ক্যানসারে জয়ী হলেও সড়কে রক্ষা পাননি এএসআই আক্তার

মাসুদ আলম, কুমিল্লা
  প্রকাশিত : ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:৪০| আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:৪৯
অ- অ+

হাইওয়ে পুলিশের এএসআই আক্তার হোসেন। দুই ছেলের জনক এই পুলিশ কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। কিছুটা সুস্থ হয়ে সম্প্রতি কর্মস্থলে যোগ দেন। সোমবার ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাবুর্চি বাজার সৈয়দপুর এলাকায় দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি উদ্ধার করতে গিয়ে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নিহত হন তিনি। এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও দুজন।

আক্তার হোসেনের বাড়ি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার শিলমুড়ি ইউনিয়নের ছোট বাতুয়া গ্রামে। তার বাবার নাম দুলা মিয়া। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এএসআই আক্তার হোসেনের চাচাতো ভাই জহিরুল ইসলাম। তিনিও পুলিশে চাকরি করেন। তিনি ঢাকাটাইমসকে জানান, আক্তার হোসেন পরোপকারী মানুষ ছিলেন। ৩০ বছর বয়সে তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হন। অনেক টাকা খরচ করে চিকিৎসার পর সম্প্রতি কিছুটা সুস্থ হন।

আক্তার তার বাবার দ্বিতীয় ছেলে। তার বড়ভাই নৌবাহিনীতে চাকরি করেন।আক্তার দুই ছেলের জনক। বড় ছেলে মাহি হোসেনের বয়স ৮, ছোট ছেলে আহনাফ হোসেনের বয়স ৪। গত কোরবানির ঈদের আগে ১০ দিনের ছুটি নিয়ে বাবা এবং মাকে হজে পাঠান। এখনো তারা হজেই আছেন।

চাচাতো ভাই জহিরুল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ক্যানসারযুদ্ধে জয়ী হলেও সড়ক আমার ভাইকে বাঁচতে দেয়নি। তার ইচ্ছে ছিল ছোট দুই ছেলেকে মানুষ করবেন। পুলিশের চাকরি তার পছন্দের ছিল। এই চাকরির মধ্যে তিনি অনেক বড় কিছু স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু তার কোনো স্বপ্নই পূরণ হলো না।’

সোমবার ভোরের ওই দুর্ঘটনায় আক্তার হোসেনসহ তিনজন নিহত হন।

হাইওয়ে পুলিশের মিয়াবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ জানান, চট্টগ্রামগামী একটি কাভার্ডভ্যান সৈয়দপুর এলাকায় পৌঁছলে আরেকটি কাভার্ডভ্যান পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ওই কাভার্ডভ্যানটি সড়কের পাশে পড়ে যায়। কাভার্ডভ্যানটিকে উদ্ধার করতে হাইওয়ে পুলিশের একটি রেকার ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে। ঘটনাস্থলে ছিলেন আক্তার হোসেন। এসময় একটি দ্রুতগামী কাভার্ডভ্যান উদ্ধার কাজ করা রেকারটিকে ধাক্কা দেয়। রেকারটিও রাস্তার পাশে থাকা হাইওয়ে পুলিশের পিকআপভ্যানকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপভ্যানের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কর্তব্যরত এএসআই আক্তার হোসেন গুরুতর আহত হন। তাকে চৌদ্দগ্রাম হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত অপর দুজন কাভার্ডভ্যানের দুই হেলপার।

এই ঘটনায় মিয়াবাজার ফাঁড়ির পুলিশ বাদী হয়ে দুর্ঘটনায় সংশ্লিষ্ট গাড়ি ও চালকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ পলাতক চালকদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে বলে জানান ওসি।

ঢাকাটাইমস/২সেপ্টেম্বর/জেবি

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ফেসবুকে লাভজনক বিনিয়োগের প্রলোভন, শতাধিক মানুষকে ঠকিয়েছে নাইজেরিয়ান চক্রটি
সোনার দাম ভরিতে কমল ১৫৭৫ টাকা
কুমিল্লা সীমান্তে অর্ধ কোটি টাকার ভারতীয় শাড়ি জব্দ
মিরপুরে বাসায় ঢুকে চাঁদাবাজি, গ্রেপ্তার ৪
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা