সেখান থেকে চলে যান।
যশোর সিভিল সার্জন দিলীপ কুমার রায় জানান, কৃষিনাশক ট্যাবলেটের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে যেটা বলা হচ্ছে তা ঠিক না। মাস হিস্ট্রিয়ার কারণে ওরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হলে সারা দেশের শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হবে। একযোগে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১০এপ্রিল/মোআ)